ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি বুথের ভিতর ঢুকে ভোটারদের নির্দেশ দিচ্ছে এবং তাদের নিয়ে ইভিএম মেশিনের কাছে গিয়ে ভোট দেওয়াচ্ছে l দু মিনিটের এই ভিডিওতে যে লোকটিকে ভোটারদের নির্দেশ দিতে এবং নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙতে দেখা যাচ্ছে, সোশাল মিডিয়ায় তাকে ভুলভাবে শনাক্ত করা হয়েছে বিজেপির মধ্যপ্রদেশের বিধায়ক অনিল উপাধ্যায় হিসাবে l ভিডিওর কথাগুলি আস্তে করে দেওয়া হয়েছে l হিন্দিতে ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে-- “বিজেপি বিধায়ক অনিল উপাধ্যায়ের এই অনাচার নিয়ে মোদীজি কী বলবেন? ভিডিওটিকে এমন ভাবে ভাইরাল করো, যাতে সারা হিন্দুস্তান এটা দেখে।”
অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারীই ভিডিওটি পোস্ট করেছেনঃ
ওই একই ভিডিও টুইটারেও প্রবেশ করেছে, যেখানে বিধিভঙ্গকারী ব্যক্তিটিকে কংগ্রেস বিধায়ক রূপে শনাক্ত করা হয়েছে।
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটিকে মূল ফ্রেমে ভেঙে অনুসন্ধান চালিয়েছে l সেই খোঁজখবর থেকে আমরা রিপাবলিক টিভির একটি রিপোর্টে পৌঁছই, যেখানে বলা হয়েছে, ঘটনাটি ১৮ এপ্রিলের, যেদিন ইসলামপুরে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ চলছিল এবং বুথ-দখলে লিপ্ত ব্যক্তিটি এক তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী
এরপর আমরা ‘ইসলামপুর’ এবং ‘তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী’ এই দুটি শব্দ বসিয়ে সংবাদ খুঁজতে থাকি এবং তখনই ঘটনাটির একটি দীর্ঘতর ভিডিও হাতে পাই, যাতে দেখা যাচ্ছে, শাদা কুর্তা পরা এক ব্যক্তি ভোট দিতে উদ্যত লোকেদের স্পষ্ট নির্দেশ দিচ্ছে কোথায় এবং কাকে ভোট দিতে হবে।
ভিডিওটিতে আমরা কালো প্যান্ট ও শাদা শার্ট পরা অন্য এক ব্যক্তিকেও একই ভাবে ওই বুথের ভোটারদের নির্দেশ দিতে দেখি, শাদা কুর্তার লোকটি তারপর এসে ওর সঙ্গে যোগ দেয়। ভোটারদের অধিকাংশই মহিলা এবং তাঁদের বাংলা ভাষাতেই নিজেদের মধ্যে কথা বলতে শোনা যাচ্ছে l আমরা রায়গঞ্জ লোকসভা আসনের সাংসদ মহম্মদ সেলিমের কাছে ভিডিওটি পাঠালে তিনি জানান, এটি তাঁরই নির্বাচনকেন্দ্রের ঘটনা। তিনি বলেন, “এটা আমার রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ইসলামপুর বিধানসভা অংশের ঘটনা এবং শাদা কুর্তা পরা ব্যক্তিটি তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য।”
বুম তার নিজের মতো করে আলাদাভাবে তথ্য যাচাই করে দেখেছে, ওই লোকটির নাম হামিজুদ্দিন, যে ইসলামপুরের রামগঞ্জ পঞ্চায়েতের সদস্য l সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হামিজুদ্দিন বলেন, ‘তিনি তাঁর মা ও মেয়েদের সঙ্গে পোলিং বুথে ঢুকেছিলেন। যেহেতু প্রিসাইডিং অফিসারের শরীরটা ভাল ছিল না, তাই তিনি নিজের পরিবারের লোকেদের ভোট দিতে সাহায্য করার দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেন।’
মহম্মদ সেলিম জানান, হামিজুদ্দিনের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করার মামলা দায়ের করা হয়েছে।