যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুর সাথে জুড়ে ছড়াল অসম্পর্কিত সংবাদ প্রতিবেদনের অংশ
বুম দেখে এবিপি আনন্দের উক্ত সংবাদ প্রতিবেদনে বালিগঞ্জ সাইন্স কলেজে এক র্যাগিং সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে রিপোর্ট করা হয়।
সম্প্রতি বাংলায় মূলধারার সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দের (ABP Ananda) একটি নিউজ বুলেটিনের অংশ পোস্ট করে দাবি করা হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যু সংক্রান্ত ঘটনায় জড়িত পুলিশ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে।
বুম যাচাই করে দেখে এবিপি আনন্দে সম্প্রচারিত ওই নিউজ বুলেটিনে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনাটি নিয়ে রিপোর্ট করা হয়নি। ১৯ অগাস্টের ওই প্রতিবেদনে বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজে হওয়া ছাত্রের উপর নির্যাতন সংক্রান্ত রিপোর্ট করা হয়।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে সম্প্রতি প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের রহস্য মৃত্যুর পর থেকেই আলোড়ন উঠেছে সারা বাংলায়। রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষই প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং সংক্রান্ত অপরাধের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই এই রহস্য মৃত্যুকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েরই কিছু ছাত্র এবং প্রাক্তনী।
এবিপি আনন্দের সেই স্ক্রিনশটের অংশ সমেত এক গ্রাফিক পোস্টে লেখা হয়,"যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী ছাত্র খুনে জড়িত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ, প্রমান পেল পুলিশ....মুখ্যমন্ত্রী কি এই জন্যই আগে ভাগে SFI ও CPIM এর ঘাড়ে দোষ দিতে উনার স্বভাবনুযায়ী মিথ্যাচার শুরু করেছিলেন?"
এমনই এক পোস্টের আর্কাইভ এখানে দেখা যাবে।
তথ্য যাচাই
বুম প্রথমে সম্পর্কিত কীওয়ার্ড দিয়ে স্ক্রিনশটটি রিভার্স সার্চ করে এবিপি আনন্দের ১৯ অগাস্ট প্রকাশিত এক প্রতিবেদন খুঁজে পায় যেখানে বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের ছাত্রের নির্যাতন সংক্রান্ত এক অভিযোগের বিষয়ে রিপোর্ট করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে লেখা হয়, "যাদবপুর, খড়গপুরের পর এবার কলকাতা বিশ্ববিদ্য়ালয়ের অধীনস্থ বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজ। ছাত্রের ওপর লাগাতার নির্যাতনের অভিযোগ উঠল বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজে। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করলেও, তেমন কোনও সক্রিয় পদক্ষেপ করেনি পুলিশ, দাবি অভিযোগকারী ছাত্রের। মুখ খুললেন সদ্য প্রাক্তন এক পড়ুয়া। তাঁর দাবি, চার বছর ধরে লাগাতার তাঁর ওপর নির্যাতন হয়েছে। কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। যদিও, এই অভিযোগ মানতে নারাজ কর্তৃপক্ষ।"
এবিপি আনন্দের ইউটিউব চ্যানেলেও ১৯ অগাস্ট ওই ভিডিও রিপোর্ট একই বিবরণ সমেত আপলোড করা হয়।
প্রতিবেদনটি এখানে দেখতে পাওয়া যাবে।
এছাড়াও আমরা ওই প্রতিবেদনের স্ক্রিনশটে দেখতে পাই সেখানে রিপোর্টটি সম্প্রচারের তারিখ ও সময় হিসেবে ১৯ অগাস্ট সকাল ৯টা বেজে ২৯ মিনিটের উল্লেখ রয়েছে। এই সূত্র ধরে কিওয়ার্ড সার্চ করে আমরা এবিপি আনন্দের সেদিনের সরাসরি সম্প্রচারের অংশ খুঁজে পাই।
আমরা দেখতে পাই ওই ভিডিওর ২ ঘন্টা ৪৭ মিনিট থেকে বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজ সংক্রান্ত খবরটি সম্প্রচারিত হয় এবং ২ ঘন্টা ৪৭ মিনিট ৪২ সেকেন্ডে ভাইরাল স্ক্রিনশটের অংশটি দেখানো হয়।
ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
২৩ অগাস্ট প্রকাশিত এই সময়ের এক প্রতিবেদনে বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের হস্টেলে সেই র্যাগিং ও নিগ্রহের অভিযোগ সংক্রান্ত ঘটনায় সাফাইকর্মী ও দুজন নিরাপত্তারক্ষীকে কলকাতা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে রিপোর্ট করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে অনুযায়ী, "গত ৭ জুলাই বালিগঞ্জ থানায় র্যাগিং-এর অভিযোগ করেন ওই ছাত্র। পরের দিন এফআইআর হয়। ইতিমধ্যেই আলিপুর আদালতে ওই ছাত্রের গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।"