বাংলাদেশের ভিডিও শেয়ার করে বলা হল পশ্চিমবঙ্গে মুসলিমদের দুর্দশা
ভিডিও ক্লিপটিতে বাংলাদেশের কক্সবাজারের একটি শরণার্থী শিবিরে আগুন লাগার পর রোহিঙ্গা মুসলিমদের দুরবস্থা দেখানো হয়েছে।
দুর্দশা কবলিত একদল মহিলা ও শিশুর ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল করে দাবি করা হচ্ছে, এটি পশ্চিমবঙ্গের তেলিনিপাড়ায় সাম্প্রতিক হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার পরবর্তী সময়ে সেখানকার মুসলিমদের দুরবস্থার ছবি।
দাবিটি ভুয়ো, কেননা ফুটেজটি সাম্প্রতিক হলেও এটি বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের শরণার্থী শিবিরে বিধবংসী অগ্নিকাণ্ডের পরবর্তী অবস্থার ছবি।
১ মিনিট ২০ সেকেন্ডের এই ক্লিপটির ক্যাপশন লেখা হয়েছে: "দুঃখজনক ঘটনা। কিছু সমাজবিরোধী ৩০০টি মুসলিম পরিবারের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গের তেলেনিপাড়া জেলায় মঙ্গলবার সকাল ৭টার সময় ঘটে। ভারত এখন হিন্দু-মুসলিম বিদ্বেষের আগুনে জ্বলছে। আর কত কাল এই অবস্থা চলবে !"
(মূল হিন্দি ক্যাপশন: दुःखद घटना : असामाजिक तत्वों ने पश्चिम बंगाल के 300 मुस्लिम घरों को जलाकर राख कर दिया, यह घटना सुबह 7 बजे मंगलवार को पश्चिम बंगाल के तेलनीपारा जिले में हुई, हिन्दू मुस्लिम नफ़रत की वजह से जलता हुआ भारत कब तक ऐसा होता रहेगा)
ফেসবুকে অন্তত ১০ লক্ষ ব্যক্তি ভিডিওটি দেখেছেন এবং টুইটারেও এটি একই ভুয়ো বিবরণী সহ শেয়ার হয়ে চলেছে:।
दुःखद घटना : असामाजिक तत्वों ने पश्चिम बंगाल के 300 मुस्लिम घरों को जलाकर राख कर दिया,
— Rajesh Ranjan (@RajeshR71176567) May 14, 2020
यह घटना सुबह 7 बजे मंगलवार को पश्चिम बंगाल के तेलनीपारा जिले में हुई,
हिन्दू मुस्लिम नफ़रत की वजह से जलता हुआ भारत कब तक ऐसा होता रहेगा| pic.twitter.com/32L73m9Q5l
আরও পড়ুন: মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের ছবিকে ভারতে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোগান্তি বলা হল
তথ্য যাচাই
বুম লক্ষ্য করেছে, প্রতিটি পোস্টেই ভিডিওটির ডান দিকে ওপরে একটি লোগো রয়েছে।
বুম ওই প্রতীকটি আলাদা করে ছেঁটে নিয়ে গুগল-এ খোঁজ চালিয়ে দেখেছে, এটি রোহিঙ্গা ন্যাশনাল নিউজ(আরএনএন) এর প্রতীক, যেটি মায়ানমারের আরাকানের রোহিঙ্গাদের একটি নিরপেক্ষ অলাভজনক সংবাদসংস্থা হিসাবে নিজের ফেসবুক পেজে বর্ণনা করেছে।
এই ফেসবুক পেজেই আমরা ওই ভিডিওটির একটি দীর্ঘতর সংস্করণ আপলোড হয়েছে দেখতে পাই ২০২০ সালের ১২ মে। সেই ভিডিওটির ক্যাপশন ছিল "আজ সকালে কুটুপালঙ উদ্বাস্তু শিবিরে একটি বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড ঘটে গেছে। তাতে ৩১২টি আশ্রয়-ছাউনি পুরোপুরি ভস্মীভূত, আর ৩৬২টি ছাউনি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, যার ভিতর দোকানও রয়েছে। পুড়ে যাওয়া অন্তত ১০ জনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। যে সব রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবী উদ্ধার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, ইআরসি তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছে। ইআরসি ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছনর চেষ্টা করছে। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং বাংলাদেশের ডবলিউএফপি-কে আবেদন জানাচ্ছে, দ্রুত দুর্গতদের ত্রাণ দিতে।"
বাংলাদেশের কক্স বাজারে কুটুপালঙ উদ্বাস্তু শিবিরে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার খোঁজ করতে গিয়ে আমরা বেশ কয়েকটি সংবাদ-প্রতিবেদনের হদিস পাই দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট, নিউজ-১৮ এর করা, যাতে ১২ মে তারিখে কুটুপালঙ-এর লাম্বাসিয়া উদ্বাস্তু শিবিরে ৪০০ এর উপর বস্তি ও দোকানপাট ভস্মীভূত হওয়ার উল্লেখ রয়েছে।
ভিডিওটি সাম্প্রতিক হলেও তা কোনও ভাবেই পশ্চিমবঙ্গের তেলিনিপাড়ায় সপ্তাহ দুই আগে সংঘটিত সাম্প্রতিক দাঙ্গারর ছবি নয়।