ফটোশপকরা ছবি, ভুয়ো উদ্ধৃতি চালানো হল রবীশ কুমারের নামে
যে ছবিটি ফটোশপ করা হয়েছে, তা ২০১৮ সালের একটি অন্য প্রসঙ্গের এপিসোডের স্ক্রিন গ্র্যাব।
রমন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার বিজয়ী এনডিটিভি-র সাংবাদিক রবীশ কুমার সম্বন্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো তথ্য ছড়ানো এখনও বন্ধ হল না।
ফেসবুকে একটি ছবি ছড়িয়েছে। সেটি একটি স্ক্রিন গ্র্যাব, অর্থাৎ ভিডিয়ো থেকে তুলে নেওয়া একটি মুহূর্তের ছবি। সেই ছবির সঙ্গে আছে প্রবল রকম সাম্প্রদায়িক একটিউদ্ধৃতি। দাবি করা হয়েছে, ভারতীয় বায়ুসেনার কর্মীরা একটি নতুন অ্যাপাচে হেলিকপ্টার আসা উপলক্ষ্যে পুজো করতে চাইলে রবীশ কুমার তাতে আপত্তি করেন। ছবিটি ভুয়ো।
ছবিটি ফটোশপে তৈরি করা, তাতে হেলিকপ্টারের ছবিটি যোগ করা হয়েছে। এবং, রবীশ কুমারের উদ্ধৃতি হিসেবে যে কথাগুলি লেখা হয়েছে, সেগুলি সম্পূর্ণ কল্পিত, মিথ্যে।
পোস্টটিতে ছবিটির সঙ্গে যে কথাগুলি লেখা হয়েছে, তা অনুবাদ করলে এই রকম দাঁড়ায়:
“ভারত একটা হেলিকপ্টার কিনে তার জন্য পুজো করল। নমাজ পড়ল না কেন? বড়দিন উদযাপন করল না কেন? জড়বস্তুর কি ধর্ম থাকে? আমি এই দেশকে নিয়ে চিন্তিত। সেই চিন্তা আমায় ভিতর থেকে কুরে কুরে খাচ্ছে। কিন্তু, তোমরা অন্ধ ভক্তরা দেখতে পাও না। নিয়তির পরিহাস।”
“भारत ने हेलीकाप्टर खरीदा और उसकी पूजा करवा दी। उसकी नमाज क्यों नहीं पढ़ाई गई? उसका क्रिसमस क्यों नहीं मनाया गया ? क्या इस वस्तु का भी धर्म है? यही सब सोच कर अन्दर ही अन्दर मुझे देश की चिंता खाए जा रही है। खैर आप लोग अंधभक्ति में रहिए ये सब आपको नहीं दिखेगा..! बहुत बड़ी विडम्बना है। रवीश भाई के लिए दो शब्द"
“भारत ने हेलीकाप्टर खरीदा और उसकी पूजा करवा दी। उसकी नमाज क्यों नहीं पढ़ाई गई? उसका क्रिसमस क्यों नहीं मनाया गया ? क्या इस वस्तु का भी धर्म है? यही सब सोच कर अन्दर ही अन्दर मुझे देश की चिंता खाए जा रही है। खैर आप लोग अंधभक्ति मेे रहिए ये सब आपको नहीं दिखेगा..! भौत बड़ी विडम्बना है।"
পোস্টগুলি আর্কাইভ করা আছে এখানে ও এখানে।
ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের নামে তৈরি একটি নকল প্রোফাইল থেকেও এই ছবিটি একই বিবৃতিসহ শেয়ার করা হয়েছে।
তথ্য যাচাই
বুম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে এই পোস্টটিতে ব্যবহৃত ছবিটির উৎস খুঁজে পেয়েছে। ছবিটি ২০১৮ সালের মে মাসে এনডিটিভি খবর-এর একটি প্রতিবেদনে থাম্বনেল হিসেবে, অর্থাৎ ছোট করে ব্যবহার করা হয়েছিল।
তিনি ও তাঁর পরিবারের অন্যান্যরা যে ভাবে নিয়মিত খুনের হুমকি পাচ্ছেন, এই ভিডিয়ো প্রতিবেদনটিতে রবীশ কুমার সে কথা জানিয়েছিলেন। প্রতিবেদনটি রেকর্ড করার পর ২৫ মে, ২০১৮ তারিখে এনডিটিভি-র অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছিল।
বুমের তরফে রবীশ কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাঁর প্রতিক্রিয়া পেলে এই প্রতিবেদনে তা যোগ করা হবে।
হেলিকপ্টারের সামনে এক পুরোহিত পুজো করছেন, এই ছবিটি ডিডি নিউজের একটি সংবাদ প্রতিবেদনের ভিডিয়ো থেকে নেওয়া। ভারতীয় বায়ুসেনায় আটটি নতুন হেলিকপ্টার অন্তর্ভুক্ত করার দিনের ছবি এটি।
ইউটিউবে এই ভিডিয়োটি ২০১৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর আপলোড করা হয়, অর্থাৎ রবীশ কুমারের ভিডিয়ো প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার এক বছরেরও বেশি সময় পরে।
ভিডিয়োটিতে ঠিক আঠাশ সেকেন্ডের মাথায় সেই দৃশ্যটি দেখা যায়, যার স্ক্রিন গ্র্যাব ভাইরাল হওয়া পোস্টটিতে ব্যবহার করা হয়েছে।
ভিডিয়োটির বিবরণে লেখা হয়েছে, “বিশ্বের দুর্ধর্ষতম অ্যাটাক হেলিকপ্টার অ্যাপাচে এল ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে; পাঠানকোট বায়ুঘাঁটিতে বায়ুসেনা প্রধান বি এস ধানোয়ার উপস্থিতিতে প্রথম দফায় আটটি হেলিকপ্টার বায়ুসেনার বিমানবহরের অন্তর্ভুক্ত হল।”
বায়ুসেনার বহরে অ্যাপাচে হেলিকপ্টারের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে এনডিটিভি একটি সংবাদ প্রতিবেদন করে। রবীশ কুমার সেই অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন না। ছিলেন অন্য দুই সাংবাদিক।