হরিয়ানার দুর্বৃত্তদের দলের অপকর্মের ভিডিও সাম্প্রদায়িক রঙ চড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার
ভাইরাল হওয়া পোস্টের দাবিঃ হরিয়ানার এক মুসলিমকে বিজেপি সমর্থকরা বেধড়ক পিটিয়ে তাকে পাকিস্তানে চলে যেতে বলছে l স্থানীয় পুলিশ বুমকে জানাচ্ছে, ভিডিওয় যাদের দেখা যাচ্ছে, তারা একদল তোলাবাজ, যারা তোলা না দিতে পারায় একজনকে মারছে l
এক ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে পেটানোর একটি ভিডিও এই ক্যাপশন দিয়ে শেয়ার করা হচ্ছে যে, দুর্বৃত্তরা সকলেই ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য, যারা মুসলিমদের পিটিয়ে পাকিস্তানে চলে যেতে বলছে ।
তবে দিল্লি পুলিশ বুমকে জানিয়েছে, এই দুর্বৃত্তরা সকলেই একটি তোলাবাজ গোষ্ঠীর সদস্য, যারা তোলা দিতে অপারগ লোকেদের এভাবে নির্যাতন করে থাকে । ভিডিওর সঙ্গে দেওয়া ক্যাপশনে লেখা আছে, #হরিয়ানা, #’গুরগাঁওয়ের বিজেপি কর্মীরা মুসলমানদের পিটিয়ে পাকিস্তানে চলে যেতে বলছে’ ।
বুম জানতে পেরেছে, ভিডিওতে যাদের দেখা যাচ্ছে, তারা সকলেই একটি ‘হাড়-ভাঙানি’ দলের লোক, যারা রাজধানী দিল্লি ও তার আশেপাশে অপকর্ম চালায় ।
পোস্টের আর্কাইভ বয়ানটি এখানে দেখুন আর ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন, তবে দেখার সময় সাবধানতা অবলম্বন করা ভাল ।
৩৬ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একদল লোক নির্মমভাবে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে একজনকে পেটাচ্ছে, যে বারবার তাদের কাতর মিনতি জানাচ্ছে তাকে ছেড়ে দিতে । অনেক ফেসবুক পেজ থেকেই ভিডিওটি শেয়ার করা হচ্ছে, যার প্রতিটিতে একই রকম ক্যাপশন ।
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওর ফ্রেমগুলি ঘাঁটতে গিয়ে এবং তল্লাশি চালিয়ে দেখতে পায়, হিন্দি সংবাদপত্র দৈনিক ভাস্কর -এর ১৪ মার্চের সংস্করণে এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ-রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে । রিপোর্টটিতে ওই একই ভিডিও শেয়ার করে জানানো হয়েছে, ১৩ মার্চ পুলিশ ওই অপকর্মে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ।
বেশ কয়েকটি সংবাদ রিপোর্টে ঘটনাটি হরিয়ানার ফরিদাবাদের বলে জানানো হয়েছে । দুর্বৃত্তদের এই দলটি রাজধানী দিল্লি ও তার আশেপাশে সক্রিয় এবং মূলত তোলাবাজিতে লিপ্ত । ওরা নিজেদের বর্বর ক্রিয়াকলাপ রেকর্ড করে এবং জনমনে ত্রাস সৃষ্টি করতে সেগুলিই অনলাইনে আপলোড করে দেয় বলে রিপোর্টগুলিতে জানানো হয়েছে ।
বুম হরিয়ানা পুলিশের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে ৫৫ নম্বর সেক্টর থানার সাব-ইনস্পেক্টর শামসের জানান— “এই লোকগুলি হাড়ভাঙানি দুর্বৃত্ত দলের । আমরা অনেক দিন ধরেই এদের খুঁজছি । এই শয়তানরা নিরীহ লোকদের পিটিয়ে হাড় ভেঙে দেয় এবং সেগুলির ভিডিও তুলে আপলোড করে ।”
গোটা ঘটনাটির সঙ্গে রাজনীতির বা সাম্প্রদায়িকতার কোনও সম্পর্ক নেই জানিয়ে তাঁর বক্তব্যঃ এরা কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য নয় । ভিডিওয় দেখানো প্রহৃত ব্যক্তিটিও কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ের বলে যা দাবি করা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভুয়ো ।
এ সংক্রান্ত রিপোর্ট আরও কিছু মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে, যা দেখতে এখানে এবং এখানে ক্লিক করুন ।
সংবাদসংস্থা এএনআই-ও ঘটনাটি নিয়ে টুইট করেছে—
শামসের জানান, যে তিনজনকে মার্চ মাসে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তারা এখন জেলে ।