চোপড়া কাণ্ড: বিভ্রান্তিকর গ্রাফিকে ধর্ষণে দায়ীদের লাগানো হল ধর্মীয় রঙ
বুম দেখে গ্রাফিকটি বিভ্রান্তিকর। সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্যের কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীদের ধর্মীয় পরিচয় খোঁজা হচ্ছে।
সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা গ্রাফিকে বিভিন্ন রাজ্যে ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীদের ছবি ও ধর্ষণে অভিযুক্তদের ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে সাম্প্রদায়িক পোস্ট শেয়ার করা হচ্ছে। এই গ্রাফিকে পশ্চিমবঙ্গ সহ দিল্লি, আলীগড়, কৌশম্বী, হায়দরাবাদ এই পাঁচ জায়গার বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে বিভ্রান্তিকরভাবে যুক্ত করা হচ্ছে।
ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, "সেকুলার গণ অপরাধীদের কোন জাত বা ধর্ম নেই সবাই শান্তি দূত, শান্তির ধর্ম পালন করছে।" আরেকটি ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "শুধু নাম দেখে নিন, ধর্ম খুঁজবেন না, নইলে আপনি সাম্প্রদায়িক হয়ে যাবেন।"
ভাইরাল হওয়া গ্রাফিকটি পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার চাপড়ার সোনাপুরে এক মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে শেয়ার করা হচ্ছে। রবিবার ১৯ জুলাই সকালে রাস্তার ধার থেকে ওই তরুনীর দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করে চিকিৎসকেরা। পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয় স্থানীয় এলাকার একটি ছেলে তাদের মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করেছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এলাকাবাসীর দাবি ছেলেটি মেয়েটির পূর্বপরিচিত ছিল। প্রাথমিক ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গেছে ধর্ষণ নয় বিষপানে মৃত্যু হয়েছে ওই ছাত্রীর।
মঙ্গলবার অভিযুক্ত ফিরোজ আলমের লাশ উদ্ধার হয়। বুধবার পাওয়া ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায় ফিরোজ আলমেরও মৃত্যুর কারণ বিষক্রিয়া।
তথ্য যাচাই
আগেই জানানো হয়েছে চোপড়া উত্তর দিনাজপুরের তরুণীর মত্যু হয়েছে বিষক্রিয়ায়। মৃতার শরীরে ধর্ষণের কোনও প্রমান মেলেনি।
এই গ্রফিকে যে ছবি ব্যবহার করা হয়েছে বাংলার ঘটনা বলে, সেই ছবিটিই বঙ্গ বিজেপির সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ করা একটি ভিডিতে দেখানো হয়। এটি বাংলা নয় বিহারের একটি ঘটনার। ছবিটি আগে "সাইকেল কন্যা"র ছবি বলে ভুয়ো দাবি সহ ভাইরাল হয়েছিল। বিস্তারিত পড়ুন এখানে।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) তথ্য অনুযায়ী ভারতে ২০১৮ সালে ৩৩,৩৫৬টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। যা আগের বছরের চেয়ে ৭৯৭টি বেশি। প্রতি ১৫ মিনিটে একজন নারী ধর্ষিত হয় ভারতে। উল্লেখ্য ওই তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ ও ২০১৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ ও দিল্লিতে অ্যাসিড হামলার অপরাধের ঘটনায় রয়েছে সামনের সারিতে।
সম্পাদকীয় নোট: চোপড়ার সোনারপুরের ঘটনায় উদ্ধার হওয়া ফিরোজ আলির লাশের পরিচয় রাজ্য পুলিশের তরফে গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়নি। ফিরোজ আলির ময়নাতদন্তের রিপোর্টটি প্রতিবেদনে পরে সংযোজন করা হয়েছে।