অপ্রাসঙ্গিক ও সম্পর্কহীন কিছু ছবি শেয়ার করে পাকিস্তানি গায়কের দাবি সেগুলি কাশ্মীরে গণহত্যার দৃশ্য
বুম দেখেছে ছবিগুলির সঙ্গে কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতির কোনও সম্পর্ক নেই। কিছু ক্ষেত্রে ছবিগুলি বেশ পুরনো।
পাকিস্তানি গায়ক রবি পিরজাদা টুইটারে একগুচ্ছ ছবি শেয়ার করেছেন, যাতে পশুবলি, জঙ্গি হামলা এবং দাঙ্গার দৃশ্য রয়েছে। ছবির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, এগুলি নাকি কাশ্মীরিদের উপর ভারতীয় সেনাবাহিনীর গণহত্যা চালানোর ছবি।
হুঁশিয়ারি: এই প্রতিবেদনের কিছু ছবি অস্বস্তিকর
৩১ অগস্ট পাকিস্তানের এক গায়ক রবি পিরজাদা টুইটারে চারটি ছবি শেয়ার করে দাবি করেন, এগুলি কাশ্মীরে গণহত্যার ছবি।
অস্বস্তিকর ছবিগুলিতে হত্যার দৃশ্য আছে, যার ফলে রাস্তায় রক্ত মাখামাখি হয়ে রয়েছে। কিন্তু সত্যিই কি এই ছবিগুলি কাশ্মীরে গণহত্যার ছবি, যেমনটা নাকি পিরজাদা দাবি করেছেন?
একটু খুঁটিয়ে পরীক্ষা করলেই বোঝা যায়, ছবিগুলি কাশ্মীরের সঙ্গে সম্পর্কিত তো নয়ই, উপরন্তু এগুলি বেশ পুরনো ছবি।
ছবি ১ ও ৪
প্রথম ও চতুর্থ ছবির দৃশ্য মোটামুটি একই রকম, যতে মৃত পশুদের কাছে অল্প কিছু লোককে জড়ো হতে দেখা যাচ্ছে। অনুমান করা যায়, ধর্মীয় আচার হিসাবেই পশুবলির ঘটনা এটি।
এই ছবিটি খোঁজখবর চালিয়ে আমরা ফেসবুকে সন্ধান পাই ২০১৯ সালের ১৪ অগস্ট, বকরিদ পরবের দুদিন পরে, যে-পরবে প্রতিটি মুসলিম পরিবারে পশু কুরবানি দেওয়া একটি অবশ্যপালনীয় ধর্মীয় রীতি।
ছবি ২
২ নম্বর ছবিটার উপর শাটারস্টক শব্দটির জলছাপ থেকেই স্পষ্ট এটি শাটারস্টক নামক ফোটো মজুত রাখার সংস্থা থেকে নেওয়া হয়েছে।
ছবিটির খোঁজ লাগিয়ে দেখা গেল, এটি শাটারস্টকের জন্য ২০০৭ সালে তুলেছিলেন আশিস শর্মা নামে এক আলোকচিত্রী।
ছবি ৩
৩ নম্বর ছবিটির খোঁজ করতে গিয়ে আমরা ৩ বছর আগে পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের সন্ধান পেলাম, যেখানে অবিকল এই একই ফোটো ছাপা হয়েছিল।
প্রতিবেদনটিতে লেখা হয়েছে, ২০১৬ সালের ২৩ মে শ্রীনগরে এক জঙ্গি হামলা ঘটে, যাতে ৩ জন ভারতীয় পুলিশ অফিসারের মৃত্যু হয়।
জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল করে তাকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার পর এবং রাজ্যে ১৪৪ ধারা ও অন্যান্য নিবারকমূলক পুলিশি বন্দোবস্ত কায়েম হওয়ার পর থেকেই উপত্যকায় ইতস্তত বিক্ষিপ্ত প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ ঘটে চলেছে।
তবে এখনও সেখান থেকে গণহত্যা চালানোর কোনও খবর কোনও সূত্রেই পাওয়া যায়নি। তাই পিরজাদার শেয়ার করা ছবির আনুসাঙ্গিক বিবরণী ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর।