উত্তরপ্রদেশে দুই মহিলার শ্লীলতাহানির ভিডিও পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা বলে ছড়াল
বুম যাচাই করে দেখে ২০১৭ সালের মে মাসে শ্লীলতাহানির ঘটনাটি ঘটে উত্তরপ্রদেশের রামপুর জেলায়।
২০১৭ সালের একটি ভিডিওতে, এক দল লোককে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) একটি কাঁচা রাস্তায়, দুই মহিলার (two women) শ্লীলতাহানি (Molestation) করতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি আবার নতুন করে এই মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে যে এটি পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা (West Bengal) এবং অভিযুক্তরা রোহিঙ্গা (Rohingyas) শরণার্থী।
বুম দেখে সংশ্লিষ্ট দাবি মিথ্যে। ২০১৭ সালের মে মাসে উত্তরপ্রদেশের রামপুর জেলায় ঘটনাটি ঘটে। এই ভিডিওটি সম্পর্কে আমরা আগেও তথ্যযাচাই করি যখন ২০২০ সালে সেটিকে সাম্প্রতিক ঘটনা বলে ছড়ানো হয়েছিল।
ঘটনাটি ক্যামেরা বন্দি হওয়ার সময়, দুই মহিলাকে তাঁদের উত্যক্তকারীদের হাত থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য কাকুতি মিনতি করতে দেখা যাচ্ছে।
ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গে ঘটেছে— এই মিথ্যে দাবিতে একজন টুইটার ব্যবহারকারী ক্লিপটি শেয়ার করেন।
দাবি করা হয়, “হিন্দু মেয়েদের এই রকম অবস্থা পশ্চিমবঙ্গে, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও আইনশৃঙ্খলা নেই। রোহিঙ্গারা জড়িত। এই ভিডিওটি যত পারেন শেয়ার করুন। যাতে সেটি আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহজির কাছে পৌঁছতে পারে @অমিতশাহ,” তিনি লেখেন।
তথ্য যাচাই
এই একই ভিডিও বুম ২০২০ সালের জুলাই মাসে খণ্ডন করেছিল। সেই সময় ভিডিওটিকে সাম্প্রতিক বলে ছড়ানো হয়।
আমরা ভিডিওটির প্রধান ফ্রেমগুলি দিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ২৯ মে, ২০১৭ প্রকাশিত এনডিটিভি’র একটি প্রতিবেদন দেখতে পাই যার শিরোনামে লেখা ছিল, ‘ইউপি-তে, ১৪ জন লোক, দু’জন মহিলার শ্লীলতাহানি করে। ঘটনাটি ভিডিও করে অনলাইনে পোস্ট করে তারা।’
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, টান্ডা থানার অধীনে একটি গ্রামের কাছে, ১৪টি লোকের একটি দল, দু’জন মহিলার শ্লীলতাহানি করে। অভিযুক্তদের এক জন তার মোবাইল ফোনে ভিডিওটি তোলে। এবং পরে সেটিকে সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়।
ফার্স্ট পোস্টে ২৯ মে তারিখে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, আক্রান্ত মহিলারা বা তাদের পরিবারের কেউ পুলিশের কাছে আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেননি। শেষে পুলিশ নিজে থেকেই এফআইআর নথিভুক্ত করে। প্রধান অভিযুক্ত ও ভিডিও রেকর্ডকারী শাহ নাওয়াজকে শীঘ্রই গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পরেই ভিডিওতে দেখতে পাওয়া ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ১৪ জনকে শানাক্ত করে পুলিশ।
পরে অভিযুক্তদের ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ৩১ মে, তাদের প্রধান বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট প্রমোদ কুমার-এর সামনে তাদের হাজির করার পর, জেলে পাঠানো হয় তাদের।
সেই সময়, মিড ডে গণমাধ্যমও ঘটনাটি সম্পর্কে খবর করে।
নীচে খবরের দৃশ্য এবং ভাইরাল ভিডিওটির দৃশ্য মিলিয়ে দেখা হয়েছে।