বড়ঞার তৃণমূল (TMC) বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহার (Jiban Krishna Saha) বাড়িতে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)-এর (CBI) আধিকারিকরা তদন্ত করার সময় পাঁচিলে (boundary wall) ওঠার ছবি বিভ্রান্তিকর দাবিতে সোশাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে।
বুম যাচাই করে দেখে ভাইরাল ছবিতে পাঁচিলে ওঠা ব্যক্তি আসলে সিবিআই আধিকারিক, তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহা নন।
প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগের তদন্তে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহার মুর্শিদাবাদের আন্দির বাড়িতে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) আধিকারিকরা তদন্ত করতে গেলে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। সিবিআই জানায়, শুক্রবার ১৪ এপ্রিল ২০২৩, বাড়ি লাগোয়া পুকুরে বাজেয়াপ্ত করা নিজের দু’টি ফোন পাঁচিল টপকে ছুড়ে ফেলে দেন জীবন। পরের দিন সিবিআই আধিকারিকরা পুকুরের সেচ দিয়ে সেই ফোন উদ্ধার করে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়। বর্তমানে সিবিআই হেফাজতে রয়েছে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহা। ছবিটি সোশাল মিডিয়ায় এই প্রেক্ষিতে ছড়ানো হচ্ছে।
সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবিটতে দেখা যায় এক ব্যক্তি পাঁচিলে উঠছেন।
ছবিটি ফেসবুকে পোস্টে করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, “#SSC_Scam... CBI থেকে বাঁচতে পাঁচিল টপকে পালানোর চেষ্টায় তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা...।”
ফেসবুক পোস্টটি দেখুন এখানে।
ছবিটি ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে। আরেকজন ফেসবুক ব্যবহারকারী ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশন লিখেছেন, “সিবিআই থেকে বাঁচতে পাঁচিল টপকে পালাতে গিয়ে ধরা পড়লো তৃণমূলের বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা..”
ফেসবুক পোস্টটি দেখুন এখানে।
১৬ এপ্রিল ইকলকাতা২৪ তাদের প্রতিবেদনে একই ছবি ব্যবহার করে শিরোনাম লেখে, "দলীয় বিধায়কের পাঁচিল টপকানোর দৃশ্যে বড়ঞাতেও ‘সাগরদিঘি এফেক্ট’ দেখছে তৃণমূল"। কভার ছবিতে ব্যবহার করে ভাইরাল ছবিটি। প্রতিবেদনটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটিকে গুগলে রিভার্স সার্চ করে ১৫ এপ্রিল ২০২৩ আনন্দবাজার অনলাইনে প্রকশিত প্রতিবেদনে দেখতে পায়। প্রতিবেদনটির শিরোনাম, “Jiban Krishna Saha পুকুরে ঢিল ছুড়ে জীবনের মোবাইল খুঁজছে সিবিআই! শুক্রবার জলে ফেলে দেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক”
প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিটিতে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, “কত দূর যেতে পারে তৃণমূল বিধায়কের ছোড়া মোবাইল? ঢিল ছুড়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। —নিজস্ব চিত্র।”
১৪ এপ্রিল এবিপি আনন্দে প্রকাশিত বুলেটিনে একই পাঁচিল দেখা যায়। ২ মিনিট ১৩ সেকেন্ড সময়ের পাঁচিলে ওঠা একই পোশাকের ওই ব্যক্তিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
বেল্ট ও পোশাকের ধরণ দেখে সহজে চিহ্নিত করা যায় ভিডিওতে। নিচে ভাইরাল ছবি ও ভিডিওর তুলনা দেওয়া হল।
একই ছবি প্রকাশিত হয়েছে নিউজ১৮ বাংলার প্রতিবেদনে। প্রকাশিত কোনও মূলধারার গণমাধ্যমের রিপোর্টে ছবির ব্যক্তিকে তৃণমূল বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহা বলে চিহ্নিত করা হয়নি। ছবিটি সিবিআই-এর তদন্তকারী দলের জনৈক আধিকারিকের।