কঙ্গনা রানাউতের গালে থাপ্পড়ের দাগ দাবি করে ভাইরাল পুরনো বিজ্ঞাপনের ছবি
বুম দেখে ভাইরাল ছবিটি মশা নিরোধক বেগন স্প্রের ২০০৬ সালের বিজ্ঞাপনের জন্য তোলা হয়।
![কঙ্গনা রানাউতের গালে থাপ্পড়ের দাগ দাবি করে ভাইরাল পুরনো বিজ্ঞাপনের ছবি কঙ্গনা রানাউতের গালে থাপ্পড়ের দাগ দাবি করে ভাইরাল পুরনো বিজ্ঞাপনের ছবি](https://bangla.boomlive.in/h-upload/2024/06/09/1028145-kangana-slap.webp)
চন্ডিগড় বিমানবন্দরে এক মহিলা সিআইএসএফ (CISF) জওয়ানের অভিনেত্রী ও সাংসদ কঙ্গনা রানাউতকে (Kangana Ranaut) চড় মারার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি অসম্পর্কিত, ভুয়ো ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। এক মহিলার গালে থাপ্পড়ের দাগের ছবি শেয়ার করে নেটিজেনদের একাংশ দাবি করেছেন ছবিটি কঙ্গনা রানাউতের।
বুম যাচাই করে দেখে ছবিটি কঙ্গনা রানাউতের নয়। আমরা দেখি এক মহিলার গালে আঙুলের দাগের ভাইরাল ছবিটি ২০০৬ সালের মশা নিরোধক বেগন স্প্রের বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত হয়।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে হিমাচল প্রদেশের মান্ডিতে ভারতীয় জনতা পার্টির হয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন কঙ্গনা রানাউত। নির্বাচনে জেতার পর, ৬ জুন দিল্লি যাওয়ার জন্য চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে কুলবিন্দর কউর নামক এক মহিলা সিআইএসএফ জওয়ান অভিনেত্রীকে থাপ্পড় মারেন। কুলবিন্দর জানান ২০২০ সালের কৃষক আন্দোলনের সময় কঙ্গনার করা মন্তব্যের জন্যই তিনি অভিনেত্রীকে চড় মারেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে একটি কোলাজ ভাইরাল হয়েছে। কোলাজটিতে সিআইএসএফ জওয়ানের পোশাকে কুলবিন্দর কউর ও এক মহিলার গালে থাপ্পড়ের দাগের ছবি দেখা যায়। কুলবিন্দরের ছবির নীচে ইংরেজিতে 'দ্য আর্টিস্ট' ও গালের ছবির নীচে 'দ্য আর্ট' লেখাটি দেখা যায়। একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী ভাইরাল পোস্টটি শেয়ার করে ক্যাপশন হিসাবে লিখেছেন, "এক চ ড়েই কঙ্কনা বুঝতে পেরেছে দেশ 2014 সালে নয়, 1947 সালেই স্বাধীন হয়েছিল।"
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
আরও এক ফেসবুক ব্যবহারকারী কুলবিন্দর কউর ও গালে থাপ্পড়ের দাগের ছবিটির কোলাজ শেয়ার করে ক্যাপশন হিসাবে লিখেছেন, "ইনি সেই CISF মহিলা জওয়ান যিনি কঙ্গনা রানাওতকে চড় কষিয়েছেন। কঙ্গনা কৃষকদের খালিস্তানি বলে ডাকার কারণে তিনি রেগে চড়িয়ে দিয়েছেন।"
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ভাইরাল পোস্টে যে মহিলার গালের থাপ্পড়ের দাগ দেখা যাচ্ছে তিনি কঙ্গনা রানাউত কিনা যাচাই করতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে।
সার্চের মাধ্যমে আমরা 'অ্যাডস অফ দ্য ওয়ার্ল্ড" নামক এক ওয়েবসাইটে ভাইরাল ছবির একটি সম্পূর্ণ সংস্করণ দেখতে পাই এবং সেটি অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের নয় । 'স্ল্যাপ টু' শীর্ষক ওই পোস্টের ক্যাপশন অনুযায়ী, ছবিটি প্রিন্ট মিডিয়ামে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য তোলা হয়। ভাইরাল ছবিটি ৩০ মে ২০০৬ সালে প্রকাশিত হয়।
নীচে ভাইরাল ছবি ও বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত ছবির একটি তুলনা দেওয়া হল।
আমরা লক্ষ্য করি মূল ছবির একদম নীচে ডান দিকে বেগন স্প্রে বোতলের ছবি ও এবং ইংরেজিতে 'মশা মারে, ব্যাথাহীনভাবে' লেখাটি দেখা যায়। এই সুত্রধরে আমরা ২০০৬ সালের বেগন স্প্রের বিজ্ঞাপনের অনুসন্ধান করি।
আমরা 'কুল মার্কেটিং থটস' নামক একটি ওয়েবসাইটে ৩১ মে ২০০৬ প্রকাশিত একটি ব্লগ দেখতে পাই। "বেগন স্ল্যাপ" শীর্ষক ওই ব্লগে মহিলা ছাড়াও, আরও অন্য দুই ব্যক্তির গালে একই রকম চড়ের দাগসহ ছবি দেখা যায়। ব্লগ থেকে জানা যায় বেগনের মশা নিরোধক স্প্রের বিজ্ঞাপনের জন্য এই ছবিগুলি ব্যবহার করা হয় ২০০৬ সালে।
ব্লগটি দেখুন এখানে।