ধর্মীয় পর্যটন সার্কিটে তন্হা পীর-এর দরগাকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলতকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রকাশিত সংবাদপত্রের একটি বিজ্ঞাপনের স্ক্রিনশটকে শেয়ার করে মিথ্যা দাবি করা হচ্ছে যে, কংগ্রেস সরকার নাকি শুধুমাত্র ওই পীরের দরগা বানানোর জন্যই ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
বুম দেখেছে, দাবিটা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং শুধু ওই পীরের দরগা নয়, হিন্দু, শিখ ও জৈনদের তীর্থস্থানগুলি নিয়ে একটি অভিন্ন ধর্মীয় পর্যটন অঞ্চল গড়ে তুলতেই রাজ্যের চলতি অর্থবর্ষের বাজেটে ওই অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপনটির স্ক্রিনশট শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে—"আমরা হিন্দুরা বাড়ি-বাড়ি ঘুরে অযোধ্যায় রামমন্দির গড়ে তুলতে চাঁদা তুলে মরছি, আর অন্য দিকে রাজস্থান সরকার শুধু একখানা পীরের দরগার জন্যেই ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে ফেলল। পরে এই দরগা থেকেই হিন্দুদের ধ্বংস করার জন্য আশীর্বাদ প্রার্থনা করা হবে।"
ফেসবুকেও ভাইরাল
আমরা দেখেছি স্ক্রিনশটটি ভুয়ো দাবি সহ ফেসবুকেও ভাইরাল হয়েছে।
আরও পড়ুন:
তথ্য যাচাই
বুম দেখেছে, রাজস্থান সরকারের ২০২০-২১ আর্থিক বাজেটে চারটি ধর্মের ধর্মস্থান নিয়ে একটি ধর্মীয় পর্যটন এলাকা গঠন করার জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যার মধ্যে শিখ, জৈন, হিন্দু ও মুসলিমদের ধর্মস্থান রয়েছে। বাজেট প্রস্তাবে স্পষ্টভাবেই চারটি ধর্মের ধর্মস্থানেরই উল্লেখ রয়েছে, আলাদা করে কোনও মুসলিম ধর্মস্থান বা দরগার উল্লেখ নেই।
বাজেট নথির ২১৩ নং পয়েন্টে ৭৪ ও ৭৫ পৃষ্ঠায় দ্ব্যর্থহীন ভাষায় লেখা রয়েছে, সব কয়টি ধর্মের তীর্থ নিয়ে একটি ধর্মীয় পর্যটন প্রকল্প তৈরি করার জন্যই এই অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।
সেখানে শিখ, জৈন, হিন্দুদের ধর্মস্থানের সঙ্গেই মুসলিমদের তন্হা পীরের দরগারও উল্লেখ করা হয়েছে, লাল কালিতে নীচের বিবরণীতে যা দাগানো হয়েছে।
পড়ুন এখানে।
আমরা এও দেখেছি যে, রাজস্থান পত্রিকার ১২ মার্চ ২০২১ সালের সংস্করণে স্ক্রিনশটের বিজ্ঞাপনটি প্রকাশিত হয়েছে।
বিজ্ঞাপনটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দ্য ইকনমিক টাইমস পত্রিকাও জানায় যে রাজস্থান সরকার ধর্মীয় পর্যটন প্রকল্প রূপায়নে বিভিন্ন ধর্মের পুণ্যস্থানগুলি জুড়ে ১০০ কোটি টাকায় একটা সার্কিট বানাতে চলেছে।
এ নিয়ে যে ভুয়ো দাবিটি শেয়ার করা চলছে, সেটি এর আগেই ফ্যাক্টলি পর্দাফাঁস করেছে।আরও পড়ুন: