ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হয়েছে, মুসলিম মহিলারা সনাতন ধর্ম গ্রহন করে শ্রী রামচন্দ্রের আরতিপূজা করছেন।
ভাইরাল হওয়া ১ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে কয়েকজন বোরখা পরিহিত ও মাথা ঢাকা মহিলাকে শ্রী রাম চন্দ্রের পটচিত্রের সামনে খঞ্জনি বাজাতে বাজাতে নৈবেদ্যর থালা সহ আরতি করতে দেখা যাচ্ছে।
পোস্টটিতে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ‘‘মুসলিম মহিলারা সনাতন ধর্ম গ্রহন করে ভগবান রামচন্দ্রের আরতিপুজা দিচ্ছেন!!’’
এই প্রতিবেদনটি লেখার সময় পর্যন্ত পোস্টটি ৩,৬০০ জনের বেশি লাইক ও ৯০৯ জনের বেশি শেয়ার করেছেন।
পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ‘‘মুসলিম ওম্যান পারফর্ম রামস আরতি’’ লিখে কিয়ার্ড সার্চ করে ১৪ এপ্রিল ২০১৯ টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পেয়েছে। সেখানে ওই মহিলাদের সনাতন ধর্ম গ্রহনের কোনও খবর নেই। ওই মহিলাদের রাম নবমীর পুণ্যতিথি উপলক্ষে হিন্দি সাহিত্যের প্রখ্যত লেখক প্রেমচাঁদের পৈতৃক গ্রাম উত্তরপ্রদেশের লামহি-তে আরতি করার খবর প্রকাশিত হয়েছিল।
আরতিতে অংশগ্রহন করা ওই মহিলারা সকলে মুসলিম মহিলা ফাউন্ডেশনের সদস্য। ওই সংস্থার বর্তমান সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা হলেন নাজনিন আনসারি। ২০১৭ সালেও তারা এই ধরনের ভজনারতি করে খবরের শিরোনামে আসেন। ইউটিউবে তাদের ভজনারতি করার ২০১৭ সালের ভিডিওটি দেখা যাবে।
উল্লেখ্য, ইসলাম ধর্মে ঈশ্বরের কোনও মূর্তি বা ছবি অর্থাৎ সাকার রূপ পূজা করার বৈধতা নেই।
নাজনিন আনসারি ও বিশাল ভারত সংস্থান
ভিডিওটির দেওয়ালে ও শ্রী রামচন্দ্রের পটছবিটির নীচে হিন্দিতে বিশাল ভারত সংস্থান লেখা রয়েছে। বারানসীর ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বিশাল ভারত সংস্থান প্রতিষ্ঠা করেন রাজীব শ্রীবাস্থব। নাজনিন আনসারি ২০০৬ সালের নভেম্বরে বিশাল ভারত সংস্থান আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের সহযোগী ছিলেন।
ওই সময় থেকেই তাদের সংগঠন ‘রামের আরতি’ অনু্ষ্ঠানের আয়োজন করে চলেছে। অযোধ্যের সংস্থার শ্রীরাম পিঠের মোহান্ত শম্ভু দেবাচার্য— নাজনিন ও তার সংগঠনের কাজকর্মে খুশি হয়ে কথিত রামস্থলের মাটি সহ ঘট নাজনিনকে উপহার দেন।
বুম নাজনিন আনসারির টুইটার প্রোফাইলের সাম্প্রতিক টুইটগুলি দেখে বুঝতে পেরেছে ওই সমাজকর্মী প্রোফাইল ধর্মান্তরিত হননি।