একটি স্ক্রিনশটে দাবি করা হয়েছে যে, গত মাসে দিল্লির হাউজ কাজি এলাকায় একটি মন্দির ভাঙ্গচুর করার জন্য পুলিশ ছ’জন বজরঙ দলের সদস্যকে গ্রেফ্তার করেছে, এমনটাই দেখা যাচ্ছে ছবিটিতে।
গাড়ি রাখা নিয়ে দুই ব্যক্তির মধ্যে হাতাহাতি সংঘর্ষের আকার ধারণ করেছিল হাউজ কাজিতে। ব্যাপারটা এতদূর গড়ায় যে, ওই এলাকার একটি মন্দিরও ভাঙচুর করা হয়।
ওই ঘটনায় দিল্লি পুলিশ এখনও পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। কী ভাবে ভুয়ো খবর ওই সংঘর্ষে ইন্ধন জুগিয়েছিল, তা জানতে এখানে পড়ুন।
আরও পড়ুন: গাড়ি রাখা নিয়ে দিল্লীর হাউজ কাজির বিবাদে সাম্প্রদায়িক ঘৃতাহুতি দিল ভুয়ো খবর
পুলিশ সংবাদিক সম্মেলন করছে, সেরকম একটি ছবিও দেওয়া হয়েছে ওই বিভ্রান্তিকর মেসেজে।
স্ক্রিনশটটির সত্যতা জানতে, একজন পাঠক সেটিকে পাঠান বুমের হেল্পলাইনে (৭৭০০৯০৬১১১)।
ছবিটির সঙ্গে হিন্দিতে লেখা ক্যাপশনে দাবি করা হয়, মন্দির ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে মুসলমানরা জড়িত নয়। এবং এও বলা হয়, পুলিশ এই ব্যাপারে ছ’জন বজরঙদলের কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
(মূল হিন্দিতে ক্যাপশন: “दिल्ली मे मूर्तिया तोड़ने वाले मुस्लिम नही बजरंग दल के कार्यकर्ता थे, पुलिस द्वारा 6 कार्यकर्ताओं की चल रही है कुटाई”)
পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
বুম রিভার্স সার্চ করে খুঁজে পেয়েছে, ছবিটি ২০১৯ সালে জুন মাসে উত্তর প্রদেশের ঘটা একটি ঘটনার।
‘রাজস্থান পত্রিকায়’ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ছবিতে যে লোকগুলিকে দেখা যাচ্ছে, তারা বাড়িতে বাড়িতে আর যাত্রীবাহী ট্রেনে লুটপাট করত। উত্তর প্রদেশের চন্দৌলির বাসিন্দা তারা।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ছবিতে যে পুলিশ অফিসারকে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে, তিনি হলেন চন্দৌলির পুলিশ সুপার সন্তোষ কুমার।
বুম এও দেখে যে, চন্দৌলি পুলিশ ওই একই ছবি তাদের নিজস্ব টুইটার হ্যান্ডল থেকে ৩ জুন ২০১৯ তারিখে টুইট করে। তাতে ধৃত ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হয়।
ছবিতে যে অভিযুক্তদের দেখা যাচ্ছে, ওই রিপোর্টে তাদের রামনারায়ণ শেঠ, কিষাণ লাল ভার্মা ও জিতলাল জয়সওয়াল বলে সনাক্ত করা হয়। পাঁচ লক্ষ টাকার গয়না ও বেআইনি সামগ্রী সমেত ধরা হয় তাদের।
আমরা দিল্লি পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ সূত্র থেকে জানা যায় যে, পুরনো দিল্লির হাউজ কাজিতে মন্দির ভাঙচুরের ঘটনায় যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা কেউই বজরঙ দলের সদস্য নয়।
“যে অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হয়েছে, ওই ছবি তাদের নয়। হাউজ কাজির ঘটনায় যাদের ধরা হয়েছে, তাদের মধ্যে নাবালকও আছে। আমরা তাদের ছবি প্রকাশ করতে পারি না। তাছাড়া ছবিতে যাদের দেখা যাচ্ছে, তারা ওই জায়গার লোক নয়। আমরা ঘটনাটির তদন্ত করছি। কিন্তু সেটির সঙ্গে বজরঙদল বা ওই ধরনের কোনও সংগঠনের কোনও যোগাযোগ খুঁজে পাওয়া যায়নি,” বলেন দিল্লি পুলিশের সূত্রটি।