মুর্শিদাবাদের হিন্দু তরুণীকে পুড়িয়ে মারার দাবিতে ভাইরাল মেক্সিকোর ভিডিও
বুম দেখে ভাইরাল ভিডিওয় মেক্সিকোর একটি মাদক পাচারকারী গোষ্ঠীকে তাদের প্রতিপক্ষের এক সদস্য়ের গায়ে আগুন লাগিয়ে দিতে দেখা যায়।



মেক্সিকোয় (Mexico) এক ব্যক্তির গায়ে কিছু লোকের আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ভয়ঙ্কর একটি ভিডিও সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ঘটনা দাবি করে ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীদের একাংশ ভুয়ো সাম্প্রদায়িক (communal) দাবি করেছেন সামশেরগঞ্জে একজন হিন্দু (Hindu) তরুণীকে এক মুসলিম (Muslim) লোকের পুড়িয়ে মারার ঘটনা দেখা যায় ভাইরাল ভিডিওতে।
বুম যাচাই করে দেখে ভিডিওটি মুর্শিদাবাদের নয়। মেক্সিকোর একটি মাদক পাচারকারী গোষ্ঠীর তাদের প্রতিপক্ষ অপর একটি গোষ্ঠীর এক সদস্য়ের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনার ভিডিও এটি।
বুম ভিডিওর বিষয়বস্তুর বর্বরতা ও ভয়াবহতার কারণে পোস্টটি প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে দাবি করেন, "এই ঘটনাটা হচ্ছে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে ছেলেটার নাম আব্বাস শেখ মেয়েটার নাম তানিয়া হালদার মেয়েটা আসল পরিচয় জানতে পেরে সে সরে যাওয়ার চেষ্টা করে মেয়েটার চুল কেটে নেয় লাস্টে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারে।"
তথ্য যাচাই
ভাইরাল ভিডিও মেক্সিকোর
বুম দাবিটির সত্যতা যাচাই করতে ভাইরাল ভিডিওটিকে একাধিক কিফ্রেমে ভাগ করে। এরপর, এই কিফ্রেমগুলির রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে আমরা ভিডিওর অনুরূপ দৃশ্যসহ ডেইলি স্টারের ৬ মে, ২০২৩-এর একটি প্রতিবেদন পাই।
ডেইলি স্টারের রিপোর্ট জানায়, ঘটনাটি মেক্সিকোর উত্তর-পূর্ব সীমান্তবর্তী রাজ্যে তামাউলিপাসের। মেক্সিকোর সবচেয়ে পুরনো মাদক পাচারকারী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটি গালফ কার্টেলের সশস্ত্র ভাগ স্করপিয়ন গ্রূপ ঘটনাটির জন্য দায়ী।
প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, ভুক্তভোগী গালফ কার্টেলের লস জেতাস ভেইজা এস্কুয়েলা নামের একটি প্রতিপক্ষ গোষ্ঠীর এক সদস্য।
আমরা কিওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে, একই ভিডিওর একটি দীর্ঘতর সংস্করণ Livegore ওয়েবসাইটে ৬ মে, ২০২৩-এ আপলোড করা দেখতে পাই। ভিডিওর বর্ণনায় ঘটনাটি মেক্সিকোর তামাউলিপাস রাজ্যের স্যান ফের্নান্দোর বলা হয়েছে যেখানের এক অপরাধমূলক গোষ্ঠী তাদের প্রতিপক্ষের এক সদস্যের গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।
এরপর, আমরা স্প্যানিশে আবারও কিওয়ার্ড সার্চ করি। সার্চের মাধ্যমে ভাইরাল ভিডিও দৃশ্যসহ মেক্সিকান সংবাদ সংস্থা রোডোলফো ফ্রাঙ্কো ইনফরমার ৩ মে, ২০২৩-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাই। প্রতিবেদনে বলা হয় ভিডিওয় স্যান ফের্নান্দোর পুরনো মাদক পাচারকারী জেতাস গোষ্ঠীর এক নেতাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ভয়াবহ ঘটনা দেখা যায়।
এর থেকে আমরা নিশ্চিত হই, ভাইরাল ভিডিও আদতে মেক্সিকোর, মুর্শিদাবাদের নয়।