দীঘার সমুদ্র সৈকতে পুরনো জলোচ্ছ্বাসের ভিডিও বুলবুলের প্রভাব বলে ছড়ানো হচ্ছে
বুম যাচাই করে দেখেছে ভিডিওটি ২০১৯ সালের মে মাস থেকেই অনলাইনে রয়েছে।
সোশাল মিডিয়ায় পুরনো জলোচ্ছ্বাসের ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে সেটি দীঘাতে বুলবুল আছড়ে পরার সময় তোলা। ১ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে সৈকতের বাঁধানো অংশ পেরিয়ে ধেয়ে আসছে সামুদ্রিক ঢেউ। পর্যটকদের দেখা যাচ্ছে ঘোরাফেরা করতে।
ভাইরাল হওয়া ফেসবুক পোস্টটিতে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ‘‘বুলবুলের প্রভাবে দীঘায় উত্তাল সমুদ্র’’
এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত ৩,৫০০ জন শেয়ার করেছেন ভিডিওটি। ভিডিওটি লাইক করেছেন ৮৫৯ জন।
ভিডিওটি দেখা যাবে এখানে। ফেসবুক পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে শনিবার ৯ নভেম্বর রাত ১২ টা ৩১ মিনিটে।
বুম যাচাই করে দেখেছে এটি সম্প্রতি হওয়া বুলবুল ঘর্ণিঝড়ের সময় তোলা ভিডিও নয়। ২০১৯ সালের মে মাস থেকেই অনলাইনে রয়েছে ভিডিওটি।
বুম রিভার্স সার্চ করে ভিডিওটির সন্ধান পায় নিউজওফ্যাক্ট নামে একটি পোর্টালের প্রকাশিত প্রতিবেদনে। এবছরের ২ মে প্রকাশিত ফণী ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত প্রতিবেদনে ভিডিওটি ব্যবহার করা হয়েছে।
নিউজওফ্যাক্টের প্রতিবেদনটি দেখা যাবে এখানে। প্রতিবেদনটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
ভিডিওটি ইউটিউবেও দেখা যাবে যা এবছরের ২ মে নিউজওফ্যাক্ট আপলোড করে। সেখানে ভিডিওটিকে ‘‘আজকে দীঘা/বঙ্গোপসাগরে ফণীর অবস্থা’’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
তবে ওই ভিডিওটি ঘূর্ণিঝড় ফণীর সময়ে দীঘাতে তোলা হয়েছিল কীনা বুমের পক্ষে স্বাধীনভাবে যাচাইকরা সম্ভব হয়নি।
শনিবার রাতে দক্ষিণ বঙ্গের উপকূলবর্তী জেলায় আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। দু’দিন ধরে একনাগাড়ে চলছিল বৃষ্টির দাপাদাপি। পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বসিরহাট, দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলাতে তান্ডব চালিয়েছে বুলবুল। তার জেরে বিভিন্ন এলাকায় গাছ উপড়ে গেছে। ভেঙে পড়েছে একাধিক মাটির বাড়ি। রবিবার সকাল পর্যন্ত স্থগিত ছিল কলকাতা বিমানবন্দেরের উড়ান পরিসেবা।
রাজ্যের প্রধান সব্জি সরবরাহকারী হুগলী জেলায় ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সব্জি চাষে। দুই মেদিনীপুর জেলায় ফুল ও ধান চাষেও ব্যপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। নিরাপত্তার কারণে দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তর ও প্রশাসনের তরফে জনগণকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয় নিরাপদ স্কুলবাড়ি ও সাইক্লোন সেন্টারে।
এবছরের মে মাসে ফণীর তান্ডেবের প্রভাব এরাজ্যে না পড়লেও, ওড়িশা রাজ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল এই ঘুর্ণিঝড়ের।