অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের আগে অনুষ্ঠিত ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে চন্দ্রযান-২ এর ঘটনা বলে শেয়ার করা হল
বুম অনুসন্ধান করে দেখেছে যে ওই ছবি আসলে ২০১৩ সালে অগ্নি-৫ নামক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের আগে অনুষ্ঠিত ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ছবি।
একজন পুরোহিত অগ্নি-৫ মিসাইলের সামনে পূজা করছেন, এই পুরোনো ছবিটি নতুন করে ছড়িয়ে দেওয়া হল। সঙ্গে মিথ্যে দাবি করা হল যে ছবিটি চন্দ্রযান-২ এর যাত্রা শুরুর আগের, যখন হিন্দু রীতি অনুসারে পূজা করা হল যাতে এই যাত্রা সফল হয়।
২০১৯ সালের ২২ জুলাই ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ISRO)-এর উদ্যোগে চন্দ্রযান-২ নামের মহাকাশযান পাঠানো হয়। এই অভিযানের মূল লক্ষ্য হল চাঁদের দক্ষিণ গোলার্ধ্বে অবতরণ করা। এই অভিযানের শুরুতে এই ছবিগুলি তোলা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
ফেসবুক পোস্টটিতে লেখা হয়েছে, “যারা পূজাপাঠ ও বৈদিক কর্মে বিশ্বাস করে না, তাদের জন্য এটা একটা শিক্ষা। চন্দ্রযান-২-এর একদল বিজ্ঞানী যাত্রা শুরুর আগে পূজা করলেন। এছাড়া ইসরো-র যে কোনও উৎক্ষেপণের আগে ওই মহাকাশযানের ছোটো একটা মডেল ভেঙ্কটেশ্বর মন্দিরে ভেঙ্কটেশ্বরের কাছে নিবেদন করা হয়, যাতে যাত্রা সফল হয়। শুধু ভারতে নয়, সারা বিশ্বে এইধরনের ধর্মীয়আচার পালন করা হয়। একমাত্র বোকারাই বলবে যে বিজ্ঞানীরা ধর্মীয় আচারে বিশ্বাস করে না, তাই না? ইসরো-কে অনেক অভিনন্দন।”
(মূল হিন্দিতে ক্যাপশন: “पूजा पाठ, वैदिक कर्म, कर्मकाण्ड को ढोंग ढकोसला कहनेवाले के मुँह पर जोरदार तमाचा लगाते हुए हमारे चन्द्रयान -2 के वैज्ञानिकों के समूह ने प्रक्षेपण से पूर्व पूजा-पाठ किया । साथ ही ISRO द्वारा किसी भी की प्रक्षेपण से पूर्व उसका प्रतिरूप वेंकटेश्वर मंदिर में भगवान बेंकटेश्वर को अर्पित किया जाता है ताकि प्रक्षेपण सफल रहे। सिर्फ भारत ही नही दुनिया भर के वैज्ञानिक अभियान की सफलता के धार्मिक अनुष्ठान करते है। अब कोई मूर्ख ही कहेगा कि वैज्ञानिक पूजा पाठ को नहीं मानते हैं क्यों? ईसरो का अभिनंदन”)
আমরা একই ক্যাপশন দিয়ে সার্চ করে দেখেছি যে এই পোস্টটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
বুমের প্রতিবেদন
তথ্য যাচাই
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা গেছে যে ভাইরাল হওয়া এই ছবি আসলে তোলা হয়েছে অগ্নি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা মূলক উৎক্ষেপণের আগে। চন্দ্রযান-২’এর ছবি এটা নয়। ছবি জোগানদাতা সংস্থা গেটি ইমেজেস-এ বুম ওই একই ছবি দেখতে পায়। ছবির তারিখ ছিল ২০১৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর। অগ্নি-৫’এর দ্বিতীয় পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের তারিখও একই ছিল। এই বিষয়ে এখানে পড়তে পারেন।
পল্লব বাগলার তোলা ছবিটির ক্যাপশনে লেখা আছে, “ভারত আজ অগ্নি-৫’এর দ্বিতীয় পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণে সফল হল। অগ্নি’৫-এ কটি দূরপাল্লার পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র। এটি ৫,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়ানে সক্ষম। ভারত এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, রাশিয়া, ফ্রান্স, চিনের মত পরমাণু শক্তিধর দেশগুলির সঙ্গে এক তালিকাভুক্ত হল। এই দেশগুলির মত ভারত এখন ইউরোপ, আমেরিকা এবং এশিয়ায় পরমাণু আঘাত হানতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ১,০০০ কেজি পরমাণু বিস্ফোরক বহন করতে পারে। এতে রয়েছে তিনটি রকেট মোটর। ভারতের হুইলার আইল্যান্ড থেকে এটি উৎক্ষেপণ করা হয়।”
অগ্নি-৫ একটি আন্তর্মহাদেশীয় মিসাইল, যেটি তৈরি করেছে ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অরগাইনেজেসন (ডিআরডিও)।
বুম ভাইরাল হওয়া ছবিটি জুম করে দেখতে পায় যে ‘অগ্নি-৫’ কথাটি আসল ছবির তুলনায় ঝাপসা করে দেওয়া হয়েছে।
চন্দ্রযান-২’এর যাত্রা শুরুর আগে কোনওধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল কিনা জানতে বুম ইসরোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ইসরোর তরফে কোনও উত্তর এলে তা সঙ্গে সঙ্গে এই প্রতিবেদনে জানানো হবে।
সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে, ২০১৯-এর ১৪ জুলাই চন্দ্রযান-২’এর অভিযান সফল করার জন্য প্রার্থনা করতে ইসরো প্রধান কে শিবন তিরুমালা পাহাড়ে বালাজি মন্দির ও সুল্লুরপেটের শ্রী চেঙ্গামালা মন্দিরে গিয়েছিলেন। এ বিষয়ে এখানে পড়তে পারেন।