সম্প্রতি পর পর যে তিনটি কৃষি বিল পাশ হয়েছে তার বিরুদ্ধে চলা প্রতিবাদের ছবি বলে প্রায় সাত বছরের পুরানো একটি ছবি শেয়ার করা হয়েছে। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, এক জন পুলিশকর্মী তাঁর দিকে ইট তাক করে দাঁড়িয়ে থাকা এক বৃদ্ধের দিকে বন্দুক তুলেছেন।
২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাজ্যসভায় পর পর তিনটি কৃষি উন্নয়ন বিল ধ্বনিভোটে পাস হয়েছে। এই বিলের বিরুদ্ধে পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় বহু কৃষক, বিভিন্ন কৃষক সংগঠন এবং সমাজসেবীরা ব্যপক প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন।
ভাইরাল হওয়া এই ছবিটি কংগ্রেসের বহু নেতা শেয়ার করেছেন, এবং বিভিন্ন টুইটার হ্যান্ডেল থেকেও শেয়ার করা হয়েছে। সঙ্গে ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে, "নিজেদের অধিকারের জন্য যে মোদীজির বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে, তার উপরই তোমরা লাঠি চার্জ করেছ #কৃষকবিরোধীনরেন্দ্রমোদী।
(হিন্দিতে লেখা ক্যাপশন- मत मारो गोलियो से मुझे मैं पहले से एक दुखी इंसान हूँ..! मेरी मौत कि वजह यही हैं कि मैं पेशे से एक किसान हूँ..! #KisanVirodhiNarendraModi)
কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ন্যাশনাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়ার (এনএসইউআই)সর্বভারতীয় সম্পাদক সতবীর চৌধুরী ভাইরাল হওয়া ছবিটি শেয়ার করেছেন। ছবির সঙ্গে তিনি ,যে ক্যাপশন দিয়েছেন তার অনুবাদ: "আমাকে গুলি করে মেরো না আমি এক জন দুঃখী মানুষ! আমার মৃত্যুর একমাত্র কারণ আমি এক জন কৃষক।"
(হিন্দিতে লেখা ক্যাপশন- मत मारो गोलियो से मुझे मैं पहले से एक दुखी इंसान हूँ..! मेरी मौत कि वजह यही हैं कि मैं पेशे से एक किसान हूँ..! #KisanVirodhiNarendraModi)
তথ্য যাচাই
বুম জেনেছে যে ভাইরাল হওয়া ছবিটি ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উত্তরপ্রদেশের মেরঠে তোলা হয়েছিল। আমরা গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখতে পাই ২০১৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর একটি সংবাদ প্রতিবেদনে এই ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছিল এবং তাতে বলা হয়েছিল যে ছবিটি উত্তরপ্রদেশের মেরঠের খেরা গ্রামে তোলা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন থেকে জানা যায় ২০১৩ সালে মুজফফরনগর দাঙ্গার পর প্রশাসন মহাপঞ্চায়েত বসানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তার পর, যেখানে মহাপঞ্চায়েত বসত, সেখানে গ্রামবাসীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে।
ওই প্রতিবেদনে ভাইরাল হওয়া ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছিল এবং পিটিআই সংবাদ সংস্থার কাছে ছবিটির জন্য ঋণ স্বীকার করা হয়েছিল। ছবিটির সঙ্গে ক্যাপশন দেওয়া হয়েছিল, "রবিবার খেরায় সংঘর্ষ চলার সময় নিরাপত্তাকর্মীর নিশানায় এক গ্রামবাসী।"
ওই প্রতিবেদনে বলা হয় ২০১৩ সালে মুজফফরনগর দাঙ্গায় জড়িত থাকার জন্য ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিধায়ক সঙ্গীত সিং সোমকে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে মেরঠের সারঘানার খেরা গ্রামে মহাপঞ্চায়েতে গ্রামবাসীরা জড়ো হয়।
এর আগে ২০১৭ সালে রাজস্থানে চলা একটি প্রতিবাদের ছবি হরিয়ানায় কৃষকদের সাম্প্রতিক প্রতিবাদের ছবি বলে মিথ্যে দাবি করে শেয়ার করা হয় এবং বুম সেই ছবিটির সত্যতা যাচাই করে সেটিকে মিথ্যে প্রমাণ করে।