অ্যাভিয়ান সারকোমা সারাতে অমিত শাহ নিউইয়র্কে, ভাইরাল হল মিথ্যে বার্তা
বুম দেখে অমিত শাহ দিল্লিতেই আছেন। অ্যাভিয়ান সারকোমা ক্যান্সার হয় মুরগিদের, মানুষের নয়।
একটি ভাইরাল বার্তায় দাবি করা হয়েছে যে, অ্যাভিয়ান সারকোমা নামে এক ধরনের ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিউ ইয়র্ক নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বুম দেখে দুটি দাবিই মিথ্যে। এক, ৩০ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য শাহ ভারতেই আছেন। দুই, অ্যাভিয়ান সারকোমা যে মানুষেরও হতে পারে তার কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
ভাইরাল মেসেজ বা বার্তাটিতে বলা হয়েছে: "অমিত শাহ অ্যাভিয়ান সারকোমায় আক্রান্ত, এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স করে তাঁকে নিউ ইয়র্ক উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে...অবস্থা আশঙ্কাজনক।" যাচাই করে দেখার অনুরোধ সমেত বার্তাটি বুমের হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইনেও আসে।
ওই একই মেসেজ ফেসবুক ও টুইটারে শেয়ার করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
কিওয়ার্ড ও তথ্যভিত্তিক সার্চ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তর থেকে করা একটি টুইট নজরে আসে। তাতে গুজরাটে তাঁর সংসদীয় কেন্দ্র গাঁধীনগরের ২০০ কুমোরের সঙ্গে তাঁর ভিডিও কনফারেন্সের দিন ক্ষণ জানিয়ে দেওয়া হয়।
৩০ সেপ্টেম্বর শাহ ওই অনুষ্ঠানের ছবি তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করেন। তাতে ওই গোষ্ঠী সদস্যদের সঙ্গে তাঁকে আলোচনা করতে দেখা যাচ্ছে। তাঁর ফেসবুক পোস্টে শাহ বলেন, কুমোর শক্তিকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে মোদী সরকার কুমোরদের ইউনিয়নকে সাহায্য করে চলেছে। সেটি খাদি ও গ্রামীন শিল্প কমিশনের একটি প্রকল্প।
কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠার পর দু'বার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কারণে শাহের স্বাস্থ্যের ওপর এখন অনেকেরই নজর রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২ অগস্ট গুরুগ্রামের মেদান্ত হাসপাতালে ভর্তি হন। কোভিড-১৯ নেগেটিভ হওয়ার পরও অস্বস্তি বোধ করায় ১৭ অগস্ট তাঁকে এআইআইএমএম-এ নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁকে ৩১ অগস্ট ছেড়ে দেওয়া হলেও, হাসপাতালের বুলেটিন অনুযায়ী, স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য তাঁকে আবার ১৩ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অ্যাভিয়ান সারকোমা কি মানুষেরও হয়?
দ্বিতীয় দাবিটি সম্পর্কে অনুসন্ধান করে বুম দেখে, অ্যাভিয়ান সারকোমা হল এক ধরনের ক্যানসার যা মুরগিদের হয়। অ্যাভিয়ান সারকোমা ভাইরাস এই অসুখের কারণ। ভাইরাসটি যে মুরগি থেকে মানুষের মধ্যেও ছড়াতে পারে, তার কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
'কানেকটিভ' বা সংযুক্তিকরণের টিসু খুব দ্রুত বাড়তে বাড়তে টিউমার সৃষ্টি করে। দেখা গেছে ইঁদুর, বড় ইঁদুর, গিনপিগ, বেড়াল, কুকুর ও বানরের শরীরের মধ্যে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে এই ভাইরাস প্রবেশ করিয়ে দিলে, তাদের মস্তিষ্কে টিউমার দেখা দিতে পারে।
আরও পড়ুন: না, এটি হাথরসে প্রয়াত নির্যাতিতার ছবি নয়