এক মহিলাকে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা কথিত ব্যাভিচারের অভিযোগে বেঁধে চাবকাচ্ছে, এমন একটি ঘটনার অস্বস্তিকর ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই ভুয়ো ব্যাখ্যা দিয়ে যে, এক মুসলিম মহিলাকে গোমাংস রাখার দায়ে হিন্দুরা পেটাচ্ছে।
৫০ সেকেন্ডের ভিডিও ক্লিপটিতে দেখা যাচ্ছে এক মহিলাকে বেঁধে এক ব্যক্তি পেটাচ্ছে আর দর্শকরা সেটা দাঁড়িয়ে উপভোগ করছে। ছবিটি অস্বস্তিকর বলে বুম এই প্রতিবেদনে সেটি অন্তর্ভুক্ত করেনি।
বুমের হোয়াটঅ্যাপ হেল্পলাইন নম্বরেও (৭৭০০৯০৬১১) ভিডিওটি জমা পড়েছে এই ক্যাপশন সহ, “আপনি কি সেই অপমান কল্পনা করতে পারেন, যেখানে আপনার পরিবারের মহিলাটিকে বেঁধে প্রকাশ্যে পেটানো হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে এবং হেয় করা হচ্ছে আর গোটা দৃশ্যটা আবার ছবি তুলে রাখা হচ্ছে? এর চেয়ে গুলি খেয়ে মরাও শ্রেয়। নরেন্দ্র মোদীর হিন্দু ভারতে মুসলিম মহিলারা কেবল মাংস নিয়ে যাওয়ার অপরাধে এ ভাবে নিগৃহীত হচ্ছে, এর চেয়ে জঘন্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আর কী হতে পারে? অথচ সারা বিশ্বের গণমাধ্যম ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই ঘটনায় ঘুমিয়ে রয়েছে।”
ফেসবুকেও ভিডিওটি একই ক্যাপশন সহ ভাইরাল হয়েছে।
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটির ফ্রেম ভেঙে-ভেঙে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছে, এটি আদতে উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের ঘটনা, যেখানে এক মহিলাকে ‘ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার শাস্তি হিসাবে’ এভাবে সর্বসমক্ষে বেল্ট দিয়ে চাবকানো হয়।
‘ওমেন ফল্গড বুলন্দশহর’, লিখে গুগল-এ সার্চ করলেই এই ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু সংবাদ-প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ১০ মার্চ এক ব্যক্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্দেশে তার স্ত্রীকে সকলের সামনে বেঁধে পেটায়, তার অপরাধ মহিলাটি অন্য এক পুরুষের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিল।
বুলন্দশহরের পুলিশ সুপার প্রবীণ রঞ্জন সিং স্ক্রোল-কে বলেন, "ভিডিওটি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর মহিলাটির স্বামী সওদন সিং, প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান শের সিং এবং মহিলাটির পুত্র শ্রাবণকে গ্রেফতার করা হয়।"
গত সপ্তাহে ওই একই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে যে, ওই মহিলাটি মুসলিম এবং আরএসএস-বিজেপির হিন্দুত্ব বাহিনী এই নিগ্রহ চালিয়েছে। একই তথ্য দ্য কুইন্ট যাচাই করেছে।