হোয়াট্সঅ্যাপের একটি বার্তায় দাবি করা হয়েছে, ভোটার তালিকায় নাম না থাকলেও একজন ভোটার ‘চ্যালেঞ্জ ভোট’ দেওয়ার দাবি জানাতে পারে । বার্তাটি ভুয়ো । বার্তার দ্বিতীয় দাবিটি হল, যদি অন্য কেউ আপনার ভোট দিয়ে দেয়, তাহলে আপনি ‘টেন্ডার ভোট’ দিতে পারেন । এই দাবিটি সঠিক ।
ভাইরাল হওয়া বার্তাটিতে বলা হয়েছে—‘যদি আপনি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখেন আপনার নাম ভোটার তালিকায় নেই, তাহলে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৪৯/ক ধারায় আধার কার্ড দেখিয়ে আপনি ‘চ্যালেঞ্জ ভোট’ দেবার দাবি জানাতে পারেন ।
যদি আপনি দেখেন যে, অন্য কেউ ইতিমধ্যেই আপনার ভোট দিয়ে চলে গেছে, তাহলেও আপনি ‘টেন্ডার ভোট’ দেবার দাবি করতে পারেন এবং নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন ।
যদি কোনও ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ১৪ শতাংশেরও বেশি টেন্ডার ভোট পড়ে, তবে সেই কেন্দ্রে পুনরায় ভোটগ্রহণ করাতে হবে ।
এই বার্তাটি যত বেশি সম্ভব গোষ্ঠী ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে শেয়ার করুন, যাতে ভোটদান বিষয়ে সচেতনতা বাড়ে ।’
তথ্য যাচাই
মহারাষ্ট্রের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের মাধ্যমে বুম নির্বাচন কমিশনের সহযোগী সংগঠন ভি সিটিজেন্স অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (ভিক্যান)-এর কাছে পৌঁছয় । ভিক্যান মহারাষ্ট্রের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের কাছ থেকে ভাইরাল বার্তাটির জবাব পেয়েছে ।
১ নং দাবিঃ আপনি ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে ভোটার তালিকায় আপনার নাম না দেখতে পেলে আধার কার্ড কিংবা ভোটার কার্ড দেখিয়ে ৪৯/ক ধারায় ‘চ্যালেঞ্জ ভোট’ দেওয়ার দাবি করতে পারেন ।
তথ্যঃ মিথ্যা ।
ভিক্যান-এর জবাব অনুযায়ী, ভোটার তালিকায় আপনার নাম না থাকলে আপনি ভোট দিতে পারবেন না ।
২০১৯-এর ফেব্রুয়ারিতে পোলিং এজেন্টদের জন্য নির্বাচন কমিশন যে হ্যান্ডবুক প্রকাশ করেছে, বুম দেখেছে, সেখানে স্পষ্ট বলা আছে, ভোটার তালিকার মাধ্যমেই পোলিং অফিসার প্রাথমিকভাবে ভোটারকে শনাক্ত করবেন ।
২ নং দাবিঃ যদি আপনি দেখেন, অন্য কেউ আপনার আগেই আপনার ভোটটি দিয়ে চলে গেছে, তখন আপনি ‘টেন্ডার ভোট’ দেবার দাবি করতে পারেন ।
তথ্যঃ সত্য ।
ভিক্যান-কে মহারাষ্ট্রের নির্বাচনী আধিকারিকের পাঠানো জবাবেও এই দাবি সমর্থিত । পূর্বোক্ত হ্যান্ডবুকেও বলা আছে, যদি দেখা যায় কারও বৈধ ভোট অন্য কেউ আগে দিয়ে গেছে, তবে প্রিজাইটিং অফিসার সেই ভোটারকে ব্যালট পেপার মারফত টেন্ডার ভোট দেওয়ার অনুমতি দিতে পারেন ।
৩ নং দাবিঃ যদি কোনও বুথে ১৪ শতাংশেরও বেশি টেন্ডার ভোট পড়ে, তবে নির্বাচন কমিশন সেই বুথে নতুন করে ভোটগ্রহণ করাতে পারেন ।
তথ্যঃ মিথ্যা ।
মহারাষ্ট্রের নির্বাচনী আধিকারিক জানালেন, ১৪ শতাংশ বা তার বেশি টেন্ডার ভোট পড়লে পুনর্নির্বাচনের কোনও বিধান নেই । প্রথমত, এত বেশি শতাংশ টেন্ডার ভোট পড়ার সম্ভাবনা থাকে না । তবে যদি তা পড়েও, তাহলেও সেই বুথে পুনর্নির্বাচন করার কোনও নিয়ম নেই ।
নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত হ্যান্ডবুকেও এই মর্মে কোনও বিধি বা বিধান নেই ।
হ্যান্ডবুকটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন ।