
মিথ্যা: সিসিটিভি দৃশ্যেও রয়েছে গুলিতে আহত জামিয়া ছাত্রটি
বুম শাদাব ফারুকের সঙ্গে কথা বলে জেনেছে ভাইরাল হওয়া সিসিটিভি ফুটেজের ছাত্রটি তিনি নন।

জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শাদাব ফারুক, যিনি ৩০ জানুয়ারি এক বন্দুকবাজের গুলিতে আহত হয়েছিলেন, তিনিই তার আগে ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯-এ জামিয়া মিলিয়ায় পুলিশের লাঠি-চার্জেও আহত হন বলে যে সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল করা হয়েছে, সেটি ভুয়ো। বুম দেখেছে, দুটি ছবির দুই ব্যক্তি আলাদা।
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২0'র একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়, যেখানে ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯-এ দিল্লি পুলিশ জামিয়ার লাইব্রেরিতে ঢুকে লাঠি-চার্জ করছে দেখানো হয়। তার পরেই দ্বিতীয় একটি ভিডিও আত্মপ্রকাশ করে, যেখানে দেখা যাচ্ছে কয়েকজন ছাত্র একটা ঘরের ভিতর জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে কয়েকটি টেবিলকে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যারিকেড বানিয়ে।
কয়েকজন টুইটার ব্যবহারকারী এই দ্বিতীয় ভিডিওর ছাত্রটিকে শাদাব ফারুক বলে শনাক্ত করেন, যিনি ২০২০-র ৩০ জানুয়ারি জামিয়ার সামনেই এক বন্দুকবাজের গুলিতে আহত হন।
দুটি ছবিরই ছাত্রটির লম্বা চুল রয়েছে, আর তার ভিত্তিতে ছবিদুটি পাশাপাশি সাজিয়ে দাবি করা হচ্ছে—উভয়েই অভিন্ন ব্যক্তি শাদাব ফারুক।These two Guys look same no?#JamiaViolence #JamiaMilia pic.twitter.com/wdaKVIFDKY
— Vikrant ~ विक्रांत (@vikrantkumar) February 16, 2020
টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
ফ্যাক্ট হান্ট নামক ওয়েবসাইটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা শশাঙ্ক সিং এই দুটি ছবি পাশাপাশি সাজিয়ে এই ভুয়ো ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
Left- The Jamia student caught with stone in CCTV footage
— Shash (@pokershash) February 16, 2020
Right- The jamia student shot with air gun near Jamia.
Same guy?
H/T @AKhatri25 pic.twitter.com/ERplHhuso3
টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
Same guy was also the one whose hand was injured in Jamia shooting by "Rambhakt" Gopal ! This chap's name is Shadab nd he is a student of Jamia,nd is also part of their theatre group ! What a coincidence,isn't it? pic.twitter.com/Q4M9QUvDsb
— Lotus (@HittsVora) February 16, 2020
টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
এবিপি নিউজ-এর সাংবাদিক বিকাশ ভাদাউরিয়া পর্যন্ত এই ভাইরাল ভিডিও শেয়ার করে তার ভুয়ো ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
जामिया की लाइब्रेरी में पत्थर हाथ में लिए जो दंगाई नज़र आ रहा है, ये वही लड़का है जिसके हाथ में नाबालिग लड़के ने गोली मारी थी #Jamia की हिंसा में ये छात्र शामिल था @Jamia_JCC का अधूरा वीडियो अब दंगाईयो की आफत बन गया है, पूरे सच के कई वीडियो सामने आ गए हैं
— Vikas Bhadauria (ABP News) (@vikasbhaABP) February 17, 2020
वाया @varunjainNEWS https://t.co/qPdtcmFoj5
টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
৩০ জানুয়ারি, ২০২০ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদরত সমবেত ছাত্রদের লক্ষ্য করে এক বন্দুকবাজ পুলিশের সামনেই গুলি চালালে শাদাব ফারুকের বাঁ হাতে গুলি লাগে।
আরও পড়ুন: না, জামিয়ায় গুলিবিদ্ধ ছাত্রের ক্ষত ভুয়ো নয়
তথ্য যাচাই
বুম দেখেছে, জামিয়া মিলিয়ার ছাত্রদের যে দুটি ছবি পাশাপাশি রেখে তুলনা করা হচ্ছে, তারা একই ছাত্র নন, দুজন স্বতন্ত্র ব্যক্তি। বস্তুত আমরা দেখেছি, লাইব্রেরির ভিতরে তোলা সিসিটিভি ফুটেজের ছাত্রটি শাদাব ফারুক নন। এ ব্যাপারে আমরা সরাসরি শাদাবের সঙ্গেই কথা বলি। তিনি জানান, তিনি ওই দিন ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিতই ছিলেন না।
"আমি সেদিন সন্ধে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত নয়াদিল্লির ইন্ডিয়া গেটে মেজর ধ্যানচাঁদ ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে 'জসন-এ-রেক্তা' নামে উর্দু কবিতা পাঠের একটি আসরে গিয়েছিলাম।"
সে দিনের অর্থাৎ ১৫ ডিসেম্বরের সেই আসরে তাঁর হাজির থাকার ছবিও শাদাব বুমকে দিয়েছেন এবং আমরা সিসিটিভি ফুটেজের ছবির সঙ্গে তাঁর মুখ মিলিয়ে দেখেছি, তিনি ওই ফুটেজে দেখানো ছাত্র নন।
২০১৯ সালে জসন-এ-রেক্তা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
১৫ ডিসম্বর বিকেল ৪টে ৪২ মিনিটেই যে ছবিটা তোলা হয়েছিল, তার প্রমাণও শাদাব আমাদের দেখিয়েছেন।
বুম শাদাবের এক বন্ধুর জবাবি টুইটও দেখেছে, যেখানে তিনি ভাইরাল হওয়া ভুয়ো টুইটটি খণ্ডন করেন।
Idiot! They are not at all same!
— Monazza Aarfa (@aarfa_monazza) February 16, 2020
I know Shadab and he was there in Jashne- Rekhta with me and my other classmates on 15th December.
আমরা সিসিটিভির ফুটেজের সঙ্গে শাদাবের ছবির তুলনা করেও দেখেছি, ফুটেজের ছাত্রটির দাড়ির ধাঁচ শাদাবের থেকে আলাদা, আর তার চুলের সিঁথিও মাঝখানে, যেখানে শাদাবের চুলের সিঁথি এক পাশে কাটা। তা ছাড়া, শাদাবের চশমার কাচ গোলাকার, আর ভাইরাল ফুটেজের ছাত্রটির চশমার কাচ চৌকো। অন্য ছাত্রটির পরিচয়ও বুম জানতে পেরেছে—তাঁর নাম মহম্মদ আশরফ ভাট।
Claim : জামিয়ায় গুলিতে আহত ছাত্রকে সিসিটিভিতে দেখা গেছে
Claimed By : Social Media
Fact Check : False
Next Story