বাংলাদেশে বাঁশ-কলাগাছ দিয়ে রাস্তা তৈরির পুরনো ছবিকে পশ্চিমবঙ্গের বলা হল
বুম যাচাই করে দেখে ২০১৯ সালের জুন মাসে ঘটনাটি ঘটে বাংলাদেশের ফেনীতে। সেন্টারিংয়ের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল বাঁশ ও কলাগাছ।
সোশাল মিডিয়ায় বাংলাদেশে কালভার্ট নির্মানে বাঁশ-কলাগাছ দিয়ে সেন্টারিং করার ছবিকে পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা বলে দাবি করা হচ্ছে। ফেসবুকে এক সঙ্গে শেয়ার করা দুটি ছবির একটিতে দেখা যায় সংকীর্ণ কালভার্টের নীচে বাঁশের মাচা করে তার উপরে কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া হয়েছে। আর অন্য ছবিটিতে দেখা যায় কংক্রিটের ঢালাইয়ের কিনারা বারাবর দেওয়া হয়েছে কলাগাছের টুকরো।
বুম দেখে বাংলাদেশের ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী গ্রামে ড. রফিকের বাড়ির রাস্তা নির্মানে অস্থায়ী সেন্টারিং করতে ব্যবহার করা হয় বাঁশ ও কলাগাছ।
ফেসবুকে ছবিদুটি শেয়ার করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ''কথাটা মনে পড়ে গেল বদলা নয় বদল চাই. এই তার নমুনা এই সবের বদল হয়েছে. কেউ কি বলতে পারেন। সবুজ রঙের রডটি কোন কোম্পানির।''
ফেসবুক পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
উল্লেখ্য 'বদলা নয় বদল চাই' তৃণমূল কংগ্রেসের শ্লোগান। ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতাসীন বামফ্রন্টের সরকারের বিরুদ্ধে জোট বাঁধতে ওই শ্লোগান তোলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর দু'বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্যমন্ত্রীত্বে রাজ্য সরকারের দায়িত্বভার পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: ভাইরাল পোস্টের সাইকেল কন্যা জ্যোতি পাসওয়ানের ধর্ষণ ও খুনের খবরটি ভুয়ো
তথ্য যাচাই
বুম পর্যায়ক্রমে রিভার্স ইমেজ সার্চ ও কিওয়ার্ড সার্চ করে জানতে পারে ছবিগুলি ২০১৯ সালের জুন মাসের। বাংলাদেশের ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী গ্রামে ড. রফিকের বাড়ির রাস্তা নির্মাণের সময় ব্যবহার করা হয় বাঁশ ও কলাগাছ।
২০১৯ সালের জুন ও জুলাই মাসে ছবি দুটি ফেসবুকে ভাইরাল। পোস্টদুটি আর্কাইভ করা আছে এখানে ও এখানে।
বাংলাদেশের দৈনিক সংবাদপত্র দৈনিক ইত্তেকাফ সহ আরও অন্যান্য গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
ঢাকা ট্রিবিউনে ৩ জুলাই ২০১৯ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন সুলতানা পরিদর্শন করে বলেন এটি কোনও সরকারী প্রকল্পের কাজ নয়।
নাসরিন সুলতানা ওই গণমাধ্যমকে আরও বলেন, ''এক সমাজসেবী ব্যক্তির উদ্যোগে এই 'ইউ ড্রেনটি' নির্মাণ করা হয়েছে। ড্রেনটি ভাঙা দেখে ওই ব্যক্তি নিজ অর্থায়নে রড, সিমেন্ট, কংক্রিট ও বালু দিয়ে এটি নির্মাণ করেছেন। সব খরচও তিনিই দিয়েছেন। আর এসব ছোটখাটো কাজের জন্য সাধারণত এধরনের সেন্টারিং ব্যবহার করা হয়। ড্রেন জমাট বেধে গেলে নিচে বাঁশের সেন্টারিং খুলে ফেলা হবে। অহেতুক কিছু অসাধু ব্যক্তি এই ইউ ড্রেনটি নিয়ে না বুঝে, না দেখেই ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।''
বিষয়টি নিয়ে যুগান্তরের প্রতিবেদন পড়া যাবে এখানে।
আরও পড়ুন: আমপানে রাস্তার অ্যাসফল্ট আস্তরণ উঠে গেছে? ছড়ালো মালয়োশিয়ার পুরনো ছবি