বাইকুল্লা চিড়িয়াখানার নাম বদল পিরের নামে? না, বললেন মুম্বইয়ের মেয়র
বাইকুল্লা চিড়িয়াখানা হজরত হাজি পির রানিবাগওয়ালের নামে নামকরণ করা হয়েছে, দাবি খারিজ করলেন মুম্বইয়ের মেয়র কিশোরী পেডনেকর।
![বাইকুল্লা চিড়িয়াখানার নাম বদল পিরের নামে? না, বললেন মুম্বইয়ের মেয়র বাইকুল্লা চিড়িয়াখানার নাম বদল পিরের নামে? না, বললেন মুম্বইয়ের মেয়র](https://bangla.boomlive.in/h-upload/2021/12/30/966482-966123-rani-baug-story-fake-news-01.webp)
মুম্বইয়ের (Mumbai) মেয়র কিশোরী পেডনেকর (Kishori Padnekar) সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এই দাবি খারিজ করেছেন যে, শিব সেনা (Shiv Sena) পরিচালিত সরকার বাইকুল্লা (Byculla Zoom) চিড়িয়াখানার নাম এক মুসলিম পিরের নামে নামাঙ্কিত করেছে। পোস্টগুলিতে দাবি করা হয়েছে যে, মুসলিমদের তোয়াজ করতে 'বীরমাতা জিজামাতা ভোঁসলে উদ্যান' নামে পরিচিত রানিবাগের (Ranibaug) নাম পাল্টে 'হজরত পিরবাবা রানিবাগ' (Peer) রাখা হয়েছে।
বুম-কে মেয়র জানান— "রানিবাগের নাম আদৌ পাল্টানো হয়নি l লোকে কী করে বিশ্বাস করছে যে এ রকম পুরনো একটি পার্কের নাম রাতারাতি পাল্টে ফেলা হবে? পার্কটির নাম বীরমাতা জিজামাতা ভোঁসলে উদ্যান এবং সেটাই থাকবে l যারা নাম বদলানোর কথা বলছে, তারা বাজে কথা বলছে এবং আসলে গোলমাল পাকাতে চাইছে।"
ভাইরাল পোস্টগুলির ভিত্তি হলো পার্কের ভিতরে রাখা একটি কালো গ্রানাইটের সাইনবোর্ডের ছবি, যাতে একটি রাস্তার দিকে নির্দেশ করে লেখা—'হজরত হাজি পিরবাবা রানিবাগ'।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষও তার ফেসবুক পেজে জানিয়েছে যে, পার্কটির নামের কোনও পরিবর্তন করা হয়নি।
নীচে সোশাল মিডিয়ার পোস্টে এই ভুয়ো দাবিটি দেখা যেতে পারেl রাজ্য বিধানসভার বিজেপি সদস্য নীতেশ রানে'ও এই একই দাবি করেছেন, যিনি আবার কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী নারায়ণ রানে। এই নারায়ণ রানে শিব সেনাতেই তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন, কিন্তু ২০০৫ সালে সেনা-প্রধান ও মহারাষ্ট্রের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে'র সঙ্গে মতান্তরের কারণে দল ছেড়ে দেন।
চিড়িয়াখানার নাম বদল নিয়ে সরকারি কোনও বিজ্ঞপ্তিও জারি হয়নি।
বুম নিজেও চিড়িয়াখানাটি সরেজমিনে সফর করেছে এবং দেখেছে, সাইনবোর্ডটি ব্রিটিশ আমলে তৈরি একটি দরগার দিকে নির্দেশ করছে, যেটি ১৫০ বছরেরও বেশি পুরনো। পার্কটির সরকারি নাম এখনও 'বীরমাতা জিজাবাই ভোঁসলে উদ্যান'-ই রয়েছে।
সাইনবোর্ডটির ছবি নীচে দেখতে পাবেন। এটি সম্বর ও জলহস্তীদের থাকার জায়গার আগেই পড়বে এবং চিড়িয়াখানার গোলাপ-বাগানের বাম দিকে এর অবস্থান।
![চিড়িয়াখানা প্রাঙ্গনে এই সাইনবোর্ড ঘিরে বিতর্ক। চিড়িয়াখানা প্রাঙ্গনে এই সাইনবোর্ড ঘিরে বিতর্ক।](https://bangla.boomlive.in/h-upload/2021/12/30/966557-966124-rani-baug-story-clicks-by-mohammed-khudrati-04.webp)
এ ছাড়া বুম ওই দরগার কেয়ারটেকারদের সঙ্গেও কথা বলে দেখেছে, যাদের একজন শফি মুজাওয়ার ২০ বছর ধরে দরগার রক্ষণাবেক্ষণের কাজে নিযুক্ত। তিনি জানালেন, সাইনবোর্ডটি নতুনও নয়, অন্তত ৪ বছর আগে এটি বসানো হয়েছিল। চিড়িয়াখানার সার্বিক আধুনিকীকরণের অঙ্গ হিসাবেই তা করা হয়েছিল।
কালো গ্রানাইটের এই বোর্ডটি বসানোর আগেও ওখানে দরগার দিকে নির্দেশ করে একটি সাইনবোর্ড লাগানো ছিল। মুজাওয়ার বুম-কে জানালেন— আগের যে সাইনবোর্ডটি সরিয়ে কালো গ্রানাইটের নতুন বোর্ড লাগানো হয়েছে, সেটির মতোই আরও দুটি ছোট বোর্ড টিড়িয়াখানার ফটকের বাইরেও লাগানো আছে, যেগুলো অন্তত ২০ বছর ধরে রয়েছে।
![দরগার গেটের বাইরে পুরনো বোর্ডের প্রথমটি। দরগার গেটের বাইরে পুরনো বোর্ডের প্রথমটি।](https://bangla.boomlive.in/h-upload/2021/12/30/966558-966125-rani-baug-story-clicks-by-mohammed-khudrati-01.webp)
![দরগার গেটের বাইরে দ্বিতীয় বোর্ড। দরগার গেটের বাইরে দ্বিতীয় বোর্ড।](https://bangla.boomlive.in/h-upload/2021/12/30/966559-966137-rani-baug-story-clicks-by-mohammed-khudrati-05.webp)
লোকমত-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী গোটা বিষয়টি একটি রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে, কারণ শিব সেনার সদস্যরা ওরলি থানায় রানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন। প্রতিবেদন অনুসারে রানে বলেছেন, তিনি একটি খবরের ভিত্তিতে তাঁর টুইটটি করেছিলেন এবং যদি শিব সেনার সদস্যরা তাতে আঘাত পেয়ে থাকেন, তাহলে তাঁদের প্রথমে হিন্দুদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত, তার পরে তিনি তাঁর টুইটের জন্য দুঃখপ্রকাশ করবেন।