মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের হার ৮.৩% কমেছে: ২০২০ এনসিআরবি তথ্য
প্রায় ৩.৭১ লক্ষ ঘটনার মধ্যে, ১.১১ লক্ষ হল স্বামী বা আত্মীয়দের দ্বারা নির্যাতনের ঘটনা।
২০১৯'র তুলনায়, ২০২০তে, মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যা ৮.৩% কমেছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো'র (NCRB)সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান তাই বলছে। এনসিআরবি হল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন একটি সংস্থা। তাদের মুখ্য প্রকাশনা 'ক্রাইম ইন ইন্ডিয়া'র (Crime In India) সাম্প্রতিকতম সংস্করণে এই তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
ভারতীয় দণ্ডবিধি এবং বিশেষ ও স্থানীয় আইন ভেঙ্গে মেয়েদের বিরুদ্ধে যে সব অপরাধ ঘটেছে, পরিসংখ্যান বলছে, সেগুলির সংখ্যা ২০১৯'র ৪,০৫,৩২৬ থেকে ২০২০তে কমে দাঁড়ায় ৩,৭১,৫০৩। দেশব্যাপি অপরাধের হার ছিল ৫৬.৫।
এনসিআরবি'র সংজ্ঞা অনুযায়ী, অপরাধের হার হল, প্রতি এক লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে অপরাধের অনুপাত।
মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের ক্ষেত্রে, অসম পর পর চার বছর শীর্ষ স্থান অধিকার করল। অসমে ২৬,৫৩২ নথিভুক্ত ঘটনার নিরিখে, অপরাধের হার হল ১৫৪.৩। তারপরে যথাক্রমে আছে ওড়িশা (১১২.৯), দিল্লি (১০৬.৪) ও তেলেঙ্গানা (৯৫.৪)।এই রাজ্যগুলিতে ঘটনার সংখ্যা হল, যথাক্রমে ২৫,৪৮৯ (ওড়িশা), ১০,০৯৩ (দিল্লি), ১৭,৭৯১ (তেলেঙ্গানা)। কেবল সংখ্যার বিচারে, ৪৯,৮৩৫ ঘটনা নিয়ে শীর্ষে আছে উত্তর প্রদেশ। তারপরই আছে যথাক্রমে পশ্চিমবঙ্গ(৩৬,৪৩৯ ঘটনা) ও রাজস্থান (৩৪,৫৩৫ ঘটনা)। এবং এদের অপরাধের হার হল যথাক্রমে ৪৫.১ (উত্তরপ্রদেশ), ৭৬.২ (পশ্চিমবঙ্গ) ও ৯০.৫ (রাজস্থান)।
আরও পড়ুন: ভুয়ো খবর ছড়ানোর ঘটনা বৃদ্ধি ২১৪%: ২০২০ এনসিআরবি রিপোর্ট
ভারতীয় দণ্ডবিধির অধীনে, সবচেয়ে বেশি হল 'স্বামী ও আত্মীয়দের দ্বারা নির্যাতন'এর ঘটনা — ১,১১,৫৪৯— (ভারতীয় দণ্ডবিধি, ধারা ৪৯৮এ)। এর পরে যথাক্রমে আছে 'মহিলার শ্লীলতাহানি'র ঘটনা — ৮৫,৩২৯ — (ভারতীয় দণ্ডবিধি, ধারা ৩৫৪); অপহরণ — ৬২,৩০০ (ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারা); ধর্ষণ — ২৮,০৪৬ — (ভারতীয় দণ্ডবিধি, ধারা ৩৭৬)। গত বছর, ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মোট ৩,১১,৩৫৪ টি ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়।
বিশেষ ও স্থানীয় আইনের অধীনে, ১০,৩৬৬ টি কেস নথিভুক্ত করা হয় পন নিরোধক আইনের আওতায় ও ৪৬,১২৩ কেস নথিভুক্ত হয় শিশু যৌন নিগ্রহ প্রতিরোধ আইনের আওতায়। এই দু'ধরনের অপরাধ, মেয়েদের বিরুদ্ধে বিশেষ ও স্থানীয় আইনের অধীনে নথিভুক্ত ঘটনার প্রায় ৯৪% এবং সেগুলি মোট সংখ্যা ৬০,১৪৯।
তবে কেবল মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের সংখ্যাই যে কমেছে, তা নয়। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, যেহেতু পরিসংখ্যানগুলি কোভিড-১৯ অতিমারির বছরের, যে সময় ওই অতিমারির প্রথম ঢেউ আছড়ে পড়ে, তাই মেয়েদের, শিশুদের ও বয়স্ক নাগরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধ, চুরি, ডাকাতি, রাহাজানি ইত্যাদির সংখ্যাও হ্রাস পায়। ওই রিপোর্টে বলা হয়, "মেয়েদের, শিশুদের ও বয়স্ক নাগরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধ, চুরি, ডাকাতি, রাহাজানিও ওই কারণে কমে। কিন্তু কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ কার্যকর করার ফলে, সরকারি নির্দেশ ভাঙ্গা, ভারতীয় দণ্ডবিধির অধীনে অন্যান্য অপরাধ এবং রাজ্য ও স্থানীয় আইনের অধীনে নথিভুক্ত অপরাধের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।"
এনসিআরবি'র পরিসংখ্যান এখানে দেখা যাবে।
আরও পড়ুন: কলকাতা সবচেয়ে নিরাপদ শহর, চেন্নাই বিপজ্জনক: এনসিআরবি ২০২০ তথ্য