কলকাতায় ফিরেছে পচা মুরগির কারবার? ২০১৮ সালের খবর সাম্প্রতিক বলে ছড়াল
বুম যাচাই করে দেখে এবিপি আনন্দ ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে খবরটি সম্প্রচার করেছিল।
কলকাতার (Kolkata) রেস্তেরাঁগুলিতে সম্প্রতি পচা মুরগি সরবরাহ করা হচ্ছে দাবি করে বাংলায় মূলধারার সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দের (ABP Ananda) একটি নিউজ বুলেটিন ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে।
এবিপি আনন্দের প্রকাশিত সেই ভিডিওতে নিউটাউন এলাকা থেকে ফ্রিজারে রাখা পচা মাংস সংগ্রহ করার বিষয়ে রিপোর্ট করা হয়। ওই খবর অনুযায়ী, কলকাতা বিমানবন্দরের আড়াই নম্বর গেটের কাছে দুই ব্যক্তি স্কুটারে করে ব্যাগ-ভর্তি মাংস এক রেস্তেরাঁয় নিয়ে যাওয়ার সময় পচা গন্ধ পান স্থানীয়রা। অতঃপর, সেই স্থানীয় বাসিন্দারা স্কুটার আরোহীদের আটক করে বিমানবন্দর থানায় খবর দিলে ঘটনাটি সামনে আসে।
বুম যাচাই করে দেখে এবিপি আনন্দের প্রকাশিত কলকাতার রেস্তেরাঁগুলিতে পচা মুরগি সরবরাহ করার খবরটি সাম্প্রতিক নয়। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে এই পচা মুরগি সরবরাহ করা নিয়ে তারা খবরটি সম্প্রচার করেছিল।
ভিডিওটি পোস্ট করে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ক্যাপশনে লেখেন, "আবার পচা মুরগি মাংসের কারবার! ভাবছি এবার থেকে নিরামিষই খাবো, এবার বাইরে খেতে হলে ; গদা'দার যামিনী মিষ্টান্ন ভাণ্ডার থেকে ধোসা-দই বড়া, উত্তম খাবো। দরকার হয়, এবার থেকে মুরগি, নব-ভোলা'র কাছ থেকে সামনে কাটিয়ে এনে ঘরে কষে খাবো, সে হালাল হোক বা হারাম!"
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
এই দাবিতেই আরেকজন ফেসবুক ব্যবহারকারীও ভিডিওটি পোস্ট করেছেন।
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম প্রথমে এবিপি আনন্দের প্রকাশিত খবরটির বিষয়ে জানতে পচা মুরগির কারবার সংক্রান্ত কীওয়ার্ড সার্চ করে।
ওই কীওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে এবিপি আনন্দের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৮ সালের ২৭ এপ্রিল প্রকাশিত দুটি নিউজ বুলেটিনে পচা মাংস সরবরাহের বিষয়টি নজরে নিয়ে আসা এক স্থানীয়র বয়ান এবং পুলিশকে সেই মাংস সংগ্রহ করতে দেখা যায়।
তাদের মধ্যে একটি রিপোর্ট অনুযায়ী এয়ারপোর্ট সংলগ্ন এলাকা থেকে পচা মাংস উদ্ধার করার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করার কথা উল্লেখ করা হয়।
একই তারিখে সম্প্রচারিত এবিপি আনন্দের অন্য রিপোর্টটিতে মাংসভর্তি মোট ৯ টি ফ্রিজার পুলিশ আটক করেছে বলে জানানো হয়।
২৭ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে প্রকাশিত জি২৪ ঘন্টার এক রিপোর্ট অনুযায়ী, "খামারের নাম ঢালি চিকেন সেন্টার। ভিতরে ঢুকতেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গেল তদন্তকারী অফিসারদের। খামারের মধ্যে রয়েছে ৭-৭টি ফ্রিজার। আর তার প্রত্যেকটিতে প্রত্যেকটিতে থরে থরে জমিয়ে রাখা মরা মুরগির পচাগলা মাংস। শুধু ফ্রিজার নয়, খামারের যত্রতত্র পড়ে মুরগির দেহ। এইসব মরা মুরগি থেকে মাংস কেটে নিয়ে বছরের পর বছর ওই ফ্রিজারে জমিয়ে রাখা হত বলে অভিযোগ।"
ওই প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, "অভিযোগ, টাটকা মাংসের সঙ্গে এই পচাগলা মাংস মিশিয়ে তা পাঠিয়ে দেওয়া হত কলকাতা, নিউটাউন, বিধাননগরের বিভিন্ন নামীদামী রেস্তরাঁয়। এমনকি সস্তায় হোম ডেলিভারিও করা হত এই পচা মাংস। এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত আটক করা হয়েছে ১০ জনকে। খামারটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।"