ভাইরাল হওয়া হত্যাকান্ডের ছবি তিনটি বাংলাদেশের রিফাত হত্যার উপর আধারিত নাটকের অংশ
২০১৯ সালের জুন মাসে বাংলাদেশের বরগুনা সরকারী কলেজের সামনে রিফাত শরিফকে তার স্ত্রীর সামনে কুপিয়ে হত্য করা হয়। শিহরনকারী ওই ঘটনার সিসিটিভি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল সেসময়।
বাংলাদেশের বরগুনা সরকারী কলেজের সামনে রিফাত শরিফের প্রকাশ্য দিবালোকে খুন হবার দুই সপ্তাহের মধ্যেই ফেসবুকে অন্য তিনটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়া ওই ফেসবুক পোস্টে তিনটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হয়েছে সেটি বাংলাদেশের খুলনার ফয়সাল হত্যার ছবি।
ছবি তিনটিতে কয়েকজন আতত্মায়ীকে দেখা যাচ্ছে। হাতে কাটারি রয়েছে তাদের দুজনের হাতে। সবুজ জামা পরিহিত এক মহিলা তাদের বাধা দেবার চেষ্টা করছেন। একজন যুবকের রক্তাক্ত টিশার্ট।
পোস্টটিতে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ‘‘এটা কি বাংলাদেশ, রিফাত হত্যা শেষ না হতেই, আবারও দিবালোকে ফয়সাল কে হত্যা। খুলনাতে’’
এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পোস্টটি লাইক করেছেন ২৭৪ জন ও শেয়ার করেছেন ৭৭৬ জন। পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম পোস্টটির নীচে রিপ্লাইয়ে একজন ফেসবুক ব্যবহাকারীর শেয়ার করা একটি ইউটিউব লিঙ্ক খুঁজে পায়।
বুম ওই ইউটিউব লিঙ্কটি খুঁজে দেখে, ৩০ জুন ২০১৯, ৯ মিনিট ৫৬ সেকেন্ডর একটি শর্ট ফিল্ম আপলোড করা হয়। শিরোনাম দেওয়া হয়েছিল, ‘‘বরগুনার রিফাত হত্যা নিয়ে নির্মিত = শর্টiফিল্ম = নির্মম হত্যা।’’ ভিডিওটির ৭:৫৯ সময় দেখে ওই শিহরণকারী নাটকের দৃশ্যটির দেখা যাবে এখানে। ওই ফেসবুক পোস্টটির ছবিতিনটি ওই নাটকের দৃশ্য।
শর্ট ফিল্মটির শেষে, একটি বার্তা লেখা হয়েছে,
‘‘এভাবেই কিছু উৎশৃঙ্খল যুবকদের জন্য নিঃশেষ হয়ে যায় রিফাতের মত নির্দোষ কিছু প্রাণ। যুবক ভাইদের উদ্দেশ্যে বলি, আসুন আমরা নিজোদেরকে চেঞ্জ করি। যাতে পরবর্তীতে আর কোনও নির্দোষ নিরীহ রিফাতের লাশ না দেখতে হয় আমাদেরকে।’’
রিফাত হত্যার ঘটনা
ডেইলি স্টার-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এবছরের ২৬ জুন ২২ বছর বয়সী রিফাত শরিফকে প্রকাশ্য দিবালোকে বরগুনা সরকারী কলেজের সামনে তার একসময়ের বন্ধু সাবির হোসেন নয়ন খুন করে। আরও তিনজন আতত্মায়ী নয়নের সঙ্গে যোগ দেয়। খুনের সময় রিফাতের স্ত্রী আয়েশা মুন্নী সঙ্গে ছিলেন। ঢাকা ট্রিবিউনে প্রকাশিত নিহত রিফাতের বাবার বয়ান অনুয়ায়ী, রিফাত ও মুন্নীর মাসদুই আগে বিবাহ হয়েছিল। নয়ন মুন্নী ও রিফাতকে উত্যক্ত করত এবং মুন্নীকে তার প্রাক্তন স্ত্রী বলে দাবি করত।
ওই শিহরনকারী খুনের সিসিটিভি দৃশ্য সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। ‘‘০০৭’’ নামে শতাধিক সদস্যের একটি ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপের মাধ্যেমে নয়ন বাইক চোরাচালান ও মাদক ব্যাবসার সঙ্গে যুক্ত ছিল। ঘটনার একমাস আগে নয়ন আর এক গুন্ডা মনজুরুল আলম জনের দলে ভিড়ে য়ায়। ২ রা জুলাই পুলিশের সাথে গোলাগুলিতে নয়ন মারা গেলে ওই ব্যবসা আলম জনের হাতে আসে। পুলিশের কাছে রিফাতের বিরুদ্ধেও অপরাধের কেস ছিল। ফেসবুকে রিফাতের খুনিদের শাস্তির দাবিতে একটি ফেসবুক গ্রুপও খোলা হয়। এপর্যন্ত রিফাত হত্যায় কুড়ি জনের যুক্ত থাকার যোগ মিলেছে।
আপরদিকে জুন মাসে খুলনা ব্রজলাল কলেজের জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের নেতা আব্দুল্লা আল ফয়সলকে আতত্মায়ীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। তার বিরুদ্ধে তোলা আদায়ের অভিযোগ ছিল।