বাজ অলড্রিনের চাঁদে অজ্ঞাত ব্যক্তির দেখা পাওয়ার খবরটি ভুয়ো
বাজ অলড্রিন কোনও লাই ডিটেকটর পরীক্ষা দেননি। ডেইলি স্টারে প্রকাশিত খবরটি ভুয়ো।
শিভাশঙ্কর পট্টনায়েক নামের একজন সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী ১০ এপ্রিল ২০১৯ একটি পোস্টার শেয়ার করেন - যেটি মিথ্যা দাবি করা হয়েছে - (পোস্টটির বঙ্গানুবাদ) “বাজ অলড্রিন হলেন দ্বিতীয় মানুষ যিনি চাঁদে পদার্পন করেছিলেন। তিনি এই মহাবিশ্ব ও নাসাকে জানিয়েছিলেন যে, তার সঙ্গে চাঁদে অজ্ঞাত ব্যক্তির দেখা হয়েছিল। এখন এই প্রথিতযশা নভোশ্চর একটি লাই ডিটেকটর পরীক্ষায় উত্তির্ণ হয়েছেন এবং প্রমান করেছেন তার বক্তব্য সঠিক।” পোস্টটি এখানে আর্কাইভ করা আছে।
তথ্য যাচাই
বুম এই পোস্টের সত্যতা জানতে লাইভসাইন্স ডট কম নামে একটি বিশ্বাসযোগ্য বিজ্ঞানের খবরের ওয়েবসাইটের হদিস পায়। এসম্পর্কে বিস্তারিত প্রতিবেদনটি পড়া যাবে এখানে।
প্রথমত, পোস্টটির বয়ান সুস্পষ্ট নয় তিনি ঠিক কী কী দেখেছিলেন। দ্বিতীয়ত অল্ড্রিন কয়েকবছর আগে একটি রেডইট মন্তব্যে বলেছিলেন যে, যখন তিনি মহাকাশে উজ্জ্বল কিছু দেখেন, তিনি ভেবেছিলেন নিজেদের মহাকাশ যানের ছড়ানো চারটির কোনও একটি প্যানেল থেকেই হয়ত সূর্য প্রতিবিম্বিত হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, এই খবরটি প্রকাশিত হয়েছিল ৮ এপ্রিল ২০১৮ রবিবার ডেইলি স্টারে। ওই প্রতিবেদন অনুয়ায়ী মহাকাশচারী, “অলড্রিন, অল ওরডেন, এডগার মিচেল ও গরডন কুপার এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।”
এই প্রতিবেদনটি নানা কারণে গরমিলে ভরা। তবে সবচেয়ে হাস্যকার ব্যপারটি তুলে ধরেছে দ্য ইন্ডিপেনডেন্ড। মহাকাশচারী মিচেল ও কুপার দুজনেই মৃত। কুপার মারা যান ১৪ বছর আগে। স্বাভাবিকভাবে তারা সাম্প্রতিক সময়ে কোনও পরীক্ষায় অংশ নেননি।
এমনকি লাই ডিটেকটর পরীক্ষার সত্যতার বিজ্ঞানসম্মত গুরুত্ব নিয়ে সন্দেহ আছে অনেকেরই। দ্য ন্যশানাল রিসার্চ কাউন্সিলের ২০০৩ সালের চমকপ্রদ রিপোর্টে বলা হয়, পলিগ্রাফ পরীক্ষার বাস্তববিক নির্ভুলতা সামান্যই।
তাহলে সত্যজিৎ রায়ের বঙ্কু বাবুর অজ্ঞাত মানুষ অ্যাঙ দেখা, বাজ অলড্রিনের কাছে অধরা ছিলই। প্রফেসর শঙ্কুর এক্সপেরিমেন্ট আর সোস্যাল মিডিয়ার আজগুবি খবর বাস্তবের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেননা যেন। নেপালের অলৌকিক পাখি নিয়ে বুমের যাচাই করা প্রতিবেদন পড়ুন এখানে।