জগন মোহন রেড্ডি ধর্মান্তরিত হয়ে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন, এরকম মিথ্যে দাবির সঙ্গে ছড়ালো পুরনো ছবি
জগন মোহন রেড্ডি একজন প্রটেস্টান্ট খ্রিষ্টান। ইদানীং তাঁকে লক্ষ্য করে, বিশেষত তাঁর ধর্ম নিয়ে, অনেক গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
জগন মোহন রেড্ডির তিনটি পরস্পর-যোগহীন ছবি নিয়ে বানানো একটি কোলাজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। পোস্টটিতে মিথ্যে দাবি করা হয়েছে যে অন্ধ্রপ্রদেশের এই নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন।
এই মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে,বিশেষত তাঁর ধর্ম নিয়ে,বহু মিথ্যে তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁর দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস সাম্প্রতিক নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার পর থেকেই এগুলি বেশি করে হচ্ছে। ভারতের লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতায় তাঁর দল এখন চতুর্থ।
আরও পড়ুন: শপথগ্রহণের সময় জগন মোহন রেড্ডিকে কি শুধু খ্রিষ্টান ধর্ম গুরুরারা আশীর্বাদ করেছিলেন? একটি তথ্য যাচাই।
রেড্ডি একজন প্রটেস্টান্ট খ্রিষ্টান। ফেসবুকে একটি পোস্টে দু’রকম দাবি করে হয়েছে— এক, রেড্ডি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে শাঁখ বাজিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন, এবং দুই, তিনি হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন।
এই পোস্টটির সঙ্গে যে হিন্দি ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে তা এবং তার অনুবাদ নীচে পড়তে পারেন।
सब कुछ गड़बड़ नहीं है।बहुत कुछ अच्छा भी हो रहा है।
अभी जब मोदी जी आंध्र प्रदेश पहुंचे तो मोदी जी के स्वागत में खड़े आंध्र प्रदेश के युवा मुख्यमंत्री जगन मोहन रेड्डी ने मोदी जी का पैर दो बार छूकर उनका स्वागत किया! यही है हिंदुत्व! जो हिन्दुओं के डीएनए में है, अपने से बड़ों का पैर छूकर सम्मान, सत्कार करना, चाहे भले ही आप कितने बड़े पद पर क्यों ना हो! हमारे संस्कार, हमारी संस्कृति, यही हमारी असली विरासत है!
আমাদের চারপাশে সবকিছুই খারাপ নয় বরং কিছু ভাল ঘটনাও ঘটছে। মোদীজি যখন অন্ধ্রপ্রদেশে যান, তখন সেখানকার তরুণ মুখ্যমন্ত্রী জগন মোহন রেড্ডি দু’বার তাঁর পা ছুঁয়ে তাঁকে স্বাগত জানান।এই হচ্ছে হিন্দুত্ব! যিনি যত উঁচু পদেই থাকুন না কেন, বড়দের পা ছুঁয়ে সম্মান জানানো প্রত্যেক হিন্দুর ডিএনএ-তে আছে। আমাদের পরম্পরা ও সংস্কৃতিই হল আমাদের আসল উত্তরাধিকার।
পোস্টটির আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ছবি তিনটির মধ্যে প্রথমটিতে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখতে পায় ছবিটি ২০১৩ সালের।
২০১৩ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারির ডেকান ক্রনিকল-এর পিকচার গ্যালারিতে এই একই ছবি আমরা দেখতে পাই।
রেড্ডির শাঁখ বাজানোর ছবিটি আসলেওই বছরেরই ওয়াইএসআরসিপি-এর র্যালির ছবি। যেটি হায়দ্রাবাদের এল বি স্টেডিয়ামে হয়েছিল। তেলঙ্গনা ও অন্ধ্রপ্রদেশ আলাদা হয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে এই র্যালির আয়োজন করা হয়েছিল।তেলঙ্গনা ও অন্ধ্রপ্রদেশ পরের বছর, অর্থাৎ ২০১৪ সালে, আলাদা দু’টি রাজ্যে ভাগ হয়ে যায়।
জগনের শাঁখ বাজানোর বর্ণনা যেমন মিথ্যে প্রমাণিত হয়, তেমনই রেড্ডির হিন্দু ধর্ম গ্রহণের দাবি করা অন্য দুটি ছবিও বুম যাচাই করে দেখেছে।
আরও পড়ুন: ওয়াইএসআরসিপি জগন মোহন রেড্ডির ‘ঘর ওয়াপসি’ বা হিন্দু ধর্মগ্রহণের ঘটনা একেবারেই অস্বীকার করেছেন।
ফোটোগুলিতে রেড্ডিকে হৃষিকেশে ‘হোম্মাম’ নামের এক ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে দেখা যাচ্ছে। ফোটোগুলি ২০১৬ সালের অক্টোবরের। অন্ধ্রপ্রদেশ যাতে স্পেশাল ক্যাটেগরি স্টেটের তালিকাভুক্ত হয়, তার জন্যইএই ধর্মীয় অনুষ্ঠানটি করা হয়েছিল।
ওয়াইএসআরসিপি-র এক মুখপাত্র আগেই বুমকে জানিয়েছেন যে রেড্ডি অনেক সময় মানুষের অনুরোধে অন্য ধর্মের আচারও পালন করেন, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তিনি খ্রিস্টান ধর্ম ছেড়ে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন।