AI ভিডিও ছড়িয়ে দাবি মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চাইছে ইজরায়েলবাসীরা
বুম একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাচাইকারী ওয়েবসাইটে ভাইরাল ভিডিওটি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয় সেটি এআই দিয়ে তৈরি।

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতির (Iran-Israel war) মাঝে সম্প্রতি ইজরায়েলবাসীরা (Israelis) মুসলিম (Muslim) সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চাইছে (apologising) দাবি করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (artificial intelligence) দিয়ে তৈরি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
বুম ভাইরাল ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকারী বিভিন্ন ওয়েবসাইটে যাচাই করে নিশ্চিত হয়েছে সেটি এআই দিয়ে তৈরি।
গত ১৩ জুন অপারেশন দ্য রাইসিং লায়নের ঘোষণা করে ইরানে হামলা করে ইজরায়েল, আক্রমণের প্রত্তুতরে আঘাত করে ইরানও। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে প্রায় সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ দুই দেশের সেনা। সংঘর্ষের আবহে ইতিমধ্যেই ইজরায়েলের উপর মিসাইল হামলা করেছে ইরান।
ভাইরাল দাবি
ভাইরাল ভিডিওয় দুটি আলাদা দৃশ্য দেখা যায় যেখানে ধ্বংসস্তুপের মাঝে দাঁড়িয়ে কয়েকজন মানুষকে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। ভিডিওয় সাংবাদিকের উদ্দেশ্যে ওই লোকজনকে ইংরেজিতে বলতে শোনা যায়, "আমরা মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চাইছি, দয়া করে আমাদের ক্ষমা করে দাও।" একজন এক্স ব্যবহারকারী পোস্টটির ক্যাপশনে লেখেন, "ইজরাইলের মানুষ সারা পৃথিবীর মুসলমানের কাছে ক্ষমা চাচ্ছে।"
আমরা অনুসন্ধানে কী পেলাম
বুম ভাইরাল ভিডিওয় দৃশ্যমান ব্যক্তিদের মধ্যে কিছু অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করে ভিডিওটিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকারী সরঞ্জামে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয় ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
১. ভাইরাল ভিডিওয় দৃশ্যমান অসঙ্গতি
আমরা প্রথমে ইজরায়েলবাসীদের মুসলিম সম্প্রদায়ের অথবা ইরানের কাছে ক্ষমা চাওয়া সংক্রান্ত কিওয়ার্ড সার্চ করে কোনও বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদন খুঁজে পায়নি। তবে ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করলে সেটিতে আমরা কিছু অস্বাভাবিকতা বা অসঙ্গতি লক্ষ্য করি যেমন - ক্ষমাপ্রার্থী মানুষগুলির একজনকেও সারা ভিডিওয় চোখ খুলতে দেখা যায় না। এছাড়াও, হাত নেড়ে কথা বলার সময় তাদের হাতের পাতা অস্পষ্ট দেখায়; আলাদা করে হাতের আঙুল বোঝা যায় না।
২. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাচাইকারী ওয়েবসাইটে পরীক্ষার ফলাফল
ভিডিওয় বিভিন্ন অসঙ্গতি লক্ষ্য করে আমরা প্রথমে সেটিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাচাইকারী ওয়েবসাইট হাইভ মডারেশনে পরীক্ষা করে দেখি ভিডিওয় এআই প্রয়োগের সম্ভাবনা ৭১.২%। এরপর, ভিডিওয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে আমরা ডিপফেক-ও-মিটারে একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাচাইকারী সরঞ্জামে ভিডিওটি পরীক্ষা করি। পরীক্ষায় এআই প্রয়োগের সম্ভাবনা যথাক্রমে ৯৯.১% ও ৭৭.২% পাওয়া যায়। সবশেষে ভাইরাল ভিডিওর দুটি দৃশ্যের স্ক্রিনশট আমরা আরও একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাচাইকারী ওয়েবসাইট ওয়াজ ইট এআইয়ে পরীক্ষা করি। ওয়াজ ইট এআই দুটি ছবিকেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি বলে শনাক্ত করেছে।
নীচে পরীক্ষাগুলির ফলাফল দেখা যাবে।
আরও পড়ুন -ইজরায়েলের মোসাদে ইরানের হামলা বলে R.বাংলার সম্প্রচারে চীনের ভিডিও