মিশরে বোরখা-পরা একটি লোকের এক শিশুকে অপহরণ (Kidnapping) করার সাজানো ভিডিওকে ভারতের সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে সেটিকে সত্যি ঘটনা বলে শেয়ার করা হচ্ছে।
২৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে দেখা যায় বোরখা-পরা এক ব্যক্তি অন্য এক ব্যক্তির সাহায্যে একটি বাচ্চা ছেলেকে অপহরণ করে অপেক্ষমাণ অটোরিকশায় চড়ে পালাচ্ছে।
ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, "আমাদের চারপাশ সম্পর্কে সজাগ-সতর্ক থাকতে হবে!"
পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
এই একই ভিডিও সুদর্শন নিউজ-এর সন্তোষ চৌহানও শেয়ার করেছেন। সুদর্শন নিউজ-এর শেয়ার করা ভুয়ো পোস্ট অতীতে বুম পর্দাফাঁস করেছে।
পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুন: সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে প্রাক্তন মুখ্য-বিচারপতি বালাকৃষ্ণনের ছবি পার্দিওয়ালা বলে ছড়াল
তথ্য যাচাই
বুম দেখে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি মিশরের এবং সেটি সাজানোl মিশর সরকার এই ভুয়ো ভিডিওটি বানানোর এবং ছড়ানোর দায়ে মোট ৪ জনকে গ্রেফতারও করেছে।
আমরা ভাইরাল ভিডিওটিকে কয়েকটি মূল ফ্রেমে ভেঙে নিয়ে গুগল ইমেজেস মারফত খোঁজ লাগাই। তাতে কয়েকটি মিশরীয় সংবাদ-প্রতিবেদনের খোঁজ মেলে যেখানে বলা হয়েছে, ঘটনাটি সত্য নয়, সাজানো এবং ভাইরাল ভিডিওটি বানানোর জন্য ৪ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
মিশরীয় সংবাদ ওয়েবসাইট 'আল ওয়াতন নিউজ'-এর ২৮ জুন, ২০২২ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী বোরখা-পরা এক ব্যক্তির দ্বারা এক শিশুকে অপহরণের এই ভিডিও সাজিয়ে তোলার অপরাধে 'সোহাগ' প্রদেশ থেকে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রতিবেদনে ভাইরাল ভিডিও সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলা হয়, অর্থ উপার্জন এবং সোশাল মিডিয়ায় বেশি সংখ্যক লোককে দেখানোর অভিসন্ধি নিয়েই এই ভিডিওটি বানানো হয়।
পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
এই সূত্র অনুসরণ করে আমরা মিশরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মিডিয়া হ্যান্ডেল যাচাই করে দেখি ২৯ জুন, ২০২২ প্রকাশিত একটি পোস্ট যেখানে ওই ৪ জন অপহরণকারী ঘটনাটি বিশদে বর্ণনা করা হয়েছে।
পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা, "সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ছড়িয়ে দেবার জন্য কী ভাবে একটি ছেলেকে অপহরণ করার ভিডিও ক্লিপ বানানো হয়, সেটাই বর্ণনা করা হচ্ছে। কী ভাবে একটি বাচ্চার কাঁধে ছুঁচ ফুটিয়ে তাকে অবশ করে দিয়ে কয়েকজনের সাহায্যে এক বোরখা-পরা ব্যক্তি অটোরিকশায় করে অপহরণ করল, সেটাই বর্ণনা করা হচ্ছে। তদন্ত করে অবশ্য দেখা গেছে, ভিডিওটি সাজানো, সত্যি ঘটনার ছবি নয়।
অনুসন্ধানে আরও প্রকাশ পেয়েছে কারা এর পিছনে ছিল, ৪ জনের মধ্যে কে প্রত্যক্ষদর্শীদের চোখে ধুলো দিতে নিকাবটা পরেছিল। এটা যে পয়সা কামানোর উদ্দেশ্যে এবং সাইটের দর্শকসংখ্যা বাড়ানোর উদ্দেশ্য নিয়েই করা হয়েছিল সেটাও স্পষ্ট। যেহেতু এই ধরনের মিথ্যা ও গুজব ছড়ানো অকারণ বিভ্রান্তি ও অস্থিরতা সৃষ্টি করে, তাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়।"
আরও পড়ুন: না, মধ্যপ্রদেশে পঞ্চায়েত ভোটের ফলের পর 'পাকিস্তান জিন্দাবাদ' স্লোগান ওঠেনি