রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বিরোধী পোস্টার হাতে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর তিন পুরনো ছবি জেএনইউ-এর সাম্প্রতিক প্রতিবাদের ছবি বলে শেয়ার করা হল।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে এক ছাত্রী হাতে প্ল্যাকার্ড ধরে আছেন তাতে লেখা আছে, "আরএসএস মুর্দাবাদ"।
বুম ওই ছাত্রীকে শতরূপা চক্রবর্তী বলে চিনতে পারে। তিনি জেএনইউ-এর ছাত্রী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক। তিনি নিশ্চিত করে জানান যে ছবিটি ২০১৬ সালের ৩০ জানুয়ারির।
ছবিটি হিন্দি এবং ইংরেজিতে লেখা ক্যাপশনের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে। ক্যাপশনে প্রশ্ন করা হয়েছে যে জেএনইউ-এর ছাত্ররা আরএসএস-এর বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন কেন?
What is the relation between fee hike and RSS?
— India With RSS (@IndiaWithRSS) November 21, 2019
What is relation of "Red Fort" with fee hike?
Why the statue of Vivekananda was disgraced?
Actually it has nothing to do with fee hike. It was a politically motivated campaign against a particular ideology. #LeftKillingJNU pic.twitter.com/q0nrUGCCEB
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হস্টেলের খরচ বৃদ্ধির প্রতিবাদে জেএনইউ-এর ছাত্রদের ব্যাপক প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে। যদিও সরকার এই বর্ধিত খরচ আংশিক ভাবে কমাতে সম্মত হয়েছে, কিন্তু ছাত্ররা সম্পূর্ণ বৃদ্ধি নাকচ করার দাবি করছেন।
তথ্য যাচাই
ফেসবুকে নির্দিষ্ট কিওয়ার্ড সার্চ করে বুম দেখেছে যে এই ছবিটি ২০১৬ সালের এবং ছবির প্ল্যাকার্ড হাতে ছাত্রী জেএনইউএসইউ-এর প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক শতরূপা চক্রবর্তী।
স্টুডেন্টস ফেডেরেশন অফ ইন্ডিয়ার (এসএফআই) জেএনইউ ইউনিট ফেসবুকে তাদের অফিসিয়াল পেজে ওই একই প্ল্যাকার্ড হাতে অন্য এক ছাত্রের ছবি আপলোড করেছিল।
আরও সার্চ করে আমরা ওই একই অ্যালবামের একটি ছবি দেখতে পাই। এই ছবিটিতে এক জন লাল কুর্তা পরা মহিলাকে আরএসএস-বিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়। সেই মহিলাকে শতরূপা চক্রবর্তী বলে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাকে ছবিটি ট্যাগ করা হয়েছে।
আমরা এসএফআই জেএনইউ ইউনিট-এর আপলোড করা ছবিতে শতরূপা চক্রবর্তীর পরা লাল কুর্তা এবং ভাইরাল হওয়া ছবিতে পরা কুর্তা মিলিয়ে দেখতে পাই যে দুটোই একই কুর্তা।
বুমের সঙ্গে কথা বলার সময় শতরূপা নিশ্চিত করেন যে ওই ছবির মহিলা তিনি নিজে। তিনি বলেন যে এই ছবিটি ২০১৬ সালের ৩০ জানুয়ারির 'মার্চ টু আরএসএস অফিস' র্যালির ছবি। দলিত ছাত্র রোহিত ভেমুলার মৃত্যুর প্রতিবাদে এই র্যালি করা হয়।
তিনি বলেন, "অম্বেদকর ভবন থেকে আরএসএস অফিস পর্যন্ত এই র্যালি করা হয়। এবং ছবিটি সম্ভবত আরএসএস অফিসের বাইরে তোলা হয়।" শতরূপা চক্রবর্তী আরও জানান যে যে দিন দিল্লি পুলিশ প্রতিবাদীদের উপর লাঠিচার্জ করে ছবিটি সে দিনের। মিডিয়ার প্রতিনিধিরা এই ঘটনার ভিডিও তোলেন এবং তা ভাইরালও হয়।
শতরূপা চক্রবর্তী বলেন, "তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্দ্রী বঙ্গারু দত্তাত্রেয়, বিজেপির এক বিধান পরিষদ সদস্য এবং এবিভিপি-র দুষ্টচক্রের চেষ্টায় রোহিত ভেমুলা ও তার বন্ধুদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া আরম্ভ হয়। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই গোটা দেশের ছাত্রসমাজ প্রতিবাদে নামে এবং বিভিন্ন সরকারি সদর দফতর এবং আরএসএস দফতরের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। ভেমুলার মৃত্যুর জন্য যে তাঁরাই দায়ী, এই কথাটি স্পষ্ট ভাবে বলার জন্য এবং দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতেই এই বিক্ষোভ হয়।"