'মাথ্রুভূমি' রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বলে দেখাল ভিডিও গেম আর্মা-৩-এর দৃশ্য
ভিডিও গেম আর্মা-৩'এর ক্লিপ ছড়িয়ে ভুয়ো দাবি করা হয় ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের আসল দৃশ্য।
এক যুদ্ধ বিমানকে আকাশ থেকে বোমা ফেলতে ও সেটিকে প্রতিহত করতে বিমান বিধ্বংসী কামানের গোলাবর্ষণ দেখা যাচ্ছে। ওই ভিডিওটিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia Ukraine Crisis) আসল দৃশ্য বলে শেয়ার করা হচ্ছে সোশাল মিডিয়ায়। মালয়ালম গণমাধ্যম 'মাথ্রুভূমি'ও (Mathrubhumi) একই দাবি সমেত ভিডিওটি শেয়ার করে।
বুম দেখে দাবিটি মিথ্যে। সেটি আসলে, যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলার ভিডিও গেম আর্মা-৩-এর একজন ব্যবহারকারীর তৈরি ক্লিপ।
রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পটভূমিতেই শেয়ার করা হচ্ছে ভিডিওটি।
ওই সংঘর্ষ পুরনো ও সম্পর্কহীন ভিডিও'র জোয়ার সৃষ্টি করেছে ও ভিডিও গেম আর্মা-৩-এর ক্লিপ ওই আক্রমণের দৃশ্য, এই মিথ্যে দাবি করে শেয়ার করা হচ্ছে।
আমরা দেখি ভিডিওটি টুইটারে শেয়ার করা হচ্ছে। সঙ্গে ক্যাপশনে বলা হচ্ছে, "#দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ব্রেকিং নিউজ!! রাশিয়ায় এখনকার অবস্থা! ইউক্রেনের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ কায়েম করেছে। ইজরায়েল/চিন/ট্রাম্প/দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ/ক্রিমিয়া/ইউক্রেন/পুতিন/বাইডেন/ইউএসএসআর/কিভ/ইরান/পোল্যান্ড#দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।"
আর্কাইভ করা আছে এখানে।
আমরা দেখি যুদ্ধের দৃশ্য বলে মালয়ালম সংবাদ চ্যানেল মাথ্রুভূমিও একই ভিডিও শেয়ার করেছে।
নীচের ইউটিউব ভিডিওটির ৩:০৫ সময় থেকে খবরের ওই অংশটি দেখা যাবে।
চ্যানেলটির ফেসবুক পেজেও সেটি শেয়ার করা হয়। দৃশ্যটি ৪:৩৯ সময় থেকে দেখা যাবে।
তথ্য যাচাই
যে টুইটার ভিডিওতে ওই দৃশ্যটি রয়েছে, সেটি সম্পর্কে কয়েকটি মন্তব্যে বলা হয় যে, ভিডিও গেম আর্মা-৩'ই সেটির উৎপত্তি। এবং'এ-১০' নম্বরটি রয়েছে সেটিতে।
ভিডিওটির প্রধান ফ্রেমগুলি নিয়ে আমরা রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। আমরা খোঁজ করি সেই ক্লিপের যাতে 'এ-১০' আর্মা-৩ লেখা আছে।
তার ফলে, আমরা একটি 'ইউটিউব শর্টস ভিডিও' দেখতে পাই। ৬ জানুয়ারি, ২০২২ আপলোড করা হয় সেটি। সেটির শিরোনামে লেখা ছিল, "এ-১০ ওয়ারথগ মিসাইল গান রান - সি র্যাম মিলিটারি সিমুলেশন – আর্মা৩#শর্টস"।
ভিডিওটির বিবরণে বলা হয়, "এ-১০ থান্ডারল্ট-২'র পাইলটরা সেটিকে ওয়ারথগ বা হগ বলে থাকেন। জিএইউ-৮ অ্যাভেঞ্জার হলো একটি ৩০ মিলিমিটারের সাত-নলা গ্যাটলিগ কামান, যেটি এ-১০ ওয়ারথগ/থান্ডারবোল্ট-২ তে লাগানো থাকে"।
ভিডিওটির অত্যন্ত বাস্তব সম্মত গ্রাফিক জনপ্রিয় করে তুলেছে সেটিকে। কারণ, সেটির সাহায্যে সাজানো দৃশ্যকেও বাস্তব বলে মিথ্যে দাবি করা যায়।
তাছাড়া সোশাল মিডিয়া এখন পুরনো ও সম্পর্কহীন ভিডিওয় ছয়লাপ। মিথ্যে দাবি করা হচ্ছে যে, সেগুলি ইউক্রেন-এ চলমান আক্রমণের দৃশ্য। বিগত দু'দিনে বুম এই ধরনের বেশ কয়েকটি দাবি খন্ডন করেছে।
(অতিরিক্ত রিপোর্টিং সুজিথ এ)
আরও পড়ুন: না, ভিডিওটি ১৯৩ বছর বয়সী পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক মানুষের নয়