জমি জবরদখলের জন্য বিএসএফ জওয়ানের কান্নায় ভেঙে পড়ার ভিডিও মিথ্যে করে কাশ্মীরের সঙ্গে জোড়া হচ্ছে
বুম খুঁজে পেয়েছে ওই জওয়ান কান্নায় ভেঙে পড়েন তার জমি জবরদখলের জন্য এবং তা কাশ্মীরের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
একজন বিএসএফ জওয়ানের কথিত জমি বেদখলের সমস্যায় কান্নায় ভেঙে পড়ার পুরনো ভিডিও কাটছাঁট করে ফেসবুকে মিথ্যে দাবি সহ শেয়ার করা হচ্ছে, যে তাকে বাধ্য করা হচ্ছে কাশ্মীরে মুসলিমদের মেরে ফেলতে।
২ মিনিট ১৮ সেকেন্ডের ক্লিপটিতে দেখা যায় হতাশ ও আবেগী জওয়ানকে একটি বুম ধরে প্রাধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আকুতি জানাতে।
বাংলাতে লেখা ফেসবুকের ক্যাপশনটিতে সাম্প্রদায়িক বাঁক দেওয়া হয়েছে।
ক্যাপশনটি হল, “ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখে শুনুন, তিনি বলছেনঃ আমাদের প্রধানমন্ত্রী আমাদের একটুও বুঝতে চায় না। তিনি আমাদের কোন কথা শুনে না। আমাদের জোড় করে কাশ্মীরের মুসলমানদের মারতে চাপিয়ে দেয়। আসলে আমাদের কথা যদি সে একটু শোনতো! বিস্তারিত ভিডিও…!”
পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটিকে কি ফ্রেমে ভেঙে রিভার্স সার্চ করেছিল। আমরা খুঁজে পাই, ভিডিওটি ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আপলোড করা হয়েছিল। ভিডিওটিতে স্পষ্ট ভাবেই ওই সেনা জগবীর সিংকে চেনা যায়।
সিং বর্ণনা করেন কিভাবে এক জমি মাফিয়া তার বাড়ি নির্মানের জন্য এক চিলতে জমিকে জবরদখল করে নেয় যখন তিনি ভারত-পাক সীমেন্তে কর্মরত ছিলেন।
তাকে এই ভিডিওতে বলতে শোনা যায়।
‘‘১০ লক্ষ টাকা ধার নেওয়ার পর ওই জমিটি কিনেছিলাম। সাড়ে সাত লাখ টাকায় ওই জমিটি কিনি। এবং বাকী টাকায় আমি একটি বাড়ি তৈরি করছিলাম। আমি গুজরাটে ভারত-পাক সীমান্তে বহাল হয়েছিলাম, তখন আমি ওখানে ছিলাম। সম্প্রতি, আমি ফিরে আসি। আমি উপলব্ধি করি স্থানীয় জমি মাফিয়া আমার জায়াগা দখল করে নিয়েছে। আমাকে কেবলমাত্র সরকার সাহায্য করতে পারে। আমার প্রধানমন্ত্রীর উপর আস্থা আছে নাহলে আমি আমার ঘরের জন্য শহীদ হব। কার্গিল যুদ্ধের পর আমাকে মেডেল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেউ আমার কথা শুনছে না।"
আমরা ‘‘বিএসএফ জগবীর সিং’’ লিখে কিওয়ার্ড সার্চ করি। আমরা দৈনিক ভাস্কর-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাই। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী ওই সৈনিক উত্তরপ্রদেশের মিরাটের।
আমরা ‘‘বিএসএফ জওয়ান জগবীর সিং মিরাট’’ লিখে সার্চ করে ওই একই ঘটনার টাইমস অফ ইন্ডিয়ার আরেকটি প্রতিবেদন খুঁজে পাই।