প্রতিবাদী কুস্তিগির বিনেশ ফোগাট (Vinesh Phogat), সঙ্গীতা ফোগাট (Sangeeta Phogat) সহ অন্যরা পুলিশ ভ্যানের ভিতরে বসে হাসছেন, এ রকম একটি ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দাবি করা হচ্ছে মহিলা কুস্তিগিরদের প্রতিবাদ (wrestlers protest) এবং পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সাম্প্রতিক সংঘর্ষ আসলে ক্যামেরার ছবির জন্য।
বুম মূল ছবিটি পাওয়ার পর তার সঙ্গে ‘ফেস-অ্যাপ’ ব্যবহার করে হাসি জুড়ে দিয়ে দেখে, ভাইরাল হওয়া ছবিটি তার সঙ্গে হুবহু মিলে যাচ্ছে।
২৮ মে রবিবার ফোগাট সহ অন্য প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের সঙ্গে দিল্লি পুলিশের সংঘর্ষের পর পুলিশ তাঁদের আটক করে। কুস্তিগিররা উদ্বোধন হওয়া নতুন সংসদ ভবনের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় পুলিশ তাঁদের আটকে দিলে এই সংঘর্ষ বাধে। এই প্রেক্ষাপটেই ভাইরাল হওয়া ছবিটি শেয়ার হয়েছে।
পুলিশ ভ্যানের ভিতর ফোগাটদের হাসি মুখের ছবি টুইটারে শেয়ারকারীদের মধ্যে রয়েছেন অশোক পণ্ডিত। প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের সঙ্গে পুলিশের যে সংঘর্ষের ছবি কংগ্রেস নেতা রাজ বব্বর টুইট করেছেন, সেটি উদ্ধৃত করে অশোক পণ্ডিত ক্যাপশন দিয়েছেন, “সন্মানীয় রাজ জি, সড়কের উপর নাটক করার পর এটাই ওই কুস্তিগিরদের আসল চেহারা। দেশকে যারা ভাঙতে চায়, এটা তাদেরই একটা চক্রান্ত। এতে জাতির অহঙ্কার ধুলোয় মিশছে।”
টুইটটির আর্কাইভ করা আছে এখানে।
টুইটার এবং ফেসবুক যাঁরা ব্যবহার করেন, তাঁদের অনেকেই এর পর এই ভুয়ো পোস্টটি শেয়ার করতে শুরু করেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখতে ক্লিক করুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
তথ্য যাচাই
অশোক পণ্ডিতের টুইটে যাঁরা সাড়া দিয়েছেন, বুম তাঁদের অনেকেরই পোস্ট দেখেছে (যেগুলি পরে ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে)। তাঁদের অনেকেই বলেছেন, ছবিতে হাসি-মুখগুলো সম্পাদনা করে জোড়া হয়েছে। কেউ কেউ অন্য ধরণের একটি ছবি পোস্ট করেছেন যেটি অবিকল ভাইরাল হওয়া ছবিটির মতোই, শুধু আটক কুস্তিগিরদের মুখে হাসির লেশমাত্র নেই।
ওঁদের সহযোগী প্রতিবাদী কুস্তিগির বজরং পুনিয়া ফেসবুকে ওই দুটি ছবিই পোস্ট করেছেন। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, কুস্তিগিরদের হাসি-মুখের ছবিটি ভুয়ো এবং যারা এটি শেয়ার করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
আমরা বজরং পুনিয়ার পোস্ট করা ছবিটি গ্রহণ করি, যাতে আটক কুস্তিগিররা কেউই হাসছেন না। তার পর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-ভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাপ মারফত কুস্তিগিরদের মুখে হাসি জুড়ে দেওয়ার চেষ্টা করি।
‘ফেস অ্যাপ’ নামে একটি অ্যাপ রয়েছে, যেটির সাহায্যে কুস্তিগিরদের মুখগুলি সম্পাদনা করলে ভাইরাল হওয়া ছবির সঙ্গে হুবহু একই রকম ছবি পাওয়া যাচ্ছে। নীচের স্ক্রিন রেকর্ডিং ভিডিওটি নজর করলে বোঝা যাবে, কী প্রক্রিয়ায় মুখের ছবিতে হাসি জুড়ে দেওয়া যায়।
নীচের ছবি দুটিকে পাশাপাশি কিংবা উপর-নীচে রেখে তুলনা করলেই স্পষ্ট হবে কী ভাবে ‘ফেস-অ্যাপ’ সহযোগে সম্পাদনা করা ছবি ভাইরাল হওয়া ছবির সঙ্গে এক রকম হয়ে গেল।
বুম ফোগাট, তাঁর সহযোগীদের এবং পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগও করেছে। তাঁদের প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেলে এই প্রতিবেদনটি সংস্করণ করা হবে।