বুলডোজার (Bulldozer) দিয়ে একটি বহু দল বাড়ি ভাঙার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে উত্তরপ্রদেশের(Uttar Pradesh) বহরাইচে (Bahraich) হওয়া হিংসেতে উস্কানির দায়ে এক মুসলিম বিধায়কের বাড়ি ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
বুম দেখে ছবিটি ২০২৩ সালে হরিয়ানার নূহতে সাম্প্রদায়িক হিংসের পর হরিয়ানা সরকারের নির্দেশে এক মুসলিম ব্যক্তির বাড়ি ভাঙ্গার দৃশ্য। এছাড়াও উত্তরপ্রদেশে বিধানসভার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে জানা যায় মোহাম্মদ উসমান নামের কোনও বিধায়ক নেই।
১৩ অক্টোবর দূর্গাপূজা বিসর্জনের সময় উত্তরপ্রদেশের বহরাইচে মাইকে গান বাজানো নিয়ে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হয় যেখানে রাম গোপাল মিশ্রা নামে এক ২২ বছরের যুবক মারা যায় এছাড়াও আরও চারজন আহত হয়। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দোষীদের বিরুদ্ধে করা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান।
বুলডোজার দিয়ে একটি বহুতল বাড়ি ভাঙার ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে উত্তরপ্রদেশের বহরাইচ এর হিংসার সাথে যোগ করা হচ্ছে। ছবিটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হচ্ছে, “তেমন কিছুনা; উত্তর প্রদেশে বিসর্জনের সময় রাম গোপাল নামে এক ভাইকে হত্যার উস্কানির দায়ে MLA মোহাম্মদ উসমানের বিলাশবহুল ঘর ভাংগা হচ্ছে। উত্তর প্রদেশ জুড়ে দাংগাকারীদের ঘর-বাড়ি,ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ভাংগতে মুsলিম প্রধান মুজাফফরবাদে ব্যাপক বুলডোজার একশন শুরু হয়েছে! মহারাজ যোগী আদিত্যেনাথ বলেছে জ্যান্ত অথবা মৃত্য দাংগাকারী কাউকেই ছাড়া হবে না”।
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে। আর্কাইভটি দেখুন এখানে।
ফ্যাক্ট চেক
বুম ভাইরাল ছবিটি দিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে আল জাজিরার একটি ৭ আগস্ট ২০২৩ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাই। আল জাজিরার প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিটির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “হরিয়ানার নূহ জেলাতে একটি বুলডোজার এক মুসলিম ব্যক্তির সম্পত্তি ভেঙে দিচ্ছে [এমডি মহারবান/ আল জাজিরা]”
ইংরেজিতে মূল ক্যাপশন, "A bulldozer demolishes the property of a Muslim in Haryana's Nuh district [Md Meharban/Al Jazeera]"
আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালে হরিয়ানার নূহ জেলার সাম্প্রদায়িক হিংসের পর হরিয়ানা রাজ্য সরকারের নির্দেশে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রায় ৩০০ টি ঘর এবং দোকান বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। ৩১ জুলাই ২০২৩ হরিয়ানার নূহতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিলে চলাকালীন সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের শুরু হয়।
আমরা উত্তরপ্রদেশের বহরাইচে দুর্গাপুজো বিসর্জন ঘিরে হওয়া সংঘর্ষের ব্যাপারে সার্চ করলে হিন্দুস্তান টাইমসের একটি প্রতিবেদন থেকে আমরা জানতে পারি, সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের পর উত্তরপ্রদেশের পিডব্লিউডি অফিস থেকে ১৮ অক্টোবর বহরাইচের মহারাজগঞ্জ বাজারে মূল অভিযুক্তের বাড়িসহ আরও ২২ টি দোকান এবং বাড়িতে অবৈধ নির্মাণের দাবিতে নোটিশ জারি করে। নোটিশে ওই বাড়ি এবং দোকানগুলি তিন দিনের মধ্যে খালি করে দিতে বলা হয়।
১৯ অক্টোবর প্রকাশিত সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বহরাইচের সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে দাঙ্গাকারী সন্দেহে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এখনও পর্যন্ত ৮৭ জন কে গ্রেফতার করেছে। সেই ৮৭ জনের মধ্যে উভয় সম্প্রদায়ের লোক রয়েছে এবং ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রায় ১০০০ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে বলেও উক্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
তাছাড়া আমরা উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার মূল ওয়েবসাইটে গিয়ে মোহাম্মদ উসমানের নাম সার্চ করলে সমনামের কোন বিধায়ককে খুঁজে পাওয়া যায়নি।