সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পুরনো গুজব ফের জিইয়ে উঠল। তাতে দাবি করা হয়েছে যে হোয়াটসঅ্যাপের (WhatsApp) মাধ্যমে যে কোনও বার্তা এবং ফোনকল (ভয়েস কল, এবং ভিডিও কল, দুই-ই) আদানপ্রদানের উপর সরকার নজরদারি করছে।
প্রায় একই রকমের অন্য একটি হোয়াটসঅ্যাপ ফরওয়ার্ডে মিথ্যা দাবি করা হয়েছে যে, হোয়াটসঅ্যাপ একটি নতুন ফিচার যোগ করেছে— কোনও মেসেজে 'তিনটি টিক চিহ্ন' থাকলে বুঝতে হবে যে সরকার সেই মেসেজটি পড়ে নিয়েছে।
হিন্দিতে লেখা পোস্টটি অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, ".. ০১. সব কল রেকর্ড করা হবে। ০২. সব কল রেকর্ডিং সেভ করা হবে। ০৩. হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, টুইটার এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি করা হবে। ০৪. যাঁরা এখনও জানেন না, তাঁদের বলুন। ০৫. আপনার ডিভাইসটিকে মন্ত্রকের ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। ০৬. অন্য কাউকে কোনও ভুল বার্তা প্রেরণের আগে সাবধান হোন। ০৭. আপনার সন্তান, ভাই, আত্মীয়, বন্ধু, পরিচিতদের জানান যে, তাঁদেরও এই ব্যাপারে সাবধান হওয়া প্রয়োজন, এবং সোশ্যাল সাইটগুলিতে যত কম যাওয়া যায়, ততই ভাল..." এই ভাইরাল মেসেজে দাবি করা হয়েছে যে, যদি তিনটি নীল টিক চিহ্ন দেখা যায়, তার অর্থ সরকার আপনার মেসেজটি পড়েছে, এবং মেসেজটি ঠিক আছে। কিন্তু যদি দু'টি নীল টিক এবং একটি লাল টিক চিহ্ন দেখা যায়, তার মানে হল, সরকার আপনার মেসেজটি পড়েছে, এবং কিছু ক্ষণের মধ্যেই পুলিশ আপনাকে গ্রেফতার করবে।
দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
একই ফরওয়ার্ড বুম তার হোয়াটসঅ্যাপ টিপলাইন নম্বরেও পায়, যেখানে এই ফরওয়ার্ডটি সত্য কি না, জানতে চাওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: অসমের স্কুলে এক ছাত্রের আজানের ভিডিও ঝাড়খণ্ডের ঘটনা বলে ছড়াল
তথ্য যাচাই
২০১৮ সালের জুলাই মাসেও বুম এই মেসেজটির তথ্য যাচাই করেছিল এবং জানিয়েছিল যে মেসেজটি ভুয়ো। তখনও এই একই মিথ্যা দাবির সঙ্গে মেসেজটি শেয়ার করা হচ্ছিল।
আমরা লক্ষ করি যে, এই ভুয়ো বার্তাটি ২০১৫ সাল থেকেই বিভিন্ন চেহারায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে। তার থেকেই বোঝা যায় যে, দাবিটি ভিত্তিহীন।
হোয়াটসঅ্যাপের এক মুখপাত্র ভাইরাল হওয়া ফরওয়ার্ডেড মেসেজের দাবিটি অস্বীকার করেন এবং জানান যে, এই মেসেজটি ভুয়ো। তিনি বলেন, "অ্যাটাচ করা 'হাইলি ফরওয়ার্ডেড মেসেজ'টি মিথ্যা, এবং এটি আবার ফরওয়ার্ড করার আগে সতর্ক হওয়া জরুরি।"
হোয়াটসঅ্যাপের 'রিড রিসিপ্ট' ব্যাপারটা কী?
বার্তার পাশে ক'টি টিক চিহ্ন থাকতে পারে, এবং বিভিন্ন টিক চিহ্নের অর্থ কী, হোয়াটসঅ্যাপের ওয়েবসাইটে সে বিষয়ে বিস্তারিত বলা রয়েছে। তা ছাড়াও, সংস্থা 'তিনটি টিক চিহ্ন' ফিচার চালু করেছে, এমন কোনও কথা ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা নেই।
দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুন: জাপানের ইয়াহাগি নদী বাঁধের ভিডিও ভুয়ো দাবিতে ছড়াল ভারতের নয়া বাঁধ বলে