ভুয়ো দাবিতে ছড়াল সচিন তেন্ডুলকরের শেষকৃত্যে অংশ নেওয়ার পুরনো ছবি
বুম দেখে ২০১৯ সালের মূল ছবিটিতে সচিন তেন্ডুলকরকে তাঁর কোচ রমাকান্ত আচরেকরের শেষকৃত্যে অংশ নিতে দেখা যায়।
সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবিতে ক্রিকেট খেলোয়াড় সচিন তেন্ডুলকরকে (Sachin Tendulkar) একজন শব বাহক হিসেবে দেখা যাচ্ছে। ছবিটির ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে যে, উনি সমাজসেবী সিন্ধুতাই সপকালের (Sindhutai Sapkal) শেষকৃত্যে যোগদান করেন।
বুম দেখে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে মুম্বইয়ে তাঁর প্রশিক্ষক রমাকান্ত আচরেকরের শেষকৃত্যে যোগ দেওয়ার সময় তেনডুলকরের ওই ছবিটি তোলা হয়।
সম্প্রতি, ৪ জানুয়ারি, ২০২২ সমাজসেবী সিন্ধুতাই সপকালের মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে ছবিটি ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল ছবিটিতে সচিন তেন্ডুলকরকে শব বাহক হিসেব দেখা যাচ্ছে। ছবিটির সঙ্গে মারাঠি ভাষায় লেখা ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "আজ আমি শিখলাম যে, পুরস্কারের চেয়ে কাজ অনেক বড়। আজ এক পদ্মশ্রী প্রাপককে কাঁধ দিলেন একজন ভারতরত্ন। সমবেদনা জানাচ্ছি, মা।"
একটি ফেসবুক পোস্টেও ছবিটি শেয়ার করা হয়েছে। সেটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "অনাথদের মায়ের শেষ বার্তা"।
একাধিক ফেসবুক পেজ থেকে ছবিটি শেয়ার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী মোদীর পাঞ্জাব সফরের সঙ্গে মিথ্যে দাবিতে জড়াল অন্য ভিডিও
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখে, ২০১৯ সালে প্রকাশিত বেশ কিছু সংবাদ প্রতিবেদনে ছবিটি ছাপা হয়। ৩ জানুয়ারি, ২০১৯ ওই একই ছবির ক্যাপশনে 'ইন্ডিয়া টুডে' লেখে, "সচিন তেন্ডুলকরের প্রশিক্ষক রমাকান্ত আচরেকরের জীবনাবশেষ: বৃহস্পতিবার শ্মশান যাত্রায় যোগ দিলেন ব্যাটিং কিংবদন্তী।" ছবিটির জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয় বিরল ভায়ানি'র ইনস্টাগ্র্যাম পেজকে।
রিপোর্টটিতে বলা হয়, প্রখ্যাত ক্রিকেট প্রশিক্ষকের শেষকৃত্য ৩ জানুয়ারি ২০১৯ সম্পন্ন হয়। বার্ধক্যজনিত অসুখে মারা যান উনি। রিপোর্টটিতে আরও বলা হয় যে, তাঁর প্রশিক্ষকের শেষকৃত্যে সচিন তেন্ডুলকর উপস্থিত ছিলেন।
৫ জানুয়ারি, পুনেতে, সিন্ধুতাই সপকালের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। সেই সংক্রান্ত খবর ও ছবিগুলি বুম খতিয়ে দেখে। কিন্তু সচিন তেন্ডুলকর তাঁর শেষকৃত্যে যোগ দিয়েছিলেন, তেমন কোনও খবর বা ছবি আমরা দেখতে পাইনি।
সিন্ধুতাই সপকল কে ছিলেন?
তাঁকে ভালবেসে বলা হত 'অনাথাঞ্চি মাই' বা অনাথের মা। সপকল ছিলেন একজন সমাজকর্মী। ১৪ নভেম্বর, ১৯৪৮ তাঁর জন্ম হয়। মৃত্যু হয় ৪ জানুয়ারি, ২০২২। উনি পুনেতে 'সন্মতি বাল নিকেতন সংস্থা' নামের একটি অনাথ আশ্রম চালাতেন। 'ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস'এ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, উনি ১,০০০ অনাথ শিশুকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। ২০২১ সালে উনি পদ্মশ্রী পুরস্কার পান।
আরও পড়ুন: বালাজি মন্দিরের পুরোহিতের বাড়িতে আয়কর হানা দাবিতে ছড়াল ভিন্ন ছবি