Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
ফ্যাক্ট চেক

পাকিস্তানের গার্হস্থ্য হিংসার দৃশ্য মিথ্যে ধর্মীয় দাবিতে ভারতে ছড়াল

স্থানীয় পুলিশ পাকিস্তানের তথ্য-যাচাইকারীদের জানায় ঘটনাটি সাম্প্রদায়িক নয়, মহিলা ও তাঁর আক্রমণকারীরা হিন্দু ধর্মের।

By - Archis Chowdhury | 27 Dec 2021 4:13 PM IST

একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক মহিলাকে কয়েকজন লোক জোর করে গাড়িতে তুলছে। বিজেপি (BJP) নেতা মনজিন্দর সিংহ সিরসা ও অশ্বিনী উপাধ্যায় ভিডিওটি সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন ও কয়েকটি প্রথম সারির সংবাদ প্রকাশনা ওই ঘটনাটি সম্পর্কে খবর করে। দাবি করা হয় যে, এক পাকিস্তানি (Pakistani) কোর্টের সামনে থেকে এক হিন্দু মহিলাকে অপহরণ করা হয়।

বুম দেখে দাবিটি বিভ্রান্তিকর। ঘটনাটি পাকিস্তানে ঘটে ঠিকই, কিন্ত সেটি ছিল ওই মহিলা ও তাঁর স্বামীর পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্বের ফল। তাছাড়া পাকিস্তানের পুলিশ তথ্য-যাচাইকরীদের জানায় যে, ওই অপরাধে কোনও সাম্প্রদায়িক রঙ ছিল না। ওই মহিলা ও তাঁর আক্রান্তকারীরা উভয়েই হিন্দু।

ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা মনজিন্দর সিংহ সিরসা ভিডিওটি টুইটারে শেয়ার করেন। ক্যাপশনে উনি লেখেন, "হতবাক হয়ে গেছি। দেখুন কী ভাবে দিনের আলোয় পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের উমরকোট'র দায়রা আদালতের সামনে থেকে এক হিন্দু মহিলাকে অপহরণ করা হল। মহিলা সাহায্যের জন্য চিৎকার করছেন, কিন্তু ওরা পুলিশ বা কোনও পদক্ষেপের পরোয়া করে না। তারা মহিলার চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে তোলে।"

সিরসা এই ইঙ্গিত করছেন যে, হিন্দু বলেই মহিলাকে অপহরণ করা হয়। পাকিস্তানে হিন্দুরা হল সংখ্যালঘু। অশ্বিনী উপাধ্যায় নামের আরও এক বিজেপি নেতা ওই ভিডিওটি একই ধরনের দাবি সমেত শেয়ার করে মিথ্যেটিকে আরও জোরদার করেন।

টুইটটির আর্কাইভ দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

সিরসার টুইটটিকে ভিত্তি করে কয়েকটি মিডিয়া সংস্থা ওই ঘটনাটি সম্পর্কে রিপোর্ট প্রকাশ করে। সেগুলির মধ্যে রয়েছে টাইমস নাও, হিন্দুস্তান টাইমস, ওয়ান ইন্ডিয়া হিন্দি ও রিপাবলিক টিভি। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন হিন্দু মহিলাকে প্রকাশ্য দিবালোকে অপহরণ করা হয়। আর ওই ভাবে ঘটনাটিতে সাম্প্রদায়িকতার রঙ চড়ানো হয়। ভয়েস অফ পাকিস্তান মাইনরিটি নামের এক সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকেও একই মিথ্যে দাবি সমেত ভিডিওটি শেয়ার করা হয়।

টাইমস নাও'র প্রতিবেদনে, সঞ্চালক সংবাদদাতা প্রদীপ দত্তকে ঘটনাটি বর্ণনা করতে বলেন। তার উত্তরে উনি জানান যে, ভিডিওটিতে যে আক্রান্তকারীদের দেখা গেছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উনি আরও বলেন, ওই ঘটনা "সংখ্যালঘুদের অবস্থা" দেখিয়ে দেয়। তিনি বলতে চান যে, পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মের মানুষের ওপর নির্যাতনের একটি নিদর্শন ওই ভিডিও।

