মিথ্যা: দিল্লির দাঙ্গায় পুলিশ মুসলিমদের বাড়িতে রাসায়নিক গ্যাস প্রয়োগ করেছে
এই অস্পষ্ট ভিডিওটি ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর থেকে ভাইরাল হয়েছে, বর্তমান দাঙ্গার সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।
সাম্প্রতিক দাঙ্গার জেরে দিল্লির একটি ভিডিও ফুটেজ সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যেখানে একটি মুসলিম পরিবার অভিযোগ জানাচ্ছে যে, পুলিশ তাদের ঘরের ভিতরে রাসায়নিক গ্যাস ঢুকিয়ে দিয়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে যে, দাঙ্গার সময় দিল্লির জাফরাবাদে পুলিশ মুসলিমদের বাড়ির ভিতরে রাসায়নিক গ্যাস ঢুকিয়েছে। ক্যাপশনের দাবিটি ভুয়ো, কেননা এই ভিডিও ফুটেজটি ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে অনলাইনে রয়েছে, অথচ দিল্লির দাঙ্গা ঘটেছে ২০২০ সালে ২৩ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি।
৩৯ সেকেন্ডের এই ভিডিও ক্লিপটি সমাজবাদী পার্টির দীনেশ মিশ্র ২৫ ফেব্রুয়ারি টুইট করে ক্যাপশনে লেখেন, "এটি একটি হৃদয়বিদারক দৃশ্য। দিল্লির পুলিশ জাফরাবাদে মুসলিম পরিবারগুলির বাড়িতে ঢুকে রাসায়নিক গ্যাস পাম্প করছে, যেখানে ছোট-ছোট বাচ্চারাও রয়েছে। একটু তো লজ্জা-শরম দেখাও, অন্তত ছোট বাচ্চাগুলোর অবস্থা বিবেচনা করে!"
(হিন্দিতে লেখা মূল পোস্ট: "दिल दहला देने वाली घटना। #दिल्ली के जफराबाद का वीडियो है, दिल्ली पुलिस मुसलमानों के घरों में केमिकल गैस छोड़ रही है जिससे छोटे छोटे मासूम बच्चों की हालत बेहद खराब है शर्म करो कम से कम इन बच्चों का तो ख्याल करो।")
ফেসবুকেও এই একই ভিডিও অবিকল একই ক্যাপশন সহ ভাইরাল হয়েছে।
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটিতে সিটিভি নিউজ ইন্ডিয়া-র একটি প্রতীক দেখতে পায়, যেটি অনুসরণ করে আমরা ইউটিউবের একটি অজানা চ্যানেলে পৌঁছই। সেখানে আপলোড হওয়া ভিডিওগুলির তালিকায় অনুসন্ধান করে মূল ভিডিওটির খোঁজ মিলল, যেটি ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর আপলোড হয়েছে, ১৫ ডিসেম্বর সংঘটিত ব্যাপক হিংসা এবং পুলিশি দমননীতির ঠিক পরেই। (বর্তমানে ইউটিউবের লিঙ্কটি সংস্থাটির নিয়মাবলী লঙ্ঘন করায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বুমের ইংরেজি প্রতিবেদন দেখুন এখানে।)
ফেসবুক এবং টুইটারে ভিডিওটির ক্যাপশন খতিয়ে আমরা দেখতে পাই, একই ক্যাপশন ২০১৯-এর ১৭ ডিসেম্বর থেকেই দু জায়গাতেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে, এমনকী সিটিভি নিউজ ইন্ডিয়ার ফেসবুক পেজেও ওই ক্যাপশনই ব্যবহার করা হয়েছে।
CAA विरोध - दिल्ली के जफराबाद का वीडियो है,दिल्ली पुलिस मुसलमानों के घरों में केमिकल गैस छोड़ रही है,
— Imran Cheeku (@ImranCheeku14) December 17, 2019
जिससे छोटे छोटे मासूम बच्चों की हालत बेहद खराब हो रही है,😢
अल्लाह रहम करें आमीन, pic.twitter.com/s9zhTiqWRP
বুম এই ভিডিও ফুটেজটির প্রেক্ষাপট আলাদাভাবে নিজেরা যাচাই করতে পারেনি। আমরা অনেক ধরনের খোঁজখবর চালিয়ে বাড়ির ভিতরে রাসায়নিক গ্যাস ছাড়ার ঘটনার নিদর্শন জোগাড় করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু তেমন কোনও সংযোগ বা লিংক খুঁজে পাইনি।
তবে প্রায় দু মাস ধরে সোশাল মিডিয়ায় ঘুরতে থাকা এই ভিডিওটির সঙ্গে দিল্লির সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামার কোনও সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা যায়নি, যে হাঙ্গামায় ইতিমধ্যেই অন্তত ৪২ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: ঔরঙ্গাবাদে রাস্তার বচসাকে দিল্লিতে মুসলিমদের বাসে আক্রমণ বলা হল