ইরাকের বাজারে নারী কেনাবেচার দাবিতে ফের জিইয়ে উঠল পথনাটিকার ভিডিও
বুম যাচাই করে দেখে ভাইরাল ভিডিওটি আসল কোনও ঘটনা দেখায় না। তাতে ইরাকে হওয়া এক পথনাটিকার দৃশ্য দেখা যায়।

Claim
ইরাকের এক পথনাটিকার পুরনো ভিডিও সম্প্রতি ফের পোস্ট করে দাবি করা হয়, তাতে ইরাকের বাজারে প্রকাশ্যে হওয়া নারীদের বেচাকেনার দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে প্রথমে একজন ব্যক্তিকে কয়েকজন বোরখা পরা মহিলার দিকে এগিয়ে এসে তাদের নিকাব বা মুখের ঢাকনা সরিয়ে ভালো করে পরখ করতে দেখা যায়। ভিডিওটি পোস্ট করে তার ক্যাপশন হিসেবে লেখা হয়, "ইরাকের বাজারে এভাবেই নারীদের বেচাকেনা হয়েছে দাসী হিসেবে।" এমনই এক পোস্ট দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
FactCheck
এর আগেও অনুরূপ দাবিতে ২০২৩ সালে ভিডিওটি ভাইরাল হলে তার তথ্য যাচাই করে বুম। আমরা দেখি, ভিডিওটি ইরাকের এরবিল-এ ২০২৩ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত একটি পথ নাটিকার দৃশ্য, যার নাম—“এজিদখান দেবদূতদের অশ্রুত কান্না”। গুগলে ভিডিওটির দৃশ্যকে রিভার্স সার্চ করে আমরা টিকটকে জায়ার-এল-বারজানির পোস্ট করা এক ভিডিও দেখতে পাই। ৭ মে আপলোড হওয়া ওই পোস্টটির ক্যাপশন ছিল—এরিয়ান রফিক আর্ট পারফরমেন্স দ্বারা প্রযোজিত “এজিদ খান দেবদূতদের অশ্রুত কান্না, ২০২৩”। ভিডিওটির প্রথম ২২ সেকেন্ড ভাইরাল এই ভিডিওর সঙ্গে হুবহু মিলে যায়।
এই ক্যাপশনের সূত্র ধরেই আমরা পথ-নাটিকাটির অনুষ্ঠান সম্পর্কে আরও বিশদ জানতে সচেষ্ট হই এবং নাটকের পরিচালক আরিয়ান রফিক-এর ফেসবুক প্রোফাইলও ঘাঁটাঘাঁটি করি, যিনি ৮ মার্চ নাটকটি দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। পোস্টটিতে নাটক কোথায় (এরবিল সিটাডেল) অনুষ্ঠিত হবে এবং কখন (৮ মার্চ, বিকেল ৩টেয়), সে সবেরও উল্লেখ ছিল।
ইরাকি ও ইরানি মহিলাদের উপর সংঘটিত নির্যাতন ও অনাচারের প্রতিবাদে এরিয়ান রফিক নিয়মিত শিল্পকলা ও অনুষ্ঠান করেছেন। আমরা এরবিল সিটাডেল নামের স্থানটিও শনাক্ত করতে সক্ষম হই যা ইরাকের কুর্দিস্তানে অবস্থিত।
বুম ফেসবুক মারফত এরিয়ান রফিকের সাথে যোগাযোগ করলেন তিনি জানান, ভিডিওটি তার পরিচালিত নাটকেরই। এরিয়ান নিজে ইরাকের কুর্দ জনজাতির মানুষ। তাঁর বক্তব্য, “ইয়াজিদি কন্যাদের বাজারে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল এবং আইসিসের পুরুষ যোদ্ধারা নিকাব বা পর্দা তুলে-তুলে দেখে নিত মেয়েগুলো সুন্দরী কিনা।”