সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Elections) ভুয়ো ভোট দিতে তৈরি হচ্ছে নকল আঙুল! আর সেই আঙুলে কালি লাগিয়ে বোকা বনে যেতে পারেন ভোটগ্রহণ কর্মীরা - এমনই দাবি করে পুরনো এক ভুয়ো খবর আবারও ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে।
ভাইরাল ওই গ্রাফিকে কিছু কৃত্তিম আঙুলের ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, "ভোটে কারচুপির জন্য নকল আঙ্গুল - জাল ভোট দেওয়ার জন্য নকল আঙ্গুল তৈরি হচ্ছে। আঙ্গুল তো নয় আঙ্গুলের খোলস। আঙ্গুল পরে নিলে বুঝাই যাবে না সেটি আসল না নকল। ভোটগ্রহণ কর্মীরা ওই আঙ্গুলে কালি মাখিয়ে বোকা বনে যেতে পারেন। দেশের কি হাল দেখুন"।
বুম যাচাই করে দেখে কৃত্তিম আঙুলের এই ছবির সাথে ভোটে কারচুপি করার দাবির কোনও সম্পর্ক নেই। নকল ওই আঙুলগুলি আসলে জাপানের সংগঠিত অপরাধ সিন্ডিকেটের সদস্য তথা ইয়াকুজাদের অতীতের অপরাধ জীবন গোপন রাখতে তৈরি করা হয়েছিল।
এক ফেসবুক ব্যবহারকারী গ্রাফিকটি পোস্ট করে লেখেন, "ভোটে কারচুপির জন্য নকল আঙ্গুল"।
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে ও তার আর্কাইভ দেখতে এখানে।
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে ও তার আর্কাইভ দেখতে এখানে।
তথ্য যাচাই
২০১৯ সালেও ভুয়ো এই দাবি ভাইরাল হলে বুম সেসময় তার তথ্য যাচাই করে। আমরা সেসময় রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখতে পাই ২০১৭ সালে এমনই কিছু ছবি ভারতের প্রাক্তন ইলেকশন কমিশনার এসওয়াই কুরেসির হ্যান্ডেল থেকে পোস্ট করা হয়েছিল।
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে ও তার আর্কাইভ দেখতে এখানে।
কুরেসির হ্যান্ডেল থেকে করা সেই পোষ্টের প্রত্যুত্তরে বহু ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সেসময় akikofujita.com নামে এক ওয়েবসাইটের স্ক্রিনশট দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়। ওই প্রতিবেদনের শিরোনাম হিসাবে ইংরেজিতে লেখার বাংলা অনুবাদ, “এই কৃত্রিম আঙুলগুলি ইয়াকুজা সদস্যদের সংস্কারে সাহায্য করবে।
প্রতিবেদনটির আর্কাইভ দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
আমরা একই ধরনের এবিসি নিউজের প্রতিবেদনও খুঁজে পাই যেখানে কৃত্তিম আঙুলগুলি জাপানের ভয়ঙ্কর ইয়াকুজা গ্যাংস্টারদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল বলে রিপোর্ট করা হয়।
ইয়াকুজা আদতে কারা?
জাপানের সংগঠিত অপরাধ সিন্ডিকেটের সদস্য হল ইয়াকুজা। রিপোর্ট বলছে, খুব কঠোর আচরণবিধি মেনে চলার পাশাপাশি অপ্রচলিত আচার অনুসরণ করে ইয়াকুজারা। এরই মধ্যে একটি হল ইউবিতসুমে (Yubitsume) যার সাথে সরাসরি যোগ রয়েছে ভাইরাল পোস্টে থাকা দৃশ্যের।
আঙুলের ছোট অংশ কেটে ক্ষমা চাওয়ার রীতিকে বলা হয় ইউবিতসুমে।
আকিকো ফুজিতা তার রিপোর্টে ওই কৃত্রিম অঙ্গ প্রস্তুতকারক শিন্তারো হায়াসি সম্পর্কে লেখেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, হায়াসি ইয়াকুজার সদস্যদের জন্য কৃত্রিম আঙুল তৈরি করেন। এর কারণ হিসেবে ইয়াকুজার সেই সদস্যদের আবার সমাজের অংশ হতে চাওয়ার কথা বলা হয়। ওই কাটা আঙুল দেখে তাদের সহজেই চেনা যায় আগে তারা ইয়াকুজার সদস্য ছিলেন। অতীতে মাফিয়া তথা অপরাধ জীবনের সাথে তাদের যোগাযোগের বিষয়টি গোপন রাখতে সাহায্য করে সিলিকনের তৈরি ওই আঙুলই।