কোভিড-৯ পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে দুর্গা পুজো কেমন হবে এবিষয়ে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভুয়ো দাবি খণ্ডন করল রাজ্য পুলিশ। ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হওয়া মেসেজে ভুয়ো দাবি করা হয় সংশ্লিষ্ট নিয়মগুলি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সিদ্ধান্ত।
বার্তাটির প্রথম বাক্যে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গ সরকার নাকি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পঞ্চমী থেকে একাদশী পর্যন্ত সবকটি দিন বিকেল পাঁচটার পর থেকে সারা রাতে জারি করা কার্ফু বহাল থাকবে ভোর চারটে পর্যন্ত।'' "#দুর্গাপূজার_নিয়মাবলী" এই হ্যাশট্যাগে শেয়ার করা হচ্ছে ওই ভুয়ো বার্তা।
৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ মঙ্গলবার টুইট করে রাজ্য পুলিশ ওই ভাইরাল হওয়া বার্তাটিকে ভুয়ো বলে জানায়। টুইট করে লেখা হয়, ''দুর্গা পুজো নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে একটি গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এরকম কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। দয়া করে এটি ফরোয়ার্ড করবেননা। এটি ভুয়ো। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
(ইংরেজিতে মূল টুইট: A rumour regarding Durga Puja is being spread through WhatsApp. No such decision has been taken. Please do not forward this message. It's fake. Action is being taken)
A rumour regarding Durga Puja is being spread through WhatsApp. No such decision has been taken. Please do not forward this message. It's fake. Action is being taken#FakeNewsAlert pic.twitter.com/txQB4fghJi
— West Bengal Police (@WBPolice) September 8, 2020
সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই বার্তায় আরও বলা হয়, কার্ফু জারির পাশাপাশি, ''মণ্ডপে একসাথে ৫ জনের বেশি প্রবেশ নিষিদ্ধ....অষ্টমীতে অঞ্জলিতে ফুল দেয়া নিষিদ্ধ এবং কাটা ফল ব্যবহার করা যাবে না..''
পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন। এরকম দুটি পোস্ট আর্কাইভ করা আছে এখানে ও এখানে।
বুম ফেসবুকে ক্যাপশন সার্চ করে দেখে অনেক নেটাগরিক হোয়াটসঅ্যাপ বার্তাটি ফেসবুকেও শেয়ার করছেন। এরকম দুটি ফেসবুক পোস্ট আর্কাইভ করা আছে এখানে ও এখানে।
কি বলছে পুজো কমিটি
কলকাতা ও শহরতলির পুজো পরিচালনার জন্য বেশ কয়েক বছর আগে গঠন করা হয়েছে ফোরাম ফর দুর্গোৎসব সংগঠন। ৬ সেপ্টেম্বর একটি বৈঠক হয়েছে সংগঠনের তরফে। পরবর্তী বৈঠকের দিনক্ষণ এখনও ঠিক করা হয়নি সংগঠনের তরফে।
বুম গল্ফগ্রীন শারোদোৎসব কমিটির সভাপতি তপন দাশগুপ্তের সঙ্গে যোগোযোগ করলে তিনি জানান ১০ তারিখ খুঁটি পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। ''ছোট মাপের প্রতিমা অর্ডার দেওয়া হয়েছে। চাইলে খোলামেলা ভাবে পুজো করা হবে। তবে ফোরামের সঙ্গে সরকার ও প্রশাসনের সিদ্ধান্তের উপরই নির্ভর করছে সবকিছু।''
সরকারি সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জিঞ্জাসা করা হলে তপন দাশগুপ্তে বুমকে বলেন, ''এরকম কোনও সিদ্ধান্তের কথা ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের মিটিং বলা হয়নি। এখনও স্থানীয়ভাবে প্রশাসনের তরফে আমাদের কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়নি। দক্ষিণ কলকাতায় এই এলাকায় প্রায় ৩৩ টি পুজো হয়। আমরা সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।''
বুমের তরফে সেলিমপুর পল্লী দুর্গা পুজোর সঙ্গে যুক্ত সুমন দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত পুজো পরিচালনা করার জন্য কোনও কমিটি গঠন করা হয়নি। কিভাবে পুজো করা হবে তার রূপরেখার সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে।
কলকাতার আরেক পুজো যোধপুর পার্ক শারোদৎসব এবার ভার্চুয়ালি দর্শকদের কাছে পৌছানোর কথা ভাবছে। পুজো কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুমন্ত রায় বলেন,''আইনি জটিলতার কারণে আমরা কোনও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয়। সোশাল মিডিয়ায় কয়েকদিন ধরেই ঘুরছে ওই ভুয়ো নির্দেশ।"
''নানা বিষয়ে মিটিং হচ্ছে রোজই। ভাবনা চিন্তার পরিবর্তন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অ্যাপ ও ফেসবুকের মাধ্যমে সোশাল মিডিয়ার পুজো দেখানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আমরাও সরকারের নির্দেশের অপেক্ষায় আছি।'' বলেন সুমন্ত রায়।
বুমের তরফে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের কাছে জানতে চাওয়া হয় সরকারের তরফে কবে সিদ্ধান্তের জন্য বসা হবে। ফোনে না পাওয়ার পর ইন্দ্রনীল সেনকে হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমেলে বার্তা পাঠানো হয়েছে। তাঁর মন্তব্য পাওয়া গেলে প্রতিবেদনটি সংস্করণ করা হবে।
আরও পড়ুন: তুলে নেওয়া, নিষেধ, স্ব-নিয়ন্ত্রণ: ভারতে অনলাইন কন্টেন্টের প্রতিকূলতা