
ট্রাম্প দম্পতির দেওয়া উপহার ফেলে দেন ওবামা, দাবি কারসাজি করা ভিডিওর
বুম দেখে ভিডিওটি ২০১৭ সালের। ওবামা উপহারগুলি ফেলে দেননি বরং হোয়াইট হাউসের কর্মীদের হাতে তুলে দেন।

একটি জোড়াতালি দেওয়া ভিডিওয় প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে সে দেশের 'প্রথম মহিলা'র দেওয়া উপহার ছুঁড়ে ফেলে দিতে দেখা যাচ্ছে এবং সেটি একটি সত্য ঘটনা হিসেবে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি ২০১৭ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর কর্মভার গ্রহণ করার অনুষ্ঠানের। এবং ভিডিওটিতে জালিয়াতি করে দেখানো হয়েছে যে, ওবামা পরিবারকে দেওয়া মেলানিয়ার উপহার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ছুঁড়ে ফেলে দেন।
বুম দেখে ভিডিওটি জোড়াতালি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এবং ওবামা আসলে ওই উপহার হোয়াইট হাউসের কর্মীদের হাতে তুলে দিয়ে ট্রাম্প দম্পতির সঙ্গে ছবি তোলার জন্য প্রস্তুত হন।
ভিডিওটিতে দেখানো হয়েছে, ওবামা তৎকালীন প্রথম মহিলা মিশেলের হাত থেকে উপহারের বাক্স নিচ্ছেন। তারপর হোয়াইট হাউসের মধ্যে ঢুকে গেলে তাঁকে আর ভাল করে দেখা যায় না। কিন্তু্ একটা নীল টিফানি বাক্স (টিফানি কম্পানির উপহারের বাক্স) ছুঁড়ে ফেলার দৃশ্য কৃত্রিম ভাবে জুড়ে দেওয়া হয় ভিডিওটির শেষের দিকে। যা দেখলে মনে হয়, ওবামাই ছুঁড়ে ফেলে দেন বাক্সটি।
ভিডিওটি নীচে দেখা যাবে।
সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ভিডিওটি বুমের হেল্পলাইনে (৭৭০০৯০৬১১১)আসে।
প্রযোজ্য কি-ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করলে বুম দেখে ভিডিওটি ফেসবুক ও টুইটারেও ভাইরাল হয়েছে।
ওই পোস্টগুলির ক্যাপশনে বলা হয়, "ওবামা ট্রাম্পের দেওয়া উপহার প্রত্যাখ্যান করেন এবং তাঁদের ভেতরে ঢুকতে না দিয়েই সেটি ফেলে দেন।"
Obama rejected a gift from Trump and throws it away without inviting them in. #BlackLivesMatter#YesIamISI#PakArmyReadyToEnd_Endia pic.twitter.com/DIDV3LJWHy
— political_chaos🤔 (@fuckin_politics) June 8, 2020
আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে হিন্দিতেও ক্যাপশান করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতিগত অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প ওবামার সঙ্গে দেখা করেন।
পোস্টের ক্যাপশনের বাংলা অনুবাদ: "বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং তার স্ত্রী একটি উপহার নিয়ে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন পূর্বতন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তাঁর স্ত্রী মিশেল ওবামার সাথে। মিশেল ট্রাম যুগলকে আপ্যায়ন করেছে, মিশেল ট্রাম্পের কাছ থেকে উপহারটি নিয়ে স্বামী বারাকের কাছে দিয়েছিলেন। কিন্তু বারাক উপহারটি হাতে নিয়েই নিমেষে আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেললেন। হয়ত ট্রাম্প ওবামার কাছে গিয়েছিলেন বর্তমানে মার্কিন মুলুকে চলতে থাকা জাতি বিদ্বেষী হিংসে নিয়ে কথা বলার জন্য।"
(মূল ইংরেজি অনুবাদ: Present US President Trump and his wife visited former president Barack Obama and his wife Michelle Obama with a gift at their residence. Michelle welcomed the Trump duo. Michelle took the gift from Trump and give it to her husband Barack. Barack, in one second, threw the gift in the dustbin. Perhaps Trump went to Obama to absolve himself of the recent racial violence)
— A Asfi (@BeHappy7475) June 9, 2020
এই পোস্টগুলির কয়েকটি ২০১৭ সালের জানুয়ারির। সেগুলিতে ওই ভিডিওটির একটি বড় সংস্করণ রয়েছে। সে বছর ওই মাসেই ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
Out going US Pr. Mr. Obama throws the Gift parcel given by Mrs.Trump immediately & went inside without taking a group photo unbelievable. pic.twitter.com/X7ABgKVZWB
— चंद्रशेखर गलगले (@cgalgale) January 30, 2017
Former US President Mr. Obama throws the Gift parcel given by Mrs.Trump.#யாருக்கிட்ட😹 pic.twitter.com/vPnkF9mF16
— இரணியன் (@IamEebi) January 29, 2017
ভাল করে লক্ষ করলে ভাইরাল ভিডিওটির নীচের ডান কোণে 'সিএনএন'-এর জলছাপ দেখা যায়।
২০ জানুয়ারি ২০১৭ তে ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্টের পদে আসীন হন। বুম সেই দিনের অনুষ্ঠানে সিএনএন-এর তোলা ভিডিও খুঁটিয়ে দেখে। তাতে স্পষ্ট হয় যে, যা দাবি করা হচ্ছে ঘটনাটি ঠিক তার উল্টো। ওবামা মেলানিয়ার দেওয়া উপহার মোটেই ফেলে দেন নি। বরং তিনি তাঁর স্ত্রীর হাত থেকে বাক্সটি নিয়ে হোয়াইট হাউসের মধ্যে হেঁটে যান। এবং দরজার কাছে সেটি কর্মীদের হাতে তুলে দেন। তারপর ফিরে এসে ট্রাম্প দম্পতি ও মিশেলের সঙ্গে ছবি তোলার জন্য প্রস্তুত হন। এর পর তাঁরা একসঙ্গে হোয়াইট হাউসের মধ্যে ঢুকে যান।
বোঝা যাচ্ছে যে, একটি নীল বাক্স ফেলে দেওয়ার দৃশ্যটি আলাদা করে সম্পাদনার মাধ্যমে জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
সিএনএন ছাড়া অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমের তোলা ভিডিওতেও উপহারের বাক্সটি রাখতে ওবামাকে ভেতরে যেতে দেখা যায়।
Updated On: 2020-06-15T20:36:07+05:30
Claim Review : ভিডিওতে দেখায় ওবামা মেলানিয়া ট্রাম্পের উপহার ছুঁড়ে ফেলছেন
Claimed By : Social Media Users
Fact Check : False
Next Story