বাংলাদেশের হিংসায় নয়, ২০১৫ সালে পদপিষ্ঠে স্বজন হারিয়ে শোকার্ত নারী
বুম দেখে শোকার্ত মহিলার ভাইরাল ছবিটি ২০১৫ সালের ২৭ মার্চের। বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে পদপিষ্ঠ হওয়ার ঘটনায় স্বজন হারান তিনি।
২০১৫ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশে নারায়ণগঞ্জে (Narayanganj) হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদপিষ্ঠ (stampede) হওয়ার ঘটনায় স্বজন হারানোয় (grief-stricken) শোকার্ত মহিলার ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো দাবি সহ বাংলাদেশের হিংসার (Bangladesh violence) ঘটনা বলে দাবি করা হচ্ছে।
অক্টোবর মাসে বাংলাদেশের কুমিল্লায় দুর্গা পুজো মণ্ডপে কোরান রাখা ঘিরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সহিংসতা ছড়ায়। সহিংসতার জেরে নিহত হয় ৭ ব্যক্তি। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ওঠে। সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবিটি এই প্রেক্ষিতেই শেয়ার করা হচ্ছে।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া গ্রাফিকের ছবিটতে এক শোকার্ত মহিলাকে এক পুরুষের কাঁধ ধরে কাঁদতে দেখা যায়। গ্রাফিকটিতে ইংরেজিতে লেখা হয়েছে, "হিন্দুরা বাংলাদেশে নিরাপদ নয়। বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর আক্রমণ বন্ধ হোক। হিন্দুদের উপর সাম্প্রদায়িক হিংসার জন্য কাউকে শাস্তি দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশিদের বাঁচান। কয়েক দশক ধরে চলতে থাকা হিন্দু বিতাড়নে নিয়ে গণমাধ্যম নীরব।"
ফেসবুক পোস্টটি দেখা যাবে এখানে।
(মূল ইংরেজিতে: "#HindusNotSafeInBangladesh. No one is Punished for Communal attacks on Hindus. Stop Atacks on Hindus in Bangladesh. #PleaseSaveBangladeshiHindu. The media is silent on the ongoing Hindu persecution for decades.")
বুম দেখে ফেসবুকে একই ছবি গ্রাফিক হিসেবে ভাইরাল হয়েছে।
ফেসবুক পোস্টটি দেখা যাবে এখানে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে হিংসায় আহত মহিলা মিথ্যে দাবিতে ছড়াল ভিন্ন ঘটনার ছবি
তথ্য যাচাই
বুম যাচাই করে দেখে শোকার্ত মহিলার ভাইরাল ছবিটি ২০১৫ সালের ২৭ মার্চের। বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে পদপিষ্ঠ হওয়ার ঘটনায় স্বজন হারান তিনি।
বুম রিভার্স সার্চ করে ভেনিজুয়েলার গণমাধ্যম এল ইস্টিমুলো ও ইকুয়েডরের গণমাধ্যম ইকুয়াভিসাতে ২৭ মার্চ ২০১৫ প্রকাশিত স্প্যানিশ ভাষার প্রতিবেদনে ভাইরাল ছবিটি দেখতে পায়।
এল ইস্টিমুলোর প্রতিবেদনের শিরোনামের বাংলা অনুবাদ, "হিন্দু উৎসব চলার সময় বাংলাদেশে ১০ জন নিহত" (মূল স্প্যানিশে: 10 muertos durante un festival hindú en Bangladesh)
প্রতিবেদনের অনুবাদ করলে জানা যায় বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে পদপিষ্ঠ হওয়ার ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়, আহত হন একাধিক। সকাল ৯ টার সময় ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় রাজঘাট পয়েন্টে পুরনো ব্রহ্মপুত্রতে অষ্টমী স্নানের সময় ওই দুর্ঘটনা ঘটলে ৭ মহিলা সহ ১০ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় আহত হন আরও ২০ জন।
পুন্যার্থীদের অভিযোগ করেন পর্যাপ্ত ব্যবস্থার অভাব ও কাছাকাছি একটি সেতু ভেঙে পড়েছে গুজব ছড়ালে তাড়াহুড়োয় সবাই পদপিষ্ট হয়।
২৮ মার্চ ২০১৫ প্রকাশিত স্কটিশম্যানের প্রতিবেদনে এই একই হলুদ লাল শাড়ি পড়া মহিলাকে শোকার্ত ভঙ্গিমায় অন্যদিক থেকে তোলা ছবিতে দেখা যাবে। বিডি নিউজ ২৪-এর ২৭ মার্চ ২০১৫ প্রতিবেদনের ছবির গ্যালারিতে (দ্বিতীয় ছবি) মৃতদেহের পাশে বসে বিলাপ করতে দেখা যায় ওই মহিলাকে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে হিংসায় আহত মহিলা মিথ্যে দাবিতে ছড়াল ভিন্ন ঘটনার ছবি