বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের সাম্প্রদায়িক দাবিতে অসম্পর্কিত ভিডিও ছড়াল
বুম দেখে ভাইরাল ভিডিওয় দৃশ্যমান ভুক্তভোগীরা প্রত্যেকেই মুসলিম।

এক মহিলা ও দুই শিশুর মৃতদেহর একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি শেয়ার করে ব্যবহারকারীরা দাবি করেছেন ভিডিওয় বাংলাদেশের (Bangladesh) এক হিন্দু (Hindu) পরিবারকে সাম্প্রদায়িক (communal) কারণে হত্যার দৃশ্য দেখা যায়।
বুম যাচাই করে দেখে ভাইরাল ভিডিওয় দৃশ্যমান ঘটনায় ভুক্তভোগীরা এবং মূল অভিযুক্ত সকলেই মুসলিম।
ভাইরাল ভিডিও
ভাইরাল ভিডিওয় একটি ঘরের মধ্যে খাটের উপর এক মহিলা ও দুই শিশুর মৃতদেহ ছাড়াও একজন পুলিশ কর্মী ও অন্য এক ব্যক্তিকে দেখা যায়। ভিডিওটি শেয়ার করে ব্যবহারকারীরা দাবি করেছেন, "আবার সেই বাংলাদেশ এর ঘটনা, এই হিন্দু গৃহবধূর স্বামীর অবর্তমানে জিহাদীরা প্রথমে গণধর্ষণ করে এবং শেষে দুই শিশু বাচ্চা দুটিকে গলা কেটে হত্যা করে, সঙ্গে গৃহবধূর ও গলা কেটে দেয়, মনে রাখবেন সেক্যুলার হিন্দু আজকে বাংলাদেশের হচ্ছে, কালকে তোমার ঘরেও হবে।।তাই ২০২৬-এ এই মুসলিম লীগ সরকারকে ছুঁড়ে ফেলে দিন।।"
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
অনুসন্ধানে আমরা কী পেলাম: ভাইরাল সাম্প্রদায়িক দাবি বিভ্রান্তিকর
আমরা ভাইরাল দাবির সত্যতা যাচাই করতে প্রথমে ভিডিওটির কিফ্রেমের রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। সার্চের মাধ্যমে আমরা ভাইরাল ভিডিওসহ জুলাই মাসের একাধিক ইউটিউব পোস্ট পাই যেখানে ব্যবহারকারীরা দাবি করেছেন ঘটনাটি ময়মনসিংহের ভালুকার।
এর থেকে ইঙ্গিত নিয়ে, আমরা গুগলে সম্পর্কিত কিওয়ার্ড সার্চ করে এই ঘটনা সংক্রান্ত একাধিক সংবাদ প্রতিবেদন পাই। বাংলাদেশী সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ২৪-এর ১৪ জুলাই, ২০২৫-এর বুলেটিনে ভাইরাল ভিডিওর দৃশ্য দেখা যায়। প্রতিবেদন অনুসারে, পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে ময়মনসিংহের ভালুকায় ময়না বেগম ও তার দুই সন্তানের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। তাদের গলা কেটে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছে।
প্রথম আলোর ১৫ জুলাই, ২০২৫-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, রফিকুল ইসলামের স্ত্রী ময়না বেগম ও তাদের দুই সন্তান রাইসা আক্তার এবং মোহম্মদ নীরবকে তাদের ঘর থেকে নিহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় ভুক্তভোগীদের পরিবারের মূল অভিযোগ রফিকুল ইসলামের ভাই পলাতক নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এর আগে নজরুল অন্য এক খুনের মামলায় জেলে ছিল বলে জানান রফিকুল।