প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চটি পরে একটি পারিজাত বা রাতে ফোটা জুঁই ফুলের চারা রোপণ করছেন, এ রকম দুটি ছবি সাজিয়ে ফেসবুক পোস্টে দাবি করা হয়েছে যে, অযোধ্যায় রাম-মন্দিরের ভূমি-পূজানুষ্ঠানের সময় জুতো পরে থেকে তিনি ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছেন।
বুম দেখেছে, ওই ছবিদুটি, যাতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবতও উপস্থিত, সেগুলি ভূমি-পূজা অনুষ্ঠানের আগেই তোলা হয়।
গত ৫ অগস্ট (২০২০) অযোধ্যায় এক বহু-বিজ্ঞাপিত অনুষ্ঠানে প্রস্তাবিত রাম-মন্দিরের শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিগত কয়েক দশক ধরে এই স্থানটি নিয়ে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে বিরোধ চলেছে, যার নিষ্পত্তি করে ২০১৯ সালের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট সেখানে মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করার সবুজ সংকেত দেয়।
ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে, নির্মেয় মন্দিরের স্থানে প্রধানমন্ত্রী একটি পারিজাত গাছের চারায় জলসিঞ্চন করছেন। প্রধানমন্ত্রীর জুতো জোড়ার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ছবিতে ওই অংশটি লাল ও নীল কালির বৃত্ত দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে।
পোস্টে হিন্দিতে লেখা একটি ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী ভূমি-পূজার অনুষ্ঠানে জুতো পরে যোগ দিয়ে হিন্দুর ধর্মবিশ্বাসে আঘাত করেছেন।
তথ্য যাচাই
বুম দেখলো, দাবিটি ভুয়ো, কেননা ভূমি-পূজা অনুষ্ঠানের অনেক আগেই এই ছবিগুলি তোলা হয়।
আমরা খোঁজখবর চালিয়ে
এনডিটিভির একটি প্রতিবেদন পাই, যাতে স্পষ্ট লেখা রয়েছে: "মন্দিরের শিলান্যাসের আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী নির্মেয় মন্দির চত্বরে একটি পারিজাত পুষ্পের চারাগাছ রোপণ করেন"
তা ছাড়া, আমরা নির্মেয় মন্দির চত্বরে ঢোকা থেকে অস্থায়ী মন্দিরের সামনে তাঁর ষষ্টাঙ্গ প্রণাম (যার ছবি নীচে দেখা যাচ্ছে) থেকে শুরু করে শিলান্যাস পর্ব পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর গতিবিধি অনুসরণ করে দেখেছি, তিনি আগাগোড়াই জুতো না পরেই ছিলেন।
অনুষ্ঠানটির যে সরাসরি সম্প্রচার হয়, তা থেকে একের পর এক স্ক্রিনশট সংগ্রহ করে বুম দেখেছে, প্রধানমন্ত্রী আগাগোড়াই সেখানে মোজা পরেই ছিলেন, ভাইরাল পোস্টে দাবি করা চটি বা জুতো পরে নয়।
শিলান্যাস অনুষ্ঠানের জীবন্ত সম্প্রচার দেখতে নীচের ভিডিওটি দেখুন।