উত্তরপ্রদেশে নাবালিকাকে ধর্ষণের দায়ে কোনও ব্যক্তি কি ছুরিকাহত হয়েছেন?
বুম দেখেছে, ভিডিওটি হায়দ্রাবাদের, যাতে ছুরিকাহত ব্যক্তিটিকে তার স্ত্রীর বাবা-মা আক্রমণ করে তাদের মেয়েকে নিয়ে পালানোর অপরাধে।
ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যাতে হায়দ্রাবাদের এক যুবককে তার স্ত্রীর বাবা-মা নির্মমভাবে মারছে দেখা যাচ্ছে । কিন্তু পোস্টটিতে মিথ্যা দাবি করা হয়েছে যে, উত্তরপ্রদেশের বারবাঁকিতে ৮ বছরের একটি মেয়েকে ধর্ষণ করার প্রতিশোধ নিতে একজন হিন্দু এ ভাবে দোষী ব্যক্তিটিকে পেটাচ্ছে ।
প্রকাশ্য দিবালোকে ব্যস্ত রাস্তার উপর এক যুবককে নৃশংসভাবে মারার এই ৩০ সেকেন্ডের ভিডিওটি অনেক ফেসবুক পেজেই শেয়ার হয়েছে, যার ক্যাপশনে লেখা হয়েছে—“বারবাঁকিতে ৮ বছরের একটা বাচ্চা মেয়ের ধর্ষণকারী এই শুয়োরকে এক হিন্দু বাঘ রাস্তার উপরেই ছুরি দিয়ে ফালাফালা করে দিয়েছে…হিন্দু ব্যাঘ্র, তুমি দীর্ঘজীবী হও!’’
ভিডিওটির আর্কাইভ সংস্করণ এখানে দেখুন ।
তথ্য যাচাই
বুম জানতে পেরেছে যে, এই ভিডিওটি হায়দ্রাবাদের গত সপ্তাহের একটি ঘটনার, উত্তরপ্রদেশের বারবাঁকির নয় । ২৩ বছরের এক যুবককে গত ৭ জুন হায়দরাবাদের এস আর নগরের একটি রাস্তার উপর তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আক্রমণ করে ।
অন্য কোণ থেকে তোলা ওই একই ঘটনার দীর্ঘতর একটি ভিডিও দ্য হিন্দু সংবাদপত্রের এক সাংবাদিক শেয়ার করেছেন—
বুম খেয়াল করেছে, ভুয়ো দাবি নিয়ে ফেসবুকে শেয়ার হওয়া ভিডিওটিতে আক্রমণকারী ও আক্রান্ত যে-রঙের জামা পরে রয়েছে, এই অন্য ভিডিওটির সঙ্গে তা হুবহু মিলে যায় ।
তা ছআড়া, ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির .৩ সেকেন্ডে আক্রমণের সময় একটি অক্টোরিক্সকে পাশ দিয়ে যেতে দেখা যায়, অবিকল তেমনই একটি অটোরিক্সকে দীর্ঘতর ভিডিওটির ৫৫ সেকেন্ডের মাথায় যেতে দেখা যাচ্ছে ।
বহু সংবাদমাধ্যম ঘটনাটি ব্যাপকভাবে প্রচার করেছে । দ্য নিউজ মিনিট জানাচ্ছে, “হায়দরাবাদের ওই আক্রান্ত ব্যক্তিটির নাম ইমতিয়াজ । সে গত ৫ জুন ফতিমা নাম্নী এক মহিলার সঙ্গে পালিয়ে যায় এবং মহিলার বাবা-মার অমতে ৬ জুন তারা বিয়ে করে । ফতিমার মা-বাবা কোনও ভাবে তাদের খোঁজ পেয়ে ইমতিয়াজকে ধরে আনে এবং প্রকাশ্য রাস্তায় শত-শত লোককে স্তম্ভিত করে ইমতিয়াজকে ততক্ষণ ধরে ছোরা দিয়ে মারতে থাকে, যতক্ষণ না সে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে” ।