মিশরের একটি গির্জায় গণতাণ্ডবের পুরনো ভিডিও নিউজিল্যান্ডে মসজিদে হামলার পর ভাইরাল
একটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তানিরা একটি গির্জায় হামলা চালাচ্ছে
৬ বছরের পুরনো একটি ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই ভুয়ো দাবি নিয়ে যে, নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ হত্যাকাণ্ডের বদলা হিসাবে পাকিস্তানে একটি গির্জায় ইসলামপন্থীরা হামলা চালিয়েছে ।
২০১৯ সালের ১৫ মার্চ এক কট্টর দক্ষিণপন্থী বন্দুকবাজ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে নির্বিচার গুলি চালিয়ে ৫০ জনকে হত্যা করে ।
পোস্টটি দেখতে এখানে এবং তার আর্কাইভ সংস্করণটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন ।
ক্রাইস্টচার্চ হামলা নিয়ে বুম-এর অন্যান্য রিপোর্টও পড়ুন ।
*মিশরের পুরনো ছবি দিয়ে তা ক্রাইস্টচার্চ গণহত্যার নমুনা হিসাবে শেয়ার করা হচ্ছে।*গোঁড়ামি এবং অপরের মৃত্যুতে পৈশাচিক আনন্দ ভারতে ক্রাইস্টচার্চ হত্যাকাণ্ডের ভিডিওকে জিইয়ে রেখেছে।
এবারের ভিডিওটিতে সতর্কবার্তা ছিল যে, সেটি পরীক্ষা বা যাচাই করে দেখা হয়নি ।তবু পোস্টের মন্তব্য অংশে দেখা যাচ্ছে য়ে, লোকেরা ওই সব সতর্কবার্তা গ্রাহ্যই করেনি ।
তবে আরও অনেক ফেসবুক পেজ ও টুইটার হ্যান্ডেলে ওই পোস্ট কোনও সতর্কবার্তা
ছাড়াই ছড়িয়ে পড়ছে ।
ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে আগ্নেয় হামলার পরে-পরেই এই পোস্টগুলি ভাইরাল হতে থাকে।অস্ট্রেলিয়ায় জন্মানো ২৮ বছরের তরুণ ব্রেন্ডন ট্যারান্ট ওই হত্যাকাণ্ডের পর খুনের দায়ে গ্রেফতার হয়েছে ।
তথ্য যাচাই
ভিডিওর ছবির অংশ অনুসন্ধান করে বুম দেখেছে, এগুলি ২০১৩ সালে মিশরের সোহাগ শহরে কপ্টিক খ্রিস্টানদের একটি গির্জায় হামলার ছবি ।নানা ধরনের প্রাসঙ্গিক শব্দ বসিয়ে ইউ-টিউবে খোঁজ লাগিয়ে সেখানেও একই ঘটনার অনুরূপ ভিডিওর ছবি মেলে ।
পশ্চিম এশিয়ার একটি সংবাদসংস্থা মধ্যপ্রাচ্য খ্রিস্টান সংবাদের (বা এমসিএনডিরেক্ট)ইউ-টিউব পেজে ওই ভিডিওর একই ছবি দেখতে পাওয়া যায় ২০১৩ সালের ২৯ অগস্ট l সেই ছবির ক্যাপশনে স্পষ্ট লেখাঃ
এমসিএন সোহাগ ডাওসিসকে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেওয়ার ছবি দেখাচ্ছে, যেখানে জনতা গির্জার ক্রুশ ভেঙে ফেলায় হাত লাগিয়েছে ।
২০১৩-র ১৪ অগস্ট প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুর্সির পতনের পর মিশরে যে রাজনৈতিক গণ-অভ্যুত্থানের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তাতে অনেক গির্জা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উপর জনরোষ আছড়ে পড়ে ।মুসলিম ব্রাদারহুড সংগঠনের সমর্থকরা মুর্সির পতনের জন্য খ্রিস্টানদের দায়ী মনে করতে থাকেন ।
ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড পত্রিকা ডেইলি মেল ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ওই একই ফুটেজ ব্যবহার করে একটি প্রতিবেদনও লেখে, যা দেখতে এখানে ক্লিক করুন ।
ফক্স নিউজও এই হামলার ঘটনাটি ভিডিও ফুটেজ সহ রিপোর্ট করে ।