হিন্দি কাগজ দৈনিক পূর্বোদয়-এ প্রকাশিত এক তথ্য-যাচাইয়ের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কাট-ছাঁট করা স্ক্রিনশট হোয়াটসঅ্যাপে শেয়ার করা হচ্ছে। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯-এর পর ২০০০ টাকার নোট বাতিল হয়ে যাবে, এমনই এক গুজবে ইন্ধন যোগাতে তা করা হচ্ছে।
ওই সম্পাদনা-করা স্ক্রিনশটে আরও একটি মিথ্যে দাবি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে যে, ১ জানুয়ারি ২০২০ থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) নতুন ১০০০ টাকার নোট চালু করতে চলেছে।
হিন্দিতে লেখা ক্লিপে বলা হয়েছে: "রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ২০০০ টাকার নোট তুলে নিচ্ছে। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯-এর পর ২০০০ টাকার নোট আর ব্যাঙ্কে বদলে নেওয়া যাবে না। তাই আপনার কাছে ২০০০ টাকার যত নোট আছে, তা বদলে নেওয়া উচিৎ। ২০০০ টাকার নোট বদল করার সীমা হল ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত। তাই কাজটা শুরু করে দিন। খবরে আরও বলা হয়েছে যে, ১ জানুয়ারি ২০২০ থেকে আরবিআই নতুন ১,০০০ টাকার নোট বাজারে আনবে।"
গুয়াহাটি আর জোড়হাটে প্রচারিত হিন্দি দৈনিকটির এই ক্লিপে গুজবের অংশটাই দেখা যাচ্ছে। খবরের অংশ এটি নয়।
ছবিটি টুইটারে ভাইরাল হয়েছে। সেটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য একজন পাঠক সেটিকে বুমের হেল্পলাইনে পাঠান।
@boomlive_in can you please check validity of this#2000notes#RBI pic.twitter.com/n8lq6DEOB6
— Reza (@rezah___) December 6, 2019
বাংলা ক্যাপশন সহ ফেসবুকেও ভাইরাল হয়েছে ২০০০ টাকা বাতিল হয়ে যাওয়ার গুজব। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম আগেও একই ধরনের বার্তা খন্ডন করেছিল। তাতেও দাবি করা হয়েছিল যে, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ থেকে ২০০০ টাকার নোট বাতিল করে দেওয়া হবে। সেটি হোয়াটসঅ্যাপের একটি মেসেজ থেকে ভাইরাল হয়েছিল। সেটির সঙ্গে ছিল 'নিউজ ট্র্যাক' ওয়েবসাইটের একটি প্রতিবেদন।
RBI's big decision, now 2000 rupee notes will not come out of ATMhttps://t.co/MunprPWYLd
— SonaliRanade (@sonaliranade) December 7, 2019
১ ডিসেম্বর ২০১৯-এ প্রকাশিত দৈনিক পূর্বোদয়ের সম্পূর্ণ লেখাটি বুম খুঁজে পায়। সেটি একটি তথ্য-যাচাই, যাতে ভাইরাল দাবিটি বিশ্লেষণ করা হয়েছিল। স্ক্রিনশটটি হল তারই একটা অংশ। পুরো লেখাটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
দাবিটি বিশ্লেষণ করে লেখাটিতে বলা হয়: "সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় একটি খবর ভাইরাল হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে যে, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯-এর পর ২০০০ টাকার নোট আর বদল করা যাবে না। কিন্তু দৈনিক পূর্বোদয়ের অনুসন্ধানে জানা গেছে যে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া সে রকম কোনও নির্দেশ জারি করেনি..."
ওই প্রতিবেদনে নিউজ ট্র্যাকের রিপোর্টেরও উল্লেখ আছে। নিউজ ট্র্যাকের ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, "রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) অনুমতি পাওয়ার পর, এসবিআই এটিএম থেকে নোটের তোড়া তুলে নিচ্ছে।" সেই সময় বুম এসবিআই এবং আরবিআই-এর মুখপাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু তাদের দিক থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।
তাছাড়া আরবিআই-এর ওয়েবসাইট বা অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলেও এই ধরনের কোনও বিজ্ঞপ্তি নেই।
নোট বাতিলের সময়, ৫০০ আর ১,০০০ টাকার নোট বাতিল করে দেওয়া হয়। সেই পদক্ষেপ এতই আকস্মিক ছিল যে, এখনও সোশাল মিডিয়ায় টাকার নোট আর ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা সম্পর্কে ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে, এবং তা বিশ্বাসও করছে লোকে।