জেএনইউ-র এম-ফিল ছাত্রের ছবি শেয়ার করে বলা হচ্ছে, ইনি কেরালার এক ৪৭ বছর বয়স্ক মুসলমান
বুম পঙ্কজ কুমার মিশ্রের সঙ্গে কথা বলেছে, যাঁকে ৩০ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ৪৭ বছর বয়স্ক মইনুদ্দিন বলে শনাক্ত করা হচ্ছে
জেএনইউ-র আন্দোলনরত ছাত্রদের নিয়ে জি-নিউজ-এর একটি বুলেটিন থেকে একটি স্ক্রিনগ্র্যাব তুলে নিয়ে ভাইরাল করা হয়েছে, যাতে দাবি করা হচ্ছে, প্রতিবাদী এই ছাত্রদের একজন ১৯৮৯ সাল থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে ।
গোল করে কালো কালিতে দাগানো এই ছবির ব্যক্তিটিকে কেরালার ৪৭ বছর বয়স্ক মইনুদ্দিন খান বলে শনাক্ত করা হয়েছে, যিনি নাকি ৩০ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকেছেন এবং এখনও পড়ছেন!
এই স্ক্রিনগ্র্যাবের ভিত্তিতে ছড়ানো অনেক পোস্টে ক্যাপশন দেওয়া হয়েছেঃ “ইনি কেরালার মইনুদ্দিন, যিনি ১৯৮৯ সালে জেএনইউতে ভর্তি হয়েছিলেন । যদি তিনি বিএ, এম-এ, এম-ফিল এবং পিএইচ-ডি পড়া শেষ করে ফেলতেন, তাহলেও ২০০১ সালেই তাঁর জেএনইউ ছেড়ে চলে যাওয়ার এবং এতদিনে চাকরি-বাকরি করার কথা ।”
যাঁকে ৪৭ বছরের মইনুদ্দিন বলে শনাক্ত করা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নথি অনুযায়ী তিনি ৩০ বছর বয়স্ক এম-ফিল পড়ুয়া পঙ্কজ কুমার মিশ্র ।
বুম পঙ্কজের পরিচিতির প্রমাণ খতিয়ে দেখেছে, যাতে স্পষ্ট লেখা, তাঁর জন্মই ১৯৮৯ সালের ৮ মার্চ, যে বছর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন বলে ভুয়ো দাবি তোলা হয়েছে ।
এ ধরনের বহু ছবি সোশাল মিডিয়ায় ঘুরছে এটা প্রমাণ করতে যে, যারা ফি-বৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে, তাদের অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকার মেয়াদ বহু দিন আগেই পেরিয়ে এসেছে ।
আরও পড়ুনঃ ভুয়ো ফেসবুক পোস্টে ২৩ বছরের ছাত্রীকে ৪৩ বছরের বলে চালানো হচ্ছে
আরও পড়ুনঃ জেএনইউ-এ প্রতিবাদ: সোশাল মিডিয়ায় প্রতিবাদীদের নিয়ে ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি
তথ্য যাচাই
বুম দেখেছে, স্ক্রিনগ্র্যাবটি জি-নিউজ-এর একটি বুলেটিন থেকে নেওয়া, যেটি সঞ্চালক সুধীর চৌধুরীর অনুষ্ঠান ডিএনএ-তে সম্প্রচারিত হয়েছে । এই মিডিয়া সংস্থার বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া অন্য এক প্রতিবাদী ছাত্রীর স্ক্রিনগ্র্যাব নিয়েও একই ভাবে ভুয়ো খবর ছড়ানো হয়েছে ।
বুম পঙ্কজকুমার মিশ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানানঃ “জি-নিউজ-এর পাঁচ দিন আগে তোলা একটি ভিডিও থেকে ছবিটি নেওয়া । এটি যখন তোলা হয়, তখন আমরা জি-মিডিয়ার বিরুদ্ধেই স্লোগান দিচ্ছিলাম । সুধীর চৌধুরীর অনুষ্ঠানেও এটাই সম্প্রচার হয়েছে।”
বুমকে শ্রী মিশ্র জানান, তাঁর বয়স ৩০ বছর এবং প্রমাণ হিসাবে সরকারি পরিচয়পত্রও আমাদের দেখান । বুম-এর কাছে সেই পরিচয়পত্রের প্রতিলিপিও আছে ।
এলাহাবাদের ছেলে পঙ্কজ এ বছরের শুরুতে সোশাল মেডিসিন এবং কমিউনিটি হেল্থ নিয়ে এম-ফিল কোর্স করতে জেএনইউ-তে ভর্তি হয়েছেন । এর আগে তিনি নীতি-আয়োগের অধীন সরকারি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও কাজ করেছেন । তিনি আরও বলেন, “আমি এম-ফিল-এ ভর্তি হই, কারণ আমার কাজটা ভালভাবে করতে হলে এই ডিগ্রিটার দরকার।”