রিপাবলিক টিভি'র প্রতিবেদনে সঞ্চালক সরাসরি সিরসার সঙ্গে কথা বলেন। সিরসা দাবি করেন যে, অপহৃত মহিলার বয়স ১৯। উনি মেঘওয়ার সম্প্রদায়ের সদস্য। বলা হচ্ছে, তাঁকে অপহরণ করে ধর্ষণ করা হয় ও অপহরণকারীকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মিথ্যে দাবি মুঘল যুগে পোর্তুগিজরা গোয়া জয় করে

তথ্য যাচাই

ভিডিওটির ক্যাপশন, সিরসার বক্তব্য ও সংবাদ প্রতিবেদনগুলিকে সূত্র ধরে আমরা ওই ঘটনা সম্পর্কে পাকিস্তানে প্রকাশিত রিপোর্টের সন্ধান করি। তার জন্য, 'উমরকোট উম্যান ড্র্যাগ্ড' আউটসাইড কোর্ট' (উমরকোট মহিলাকে হিঁচড়ে টানা হয় কোর্টের বাইরে) – এই কি-ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করি আমরা।

তার ফলে, 'ডন' ও 'পাকিস্তান ডেইলি'তে প্রকাশিত খবর দেখতে পাই। সেগুলিতে উমরকোট কোর্টের বাইরে এক মহিলাকে টেনে নিয়ে যাওয়া ও হেনস্তা করার কথা বলা হয়।

পাকিস্তান ডেইলির খবরের শিরোনামে লেখা হয়, "আদালতে যাওয়ার জন্য বিবাহিত মহিলাকে অপদস্ত করা হয়"। তাতে একটি ছবি ছিল যেটি সিরসার শেয়ার করা ভিডিওর দৃশ্যের সঙ্গে মিলে যায়।

ওই লেখায় বলা হয়, মহিলার নাম তেজহান ভীল। তাঁর বয়স ৪০। তাঁর স্বামী হরচন্দ ভীল'র সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটির কারণে তিনি কোর্টে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেন। বলা হচ্ছে, কোর্ট থেকে বাড়ি ফেরার সময়, তাঁর স্বামী তাঁকে আক্রমণ করে বসেন। তাঁর স্বামীর সঙ্গে আরও সাতজন যোগ দেন। তাঁরা ওই মহিলাকে "চুলের মুঠি ধরে রাস্তায় টেনে নিয়ে গিয়ে হেনস্তা করেন"।

ডন'এ প্রকাশিত খবরে বলা হয়, মহিলা "চিৎকার চেঁচামিচি" করলে পুলিশ তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসে।

পাকিস্তানের 'সোচ ফ্যাক্ট চেক'র সঙ্গে যুক্ত তথ্য-যাচাইকারী হাসীম উজ জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করে বুম। উনি বুমকে জানান যে, ভিডিওটি দেখার পর উনি উমরকোট জেলার পুলিশ সুপার মুক্তিয়ার আহমেদ খাশখেলি'র সঙ্গে কথা বলেন। ওই পুলিশ আধিকারিক সিরসার তোলা সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ উড়িয়ে দেন। এবং ডন ও পাকিস্তান ডেইলিতে যে তথ্য দেওয়া হয়, সেগুলিকেই সমর্থন করেন।

"ঘটনাটা ছিল ওই মহিলা ও তাঁর স্বামীর মধ্যের ব্যাপার। মহিলা বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আবেদন করতে চেয়েছিলেন। ধর্মের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক ছিল না। ওই দম্পতি কোর্টে যান। পরে লোকটি মহিলাকে জোর করে নিয়ে যেতে চায়। তাঁরা দুজনেই হিন্দু। এটা ধর্মীয় ঘটনা নয়," খাশখেলি বলেন জামানকে।

পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য লাল মালহি'র করা একটি টুইটও আমাদের নজরে আসে। ডন, পাকিস্তান ডেইলি ও পুলিশের বয়ানকে সমর্থন করেন মালহি। উনি জানান যে, আক্রান্তকারীরা মুসলমান ছিলেন না। ওই ব্যক্তিরা ছিলেন মহিলার আত্মীয় ও ভীল সম্প্রদায়ের সদস্য। উনি আরও জানান যে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে ও গ্রেফতারও হয়েছে তারা। 

(অতিরিক্ত রিপোর্টিং সেখ বাদিরুদ্দিন) 

আরও পড়ুন: মন্দিরের পুরোহিতদের জন্য ১৫ হাজার টাকা অসম সরকারের এককালীন অনুদান

Tags:

Related Stories